Connect with us

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র, পেছনে কলকাঠি নাড়ছে আওয়ামী লীগ!

Published

on

বাংলাদেশে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র, পেছনে কলকাঠি নাড়ছে আওয়ামী লীগ!

এক রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। যে সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য কাজ করে চলেছে। কিন্তু একের পর এক সংঘর্ষ ও ষড়যন্ত্রে প্রতিনিয়ত ব্যহত হয়ে চলেছে সংস্কার কর্মকাণ্ড। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে আদালত প্রাঙ্গণ—সংঘর্ষ ও প্রাণহানিতে সব জায়গায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। সব মিলিয়ে যেন এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু

করে জনমনে এ নিয়ে উৎকণ্ঠারি সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বলতে শোনা যাচ্ছে, কারা এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে! পতিত ফ্যাসিবাদি শক্তিই কি অরাজকতার সৃষ্টি করে আবার দেশের ঘাড়ে চেপে বসার ষড়যন্ত্র কষছে!
ষড়যন্ত্রের এই কালো থাবার সাথে যোগ হয়েছে সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের নাম। সম্প্রতি ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপ্রাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী গ্রেফতার হয়েছেন। চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন-৬ এর কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে তোলা হলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ ঘটে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁর অনুসারীরা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানিয়েছে আইনজীবী নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আইনজীবী নিহতের ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে প্রচারিত হয়ে যায় যে, ইসকনের সদস্যরাই সেই আইনজীবীতে জবাই করে হত্যা করেছে। যদিও নিহত আইনজীবী আলিফের মরদেহে জবাইয়ের আলামত পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিক্ষোভকারীরা ওই আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় ইসকন বিরোধী জনমত রাতারাতি দ্বিগুণ হয়ে যায়। এবং চট্টগ্রামে এ নিয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সকল মহলের মানুষ।
আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বিকেল থেকে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন আইনজীবীরা। তাঁরা আদালত ভবনের সোনালী ব্যাংকের সামনে, মূল ফটক জহুর হকার্স মার্কেট, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জেলা পরিষদের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সড়কে আগুন জ্বালিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দেন তাঁরা। জেলা পরিষদের সামনে সাঁজোয়া যানসহ বিজিবির সদস্যদের সতর্ক পাহারায় দেখা গেছে। রাত আটটার দিকে আইনজীবীদের সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অপর দিকে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে তাঁরা চট্টগ্রাম নিউমার্কেট চত্বরে অবস্থান নেন। আধা ঘণ্টা পর তাঁরা সরে যান।
ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণেও আইনজীবীরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ হয়।
আইনজীবী সাইফুলকে ‘প্রিয় দলীয় সহকর্মী’ হিসেবে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর আমির শাহজাহান চৌধুরী ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ নুরুল আমিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসকন নামধারী সন্ত্রাসীরা নৃশংসভাবে সাইফুলকে খুন করেছে।
অন্য দিকে নিজেদের আন্দোলনকে অহিংস উল্লেখ করে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা বলেছেন, কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জোটের প্রতিনিধি সুমন রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাহবাগে আমাদের আন্দোলনের ভেতরে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে তা ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।’ তিনি দাবি করেন, চট্টগ্রামে হিন্দু মনে করে ওই আইনজীবীর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। এখন চট্টগ্রামে অন্য হিন্দু আইনজীবীরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আজ বুধবারের মধ্যে জামিন দেওয়ার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয়। নইলে কারাগারের উদ্দেশে লংমার্চ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সনাতনীরা স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবেন বলে জানানো হয়।
অপর দিকে দুদিন আগে সারা দেশে একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা পাল্টা হামলায় বিপুল পরিমান শিক্ষার্থী আহত হওয়া সহ নিহত হয়েছেন বেশ কয়জন। দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে সংঘটিত অরাজকতায় উদ্বিগ্ন বিভিন্ন মহল। বিএনপি এ নিয়ে আশঙ্কা জানিয়েছে। প্রতি বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ব্যাহত হতে পারে, সে শঙ্কাও রয়েছে। এসব নৈরাজ্যের পেছনে ৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি আওয়ামী লীগের ইন্ধন রয়েছে বলে তাদের বিশ্বাস। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের দুরভিসন্ধি নিয়ে মাঠে সক্রিয় হতে চাইছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, এতে অনেক বড় আর্থিক লেনদেন জড়িত। এখনই তাদের দমন করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
নেতারা বলছেন, দেশে পট পরিবর্তনের পর বিপ্লবী সরকারের পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার গঠন হলে এ রকম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারত না। কিন্তু সরকার সেদিকে না গিয়ে শুধু সংস্কার প্রক্রিয়ায় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কয়েকটি দল ও সংগঠন এবং সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি ‘বিএনপি ঠেকাও’ এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সংস্কারকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন। এ সুযোগে অনির্বাচিত সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন ইস্যুতে দেশকে অস্থিতিশীল করতে কাজ করছে। ধীরে ধীরে তারা আরও শক্তি সঞ্চয় করছে। এমনকি ছোট ছোট আন্দোলন তৈরি করে তারা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। এ অবস্থায় তাদের মোকাবিলায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। একটি বিষয় স্বীকার করতেই হবে, এই সরকারের কারও কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। এর সঙ্গে আলাদা যোগ-বিয়োগ এবং সমীকরণ আছে– এটা বুঝতে পারবেন রাজনীতিবিদরা। এ জন্য আমরা নির্বাচন দ্রুত করতে বলছি। সেটা বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আমরা বলছি নির্বাচন দ্রুত না হলে এ সমস্যাগুলো বাড়বে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের হাতে অঢেল টাকা-পয়সা রয়েছে। বিগত দিনে তারা লক্ষ-কোটি টাকা লুটপাট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে। এই অর্থ দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবেই।
বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, রাজনীতিবিদরা যেভাবে দক্ষভাবে দেশ পরিচালনা করতে পারেন, সেটা সুশীল দিয়ে হবে না। একজন রাজনীতিবিদ জনগণের চাহিদা যেভাবে বুঝে তার কর্মপন্থা ঠিক করেন, সেভাবে অন্যদের দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। এখানেই বিস্তর ফারাক চলছে বর্তমান সরকারের সঙ্গে। সেখানে কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে দেশকে এখনই গণতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে যেতে চাইছে না। তারা মনে করছে, আরও কিছুদিন এভাবে চলতে থাকলে বিএনপির ভোটব্যাংক কমবে আর তাদের বাড়বে। এ কারণে তারা নির্বাচন দেরিতে চাইছেন। এই সুযোগে বিভিন্ন ব্যানারে সক্রিয় হয়ে উঠছেন পতিত স্বৈরাচারের দোসররা।
সম্প্রতি রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একের পর এক সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি নাজুক অবস্থানে চলে গেছে বলে মনে করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনার পেছনেও আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ইন্ধন রয়েছে বলে তারা মনে করছেন। এ ছাড়া রাজধানীর সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল নিষিদ্ধ নিয়ে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে সম্প্রতি অটোরিকশা চালকরা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ ও যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে অরাজক পরিবেশ তৈরি করে। এ ঘটনার পেছনেও তাদের হাত রয়েছে। এর আগে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। অভিযোগ রয়েছে, ওই আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন অরাজকতার বিষয়ে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তারের জন্য কৌশলে ছাত্রদলকে ক্যাম্পাস থেকে বের করার ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভারত ও অন্য দেশে থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। স্বৈরশাসক পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে একেকটা ফোনকল ছাড়ছেন। যত আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে আছে, তারা তাদের দোসরদের দিয়ে দেশের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
একইভাবে বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক আইডিতে এ প্রসঙ্গে একটি পোস্টে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার ঝাঁটাপেটা খেয়ে পালিয়ে যেয়ে এখন দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসার চেষ্টা করছে।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে ইসকন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাস মাঠে এক গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মামুনুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের ইসলামি তাওহিদি জনতার ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে নিষ্পেষিত করেছিল।
এদিকে চলমান অরাজকতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম বন্ধের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্ত অবস্থান গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাহিনী প্রধানরা।
বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ- জামানের সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে নবনিযুক্ত পুলিশের আইজিপি, র্যাবের মহাপরিচালক এবং ডিএমপি কমিশনার সাক্ষাৎ করেন। এ সময় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশের সব থানার কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনাটি নিয়ে নানা পক্ষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা এখনও করে যাচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে, যাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার স্পেসও মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ যাতে উসকানি দিয়ে পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য তীক্ষ্ম নজরদারি চলছে।
সাম্প্রতিক শ্রমিক আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন ও চট্টগ্রামে আইনজীবী নিহতের ঘটনায় ইন্ধন রয়েছে। এসব ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। গতকাল বিকালে রাজধানীর বনানীর সেনা অফিসার্স মেসে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্স ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব হায়দার খান এসব কথা বলেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় একটি পক্ষ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। আইনজীবীরা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসকন সমর্থকদের দায়ী করছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধের দাবিও করা হয়।
ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা সরকারের সতর্ক তৎপরতার কারণে বড় ধরণের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনও পুরোপুরি শঙ্কা কাটেনি। তৃতীয় পক্ষ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার পাঁয়তারা করছে। এ কারণে পুলিশের সকল ইউনিটকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দফতর থেকে সারা দেশে ইসকনের মন্দিরগুলোতে কারা অর্থায়ন করছে তার একটি তালিকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা ইতোমধ্যে সেই তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকায় ইসকনকে কারা সংগঠিত করার কাজ করছে তার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বাইরে থেকে কোনও অর্থায়ন হয় কিনা তারও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
ইসকনের অনুসারীদের সমাবেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি নিয়ে কিছুটা চিন্তায় পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব সমাবেশে সদ্য ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনও যোগসাজশ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

Trending