Connect with us

বাংলাদেশ

গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা নিয়ে আইবিটিভির প্রথম গোলটেবিল বৈঠক

Published

on

গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা নিয়ে আইবিটিভির প্রথম গোলটেবিল বৈঠক

যোগ্য প্রবাসীদের থেকে সরকারের অংশীজন ও প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি

১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত হলো নতুন বাংলাদেশ। অভ্যুত্থান দমনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নির্দেশে চালানো হয়েছে গণহত্যা। আবু সাঈদ-মুগ্ধদের মতো জনতার পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন সোচ্চার ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অনেকে গিয়েছেন কারাগারে। গত শনিবার রক্তাক্ত জুলাই বিপ্লবের সেইসব প্রবাসীদের অবদান স্মরণ করতে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে নিউইয়র্ক সময় এবং আইবিটিভি ইউএসএ। গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের নিয়ে এটাই প্রথম গোলটেবিল বৈঠক।

দেড় লাখ যোগ্য প্রবাসী থেকে একজনকে সরকারে নিন: জাকারিয়া মাসুদ
সংস্কার চলাকালীন মুহুর্তে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজক আইবিটিভি ইউএসএ এবং নিউইয়র্ক সময়ের সিইও জাকারিয়া মাসুদ। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অভিবাসী শ্রমিক এবং বাংলাদেশি বংশদ্ভূত আমেরিকানরা বড় ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশে বসে গত ১৬-১৭ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার কোনো সুযোগ ছিল না। এমনকি আমরা যে পত্রিকা প্রকাশ করতাম যুক্তরাষ্ট্র থেকে, সেখানে সমালোচনা করে কিছু লিখলে বা রিপোর্ট প্রকাশ করলেও নানা জায়গা থেকে বাধা দেওয়া হতো। যদিও বেশি সমালোচনা করার সুযোগ আমাদের ছিল না। কারণ দেশেতো আসতেই হতো। এতো আমাদের মুখ ছিল বন্ধ। কিন্তু এখন আমরা লিখছি, কথা বলতে পারছি। কথা বলার সুযোগ এবং স্বাধীনতা পাচ্ছি। কিন্তু আমরা যেন কথা বলার স্বাধীনতাকে যেন অপব্যবহার না করি। আমরা ধৈর্য্য ধরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিয়ে কাজ করতে দিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা করা যায়। প্রবাসীদের ব্যাপারে জাকারিয়া মাসুদ বলেন, দেশের বাইরে দেড় লাখ যোগ্য প্রবাসী আছেন। তাদের পক্ষ থেকে যেকোনো একজনকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশগ্রহণ করতে পারেন। সরকারকে গুরুত্ব সহকারে বিষয়টিকে দেখার দাবি জানান তিনি।

বিদেশে বসে কনক-ইলিয়াস-পিনাকীরা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন: মাসুদ কামাল
আইবিটিভির গোলটেবিল বৈঠকে সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় রেমিট্যান্স শাটডাউন করে বিশাল ভূমিকা রেখেছিলেন প্রবাসীরা। বিদেশে থেকেও কনক সারোয়ার, ইলিয়াস হোসেন, পিনাকী ভট্টাচার্যরা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, হয়তো আপনারা বলবেন, প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠায়নি। রেমিট্যান্স শাটডাউন করে হাসিনা সরকারকে বিব্রত করেছে। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা দারুণ ভূমিকা রেখেছে। তারাই আবার হাসিনার পতনের পরে ব্যাপকহারে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ওপর খুশি হয়ে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। কিন্তু আমি মনে করে তার চেয়েও বেশি ভূমিকা ছিল তাদের যারা প্রবাসে বসে মানুষকে সংগঠিত করেছেন। দেশের মানুষকে বুঝিয়েছেন, কেন তাদের এটা করা উচিত। তারা মানুষকে জানিয়েছে কেন তাদের বিদেশে চলে যেতে হলো। দেশের মানুষকে দেখিয়েছে স্বৈরাচার হাসিনার প্রকৃত চেহারা কী রকম। আমি মনে করি, একটা গণ আন্দোলনের জন্য এর চেয়ে বড় ভূমিকা আর হতে পারে না।

প্রবাসীরা কষ্ট করে রেমিট্যান্স পাঠালেও হাসিনার দোসররা পাচার করেছেন: গোলাম মোর্তোজা
আন্দোলন করতে গিয়ে বিদেশে সাড়ে তিন’শ মানুষ বন্দি আছেন উল্লেখ করে সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা বলেন, প্রবাসীরা কষ্ট করে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। আর সেই রেমিট্যান্স পাচার করেছেন হাসিনা ও তার দোসররা। কোনো পেশা না থাকলেও রাজপুত্রদের মতো জীবনযাপন করছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, বিদেশে বন্দি ৩৫৭ জনের বিষয়টি অবিলম্বে সরকারের নজরে আনতে হবে, নজরে যদি থেকে থাকে তাহলে সেটি সরকারকে মনিটর করতে হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রবাসীদের মুক্তির ব্যাপারে কেন এত দেরি হচ্ছে? অথবা আদৌ কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা? অন্যদিকে সরকারি অর্থ পাচারকারীদের তথ্য আলোচনায় আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠায়। আরেকটি গ্রুপ বিদেশে অর্থ নিয়ে যায়। এখানে এক নম্বরে যার নামটা আসা দরকার, সেটি স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম। জয় ওয়াশিংটনে কিছু করে না, কখনই কিছু করতো না।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজপুত্ররা যেমন জীবনযাপন করে, সজীব ওয়াজেদ জয় তেমন জীবনযাপন করে। তার কোনো পেশা নাই, তথাকথিত কম্পিউটার বিজ্ঞানী। হিসাব করে দেখেন কতো টাকা তিনি বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছেন। এক স্যাটেলাইটের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে, যেখানে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকার উপরে খরচ হয় নাই। এমন আরও কতো আছে! তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কোনো পেশা নাই। লন্ডনে তিনি বিশাল বাড়িতে থাকেন। তারা কীভাবে টাকা দেশের বাইরে নিয়ে গেছে? এটা আমরা এত বছর আলোচনা করতে পারিনি। আলোচনাগুলো সামনে আনা দরকার। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নিকট আহ্বান জানিয়ে গোলাম মোর্তোজা বলেন, সৌদি আরব, দুবাই অথবা মালয়েশিয়া হোক- ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়ার একটা লুটপাট-জালিয়াতির যে ধারাটা তৈরি হয়েছে, এই ধারাটা বন্ধ করে দিতে হবে। এবং যখন-যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারাই এই ধারার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

প্রবাসে যাওয়ার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার দাবি মাহমুদুর রহমান মান্নার
গোলটেবিলে অংশ নিয়ে, প্রবাসে যাওয়ার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে এখনও যারা কারাগারে আছেন তাদের দ্রুত মুক্ত করার দাবি জানান মাহমুদুর রহমান মান্না। সংস্কার কার্যক্রমে প্রবাসীসহ সকলের সহমতের পরে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণের আহ্বান জানান মান্না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যতদিন আছে প্রতিদিনই এর সংস্কার করা দরকার। যেকোনো একটা বস্তুকে প্রতিদিন সংস্কার করবেন, প্রতিদিনই সেটা আরও উন্নত হবে। আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই সংস্কার করার কথা ভাবছি। তাহলে বর্তমান সময়ের সংস্কার করার মেন্ডেট কতোদিন হতে পারে এটা ভাবা দরকার। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ওরা বলছে সংস্কার সম্পন্ন করে তারপর নির্বাচন, তাহলে কি সবার জন্য অন্ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার পরে কি হবে? এটা তো হতে পারে না। আামাদের লড়াইটা হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় তার জন্য। আমরা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই, যে নির্বাচনের ফলাফলের ওপরে দাঁড়িয়ে আমরা এমন একটা বাংলাদেশ গড়তে পারবো, যারা প্রবাসীদের প্রতি সম্পূর্ণ সহযোগিতামূলক দেশ গঠন করতে পারি। পুলিশ বাহিনী, গণপ্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় সম্পর্কে মান্না বলেন, একটা পুলিশ বাহিনী ও গণপ্রশাসন লাগবে, যেটা এই ভোটকে সহযোগিতা করবে। নির্বাচন কমিশন লাগবে, যেটা এই ভোটে নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করবে। একেবারে ডাউন টু দ্য গ্রাউন্ড, যেখানে ভোট হয় সেই সেন্টার পর্যন্ত যারা যারা দায়িত্বে আছেন সবার সংস্কার লাগবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের ব্যাপারে পুনর্ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়ে মান্না আরও বলেন, অনেকে দলগতভাবে আমার সঙ্গে একমত পোষণ নাও করতে পারেন, তবে প্রথম এই নির্বাচনের ব্যাপারে পুনর্ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা একটা খারাপ পরিস্থিতিতে আছি, এমন পরিস্থিতিতে যারা দেশকে পরিচালনা করছেন, তারা কতোদূর সামনে নিয়ে যেতে পারছেন- এটা একটা বিতর্কিত বিষয়। তিনি বলেন, এই ভোটের আগে সমস্ত বিষয়ে সংস্কার করা যাবে না। ভোটের পরে সংস্কারের দায়িত্ব থাকবে, নতুন বাংলাদেশ গড়বার দায়িত্ব থাকবে। এবং সেটা যদি সম্পন্ন করতে চান তাহলে আপনাকে ভোটের মাধ্যমে এমন কোনো সরকার গঠন করতে হবে যিনি এই সংস্কার করবেন এবং জনগণের কল্যাণের জন্য সমস্ত নিবেদন রাখবেন।

আমেরিকার বিরুদ্ধে কথা বলে এখন ট্রাম্পের ছবি নিয়ে রাস্তায়: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এখন পতিত স্বৈরাচারের দোসররা ভারতের সহযোগিতায় ষড়যন্ত্র করছে। আমেরিকার বিরুদ্ধে কথা বলে এখন ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে কর্মীদের ছবি নিয়ে রাস্তায় নামতে বলছে। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশে রাষ্ট্র নির্মাণের লড়াই চলছে। সেই রাষ্ট্র নির্মাণের লড়াইকে নস্যাৎ করার জন্য পতিত স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা সরাসরি কাজ করছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাদেরকে সহযোগিতা করছে। এটাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা যে ফ্যাসিস্ট ছিলেন সেটাতো আমরা দেখেছি। ক্ষমতা আকঁড়ে ধরে রাখার জন্য শেষ দিন পর্যন্ত রাষ্ট্র শক্তিকে মানুষকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই শেখ হাসিনা এখন দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে সেটা এখন পরিষ্কার। ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে কর্মীদেরকে বলছেন মিছিল করতে। যাতে তার ওপর হামলা হলে ছবি তোলে রাখা হবে। ট্রাম্পের সাথে নাকি ওনার লিংক আছে। সেই লিংকে ওই ছবি তিনি পাঠিয়ে দিবেন। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র এবং এখানে নানা রকম ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে-এভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন শেখ হাসিনা।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করুন: সোহরাব হাসান
আলোচনায় প্রবাসীদের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করার ওপরে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হাসান। তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করার ওপরে গুরুত্ব দিতে হবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোনো নেতা যদি ঢাকায় থেকে কোনো জেলার প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। তাহলে অন্য কোনো দেশে থেকে কেন দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের প্রতি মানবিক দৃষ্টি দিলে বাংলাদেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

ভিন্নমতের কারণে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীদের হয়রানি করা হয়েছে: নুরুল হক নুর
গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ৫৩ বছরে রাজনীতিবিদরা সংস্কার করতে পারেনি। অন্তবর্তী সরকার তা করতে পারবে বলে প্রত্যাশা তার। তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রবাসী আমাদের দেশের মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ দেই যে, তারা জঙ্গি, উগ্র এবং স্বাধীনতাবিরোধী। তাহলে সে পাসপোর্ট নিয়ে কীভাবে দেশের বাইরে গেল। এতে ওই দেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় না? গত ১৫ বছর দেশের ভাবমূর্তি তারা ক্ষুণ্ন করেছে। বিএনপি এবং জামায়াত করার কারণে কত মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করেছে। আমরা চাই এই সরকার ভবিষ্যতে একটা সমঝোতার পথে হাটবে। আমি চাই না যে, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ করার কারণেও কেউ এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হোক। দেশের বাইরেতো তাদের কেউ নেই। সেখানে দূতাবাস তাদের অভিভাবক এবং একমাত্র প্রতিষ্ঠান। দূতাবাস যদি তাদের সেবা না দেয়, তাদের যাওয়ার জায়গাটা কোথায়?

অনেক প্রবাসী গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন: আশরাফ কায়সার
সাংবাদিক আশরাফ কায়সার বলেন, যারা দুবাই থেকে ফেরত এসেছেন, তাদের কর্মসংস্থান কিন্তু এখনও হয়নি। ৫৭ বা ৭০ মানুষকে কি রাষ্ট্র বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে না? এটা খুবই লজ্জার। যারা সত্যিকার অর্থে গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা যে অবহেলা করেছি, অব্যবস্থাপনা করেছি। আমাদের ৯০ দিন লেগেছে বুঝতে তারা আহত নাকি আহত না। এ ধরনের জিনিস কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে যাচ্ছে না। বিদেশে যেভাবে আমরা আপনাদের নিয়ে গর্ব করি, কখনও কখনও আপনাদের নিয়ে লজ্জাও পাই। আমরা যখন দেখি দলীয় পরিচয়ে এমনসব কর্মকাণ্ড করা হয়, যেটা আমাদের মাথা হেট করে দেয়। আমাদের মনে হয় এটিতো আমাদের কোনো নাগরিকের করার কথা না। আপনার রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতেই পারে এবং থাকা উচিত। একজন মানুষ রাজনৈতিক সচেতন হবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই রাজনীতি করে বিদেশে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেন নাকি করেন না। এই প্রশ্ন কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে। আমরা অতি সম্প্রতি অনেক ঘটনা দেখেছি। অতীতেও দেখেছি। আমরা যেন এমন বাংলাদেশকে উপস্থাপন না করি, যেটা দেশে মানতে পারি না। কাজেই প্রবাসে থেকে আপনারা দায়িত্বশীল হবেন। আপনারা গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই উল্টো ভূমিকা রেখেছেন। আমরা তাদেরকে চিনি।

রেমিট্যান্স পাঠালেও সকল প্রবাসী ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে ছিলেন না : ডা. সাখাওয়াত সায়ন্ত
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডাক্তার সাখাওয়াত সায়ন্ত বলেন, প্রবাসে দেড় কোটির মতো বাংলাদেশি আছেন। প্রত্যেকে দেশের জন্য ভূমিকা রাখলেও সবাই ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভূমিকায় ছিলো না। দেশের বাইরে থাকা প্রবাসীরা ফ্যাসিবাদীর পক্ষেও ছিলেন আবার বিপক্ষের মানুষও আছেন। দেশ গঠনে রেমিট্যান্স প্রেরণে সবার ভূমিকা থাকলেও গত ১৬ বছরে বিদেশে থেকে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই করেছেন তাদেরকে অনুভব করি। বিদেশে বসে এই ভূমিকা রাখতে গিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে তানজিল নামের একজন ছাত্রের বৃদ্ধ মাকে খুলনায় গ্রেফতার করা হয়েছিলো। টকশো সঞ্চালনা করেন কনক সারোওয়ার। কিন্তু দেশে তার বোনকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। এ রকম শত সহস্র উদাহরণ আছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা ট্রেন্ড সেট করুক : রুহিন হোসেন প্রিন্স
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারা তাদের সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে, রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কার কাজগুলো করুক। আরেকদিকে, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দিকে এগিয়ে যাক। আর সংস্কার কার্যক্রমগুলো করে তা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাক। তারা একটা ট্রেন্ড সেট করুক যাতে এটা থেকে ভবিষ্যতে যারা আসবে তারা বিচ্যুত হতে না পারে। আইবিটিভির বৈঠকে অংশ নিয়ে চলমান ঘটনাপ্রবাহ, সংস্কার, নির্বাচন এবং প্রবাসীদের জন্য করণীয় নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন বক্তারা। আইবিটিভির গোলটেবিলে বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে মূল্যায়নের জন্য ১০০দিন খুব বেশি সময় নয়। তবে অভ্যূত্থানের মধ্যদিয়ে দায়িত্ব নেয়া সরকারের প্রতি আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। এমন প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের উদ্যোগ এবং ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ থাকছে সরকারের সামনে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending