Connect with us

বাংলাদেশ

রিমান্ডে নুরকে ইনজেকশন পুশ, দেওয়া হয় ইলেকট্রিক শক

Published

on

গতকাল আদালতে পুলিশের কাঁধে ভর করে নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরকে রিমান্ডে নিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী মারিয়া নুর।
আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মারিয়া নুর। স্বামীর রিমান্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে পুরো সংবাদ সম্মেলনেই কাঁদতে দেখা যায় তাকে।
মারিয়া নুর দাবি করেন, নুরকে রিমান্ডে নিয়ে ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে, সেটা স্লো পয়জনিং কি না, জানেন না। ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
দুই সন্তানকে পাশে রেখে নুরের স্ত্রী বলেন, ‘২১ জুলাই রাত ৮টার দিকে ওকে (নুর) কোর্টে ওঠানো হয়। ওর সাথে আমাদের ফ্যামেলির কারও দেখা করতে দেওয়া হয়নি। কী টর্চার করেছিল বা কী হয়েছেল, কিছুই তখন জানতে পারিনি। আইনজীবীদের মাধ্যমে জানতে পারি যে, ওকে যখন কোর্টে ওঠানো হয় ও নিজ মুখে মহামান্য আদালতকে নিখোঁজ অবস্থায় ওর ওপর শারীরিকভাবে টর্চার করা হয়েছিল, প্রত্যেকটা নির্যাতনের আঘাতের চিহ্ন নিজের টি-শার্ট খুলে জজ সাহেবকে দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তাকে আবার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ওকে ওই জায়গা থেকে আবার মিরান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিমান্ডে নিয়ে যাওয়ার পাঁচ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে গতকাল যখন কোর্টে ওঠানো হয়, সে এক বীভৎস চিত্র। ও তো কোনো চোর, ডাকাত, খুনি ও জঙ্গি নয়। ও তো একজন ডাকসুর সাবেক ভিপি। ছাত্রদের হয়ে কথা বলছে।’
কাঁদতে কাঁদতে মারিয়া নুর বলেন, ‘এতটুকু অধিকার তো আমাদের সংবিধান আমাদের দিয়েছে, ও হেঁটে কোর্টে উঠতে পারেনি। পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে তারপর ওকে কোর্টে উঠতে হয়েছিল। মহামান্য আদালতকে বারবার অনুরোধ করার পরে আমি একটু দেখা করার সুযোগ পাই। তখন ও বলে, রিমান্ডের এই পাঁচটা দিন ওর ওপরে যে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে—যেটা বলতে আমার… একটা মানুষের ওপরে এরকম… জানি না অন্য কোথাও হয় কি না..।’
নুরের স্ত্রী বলেন, ‘আগে শুনেছি, রিমান্ডে নেওয়া হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। বাট এতটা ভয়ংকরভাবে ওর ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। সন্তানদের সামনে… ওরা এখনো জানে না, আমি আজ যখন বের হই বাসা থেকে, বারবার জিজ্ঞেস করে, “মা তুমি বাইরে যাচ্ছ, কেন তুমি বাবাকে নিয়ে আসতেছ না। বাবাকে ফোন দাও।” ওর বাবাকে ছাড়া ও ঘুমাতে পারে না। বাবার কাছেই ও যেহেতু থাকে, ওকে গোসল করিয়ে দেয়, খাইয়ে দেয়। বলে, “বাবাকে ফোন দাও, বাবা কেন আসেনি।” উত্তরগুলো আমাদের কাছে নেই।’
রিমান্ডের নুরকে ইনজেকশন পুশ করা হয় দাবি করে মারিয়া নুর বলেন, ‘যখন ও বলতেছিল, ওর পা দুটি ঝুলায়ে উপরের দিকে, তারপর শারীরিকভাবে যত নির্যাতন আছে, ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে—সেটা স্লো পয়জনিং কি না, জানি না। ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে। নির্যাতনের যে অসহ্য যন্ত্রণা, সহ্য করতে না পেরে ও তিন-চারবার সেন্সলেস (অজ্ঞান) হয়ে গেছে। পরে ওর সাথে কী হয়েছে, ও নিজেও বলতে পারেনি।’
স্বামীর চিকিৎসা দাবি করে মারিয়া নুর বলেন, ‘আমার স্বামীকে অন্তত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। ও যেন সুচিকিৎসাটা পায়। আর ওর ওপর যেন শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করা হয়। আমার রাজনীতি করতে হবে না, দরকার নেই। আমাদের খুব চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমার স্বামীকে আমি রাজনীতি করতে দেব না। শুধু ওকে আমাদের কাছে ফেরত দেন।’

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending