এমপি আনারকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন।
গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য দিয়েছে হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া আমানুল্লাহ ও দুই সহযোগী।
ডিএমপির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সাজিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় চলে আসে আক্তারুজ্জামান শাহীন। এমপি আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়টি দেশে আলোচিত হলে সে ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যায়। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যায় দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়।
রক্তের দাগ ও একাধিক পায়ের চিহ্ন দেখে কলকাতা পুলিশ ধারণা করছে, ওই ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনারকে হত্যা করা হয়। পরে লাগেজে করে মরদেহের টুকরো বের করে নেয় দুষ্কৃতিকারীরা। এ কাজ করতে সময় লাগে তিন দিন। তারা পরিকল্পিতভাবে প্রতিদিনই লাগেজ নিয়ে একজন করে বের হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমান, তার সহযোগী সাগর ও আরেক নারীকে আটক করা হয়েছে।
আমানের দেওয়া তথ্যের বরাতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, শাহীনের পরামর্শ প্রথমে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে আনারকে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর ফ্ল্যাটের কাছেই শপিং মল থেকে আনা হয় দুটো বড় ট্রলিব্যাগ ও পলিথিন। এমপি আনারের মরদেহের টুকরোগুলো পলিথিনে পেঁচিয়ে ট্রলিব্যাগে ভরা হয়। ঘটনার রাতে লাশের টুকরোসহ দুটি ট্রলিব্যাগ বাসাতেই রাখা হয়। এর মধ্যে তারা বাইরে থেকে ব্লিচিং পাউডার এনে ঘরের রক্তের দাগ পরিষ্কার করে।
আমান জানায়, তারা চারজন ছিলো। তার বান্ধবী সিলিস্তা রহমান, মোস্তাফিজ ও ফয়সল। মরদেহের টুকরোসহ আরেকটি ব্যাগ বাসাতেই ছিল। সেই ব্যাগ থেকে দুর্গন্ধও ছড়ানো শুরু করেছিল। সেই মরদেহের টুকরোসহ ব্যাগটি সহযোগীদের অন্য কোথাও ফেলে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে ১৫ মে নারী সহযোগী সিলিস্তা রহমানকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসে। ১৭ মে মোস্তাফিজ ও ১৮ মে ফয়সাল বাংলাদেশে ফেরত আসে।
জিজ্ঞাসাবাদে আমান জানিয়েছে, এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়।