বাংলাদেশ
ঈদে বাংলাদেশে বিক্রি হয়নি ২৬ লাখ পশু
Published
3 months agoon
বাংলাদেশে ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে যেসব পশু লালন-পালন করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে প্রায় ২৬ লাখ অবিক্রীত রয়ে গেছে। গতবারের চেয়ে এবার পশু কোরবানির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাজারে সংকট তৈরি হয়নি।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। সরকার দাবি করছে, দেশের ভেতরের পশু উৎপাদন দিয়ে কোরবানির চাহিদা মিটে গেছে।
যদিও এই বক্তব্যের সাথে একমত নন মাংস ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, সীমান্ত পথে ভারত ও মিয়ানমার থেকে পশু দেশের ভেতরে আসার কারণে বাজারে সেটির ‘ইতিবাচক প্রভাব’ পড়েছে।
অন্যদিকে, ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, অধিদপ্তরের হিসাবের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের চিত্রের মিল রয়েছে।
ঈদের আগে প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান জানিয়েছিলেন, দেশে প্রায় এক কোটি ত্রিশ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। তিনি তখন ২৩ লাখ উদ্বৃত্ত অর্থাৎ, অবিক্রীত থাকার কথা বললেও ঈদের পর দেখা যাচ্ছে অবিক্রীত পশুর সংখ্যা আরো কয়েক লাখ বেশি। এই গবাদি পশুগুলো অবিক্রীত রয়ে গেল কেন? বিক্রি না হওয়ার তালিকায় কোন ধরনের গরুর সংখ্যা বেশি?
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “এ বছর সারাদেশে মোট এক কোটি চার লাখ আট হাজার ৯১৮টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। গত বছর সারাদেশে কোরবানিকৃত গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৪১ হাজার ৮১২ টি।” অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় এবার সাড়ে তিন লাখ বাড়তি কোরবানি হয়েছে।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।
মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্য উদ্ধৃত করে জানানো হয়, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ২৯ হাজার ১৮২ টি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫৭ হাজার ৫২০ টি কোরবানি হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ বিভাগের পরিচালক মো. শাহিনুর আলম বিবিসি বাংলাকে বলেন, সংগৃহীত তথ্যের বাইরেও কিছু কোরবানির পশু বিক্রি হয়ে থাকবে।
“অনেকে নিজেরা লালন পালন করেন, নিজেরা কোরবানি দিয়ে থাকেন। তারা এই পরিসংখ্যানে অন্তর্ভূক্ত নন,” বলেন তিনি।
সব মিলিয়ে, ঈদ-উল আজহাকে ঘিরে বাংলাদেশে প্রায় ‘এক লাখ কোটি টাকার অর্থনীতি’ দাঁড়িয়ে গেছে বলে দাবি মো. শাহিনুর আলমের। তবে কেউ কেউ মনে করেন বর্তমান মূদ্রাস্ফিতি ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রভাব রয়েছে পশু অবিক্রিত থাকার পেছনে। যদিও কোরবানির পরিমান বৃদ্ধির হিসাবে তা মনে হয় না।
হাট থেকে পশু ফিরেছে কম:
প্রতি বছর হাটের শেষে বিক্রি না হওয়া গরু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় ব্যাপারিদের। খামারিদের সংগঠন ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, গত দুইবার প্রচুর সংখ্য়ায় গরু ফেরত গেছে।
“একটি দুটি করে গরু ফিরিয়ে নেয়া ব্যয়বহুল। তাই এবার অনেক গৃহস্থ ঢাকায় গরু আনে নাই,” যোগ করেন তিনি। কারণ, “নির্ধারিত সময়ের পরও সেগুলো লালন-পালন করা ব্যয় সাপেক্ষ। তাতে লোকসানের শঙ্কা বাড়ে। কারণ একটা সময়ের পর গরু আর বাড়ে না।”