বাংলাদেশ
ট্রাম্প জামানায় ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের যত চ্যালেঞ্জ
Published
2 months agoon

নিউইয়র্ক সময় বিশ্লেষণ
ক্ষমতা গ্রহণের মাসপূর্তি হতে না হতেই বিশ্বজুড়ে নানা তোলপাড় করা ঘটনার জন্মদিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার নেতৃত্বাধিন পশ্চিমা শক্তিগুলোর প্রধান শত্রু রশিয়ার দিকে একতরফাভাবে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দারুণ বেকায়দায় ফেলেছেন ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলোকে। এছাড়া, চীন, কানাডা, মেস্কিকো ও ইউরোপের দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানীতে বাড়তি কর আরোপের ঘোষণা দিয়ে বিশ্বজুরে একরকম বাণিজ্য যুদ্ধের সুচনা করেছেন চার বছর পর ‘সাদা বাড়ী’তে ফিরে আসা এই মার্কিন ধনকুবের।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বন্ধত্বের কথা বলা হলেও দক্ষিণ এশিয়ার এই বৃহত শক্তির সঙ্গে সম্পর্কও যে মার্কিন অর্থনৈতিক স্বার্থ প্রধান্য পাবে। তার প্রমাণ ভারতীয় পণ্যে বাড়তি কর আরোপ এবং মোদি সে দেশে থাকাকালেই অবৈধ শিক্ষার্থীদের শিকল পড়িয়ে দেশে
পাঠিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে স্পস্ট করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক কেমন হবে সে প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে নরেন্দ্র মোদীর সামনে এক ভারতীয় সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেছিলো, গত আগষ্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং ড. ইউনুসের ক্ষমতা গ্রহণে মার্কিন ডিপ ষ্টেটের কোন ভূমিকা ছিলো কিনা? স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্প এমন অভিযোগ নাকচ করে বিষয়টি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পাল্টাপাল্টি ব্যখ্যাও হয়েছে বেশ জোরের সঙ্গে। বিতারিত আওয়ামী পন্থিরা দাবি করেছেন বাংলাদেশকে আবার ভারতের চোখে দেখার কুটনীতিতে ফিরে যাবার কথা বলেছেন ট্রাম্প। তবে অন্যপক্ষের মতে কেবলমাত্র ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার বিষয়টি মোদীর ওপর ছেড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ঢাকায় সরকার বদলে মার্কিন ডিপস্টেটের ভূমিকা ট্রাম্প স্বীকার না করলেও এই পরিবর্তনে ওয়াশিংটন যে খুশি হয়েছে তা ড. ইউনুসের গত বছর নিউ ইয়র্ক সফরের সময় তাকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আবেগঘনভাবে জরিয়ে ধরাসহ মার্কিনিদের নানা প্রতিক্রিয়ায় স্পস্ট ছিলো।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিরা ড. ইউনুসের নেতৃত্ব ক্ষমতা নিয়েছে, হিন্দুসহ সংখ্যলগুদের ওপর নির্যাতন করছে। তবে সেসব নালিশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমলে নেননি বলে জানিয়েছেন স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুস।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বৃহত শক্তিগুলোর সঙ্গে মার্কিন অর্থনৈতিক স্বার্থ প্রধান্য দিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করছেন, ইউক্রেন ও ফিলিস্তিনের গাজা নিয়েও তার প্রশাসন ব্যস্ত থাকবে। সেক্ষেত্রে কম গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের দিকে ততটা মনোযগ হয়তো দেবেনা। কিন্তু বিশ্বব্যাপি ট্রাম্প সকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারনে অন্যসব দেশের মতো এখনোও মার্কিন অর্থ সহয়তা কমবে তা কয়েকটি প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিলের মধ্য দিয়ে স্পস্ট হয়ছে।
বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন নীতিতে বদল আসুক বা না আসুক জনরোষের মূখে দেশ ছেড়ে পালানো শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে ক্ষমতায় বসানোর ভারতীয় চেষ্টায় মার্কিন সমর্থন থাকবেনা তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই। আর শেখ হাসিনা তার দখলদারি শাসনের পূরোটা সময়ই মার্কিন বিরোধী প্রচারনায় লিপ্ত ছিলেন। এমনকি তার সময় বিসিএস এর পরীক্ষায়ও মার্কিন বিরোধী প্রশ্ন করা হতো।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও মার্কিন নীতি দারুণভাবে প্রভাবিত করে ঢাকাকে। সেইসাথে চীন ও ভারত নিয়ে ট্রাম্পের ভাবনা আর পদক্ষেপে প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও। বিশ্লেষকরা শঙ্কা করছেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারলে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ। এতে করে বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা আরো কমতে পারে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন, যেসব জায়গায় অর্থনৈতিক সুবিধা থাকবে সেইসব দেশের সাথে এক ধরনের জোরালো সম্পর্কের সৃষ্টি হবে ট্রাম্পের নেতৃত্ত্বাধিন যুক্তরাষ্ট্রের।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বললেন, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের যে সংগ্রাম, সেখানে বাংলাদেশ যদি দ্রুত একটা সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে, যে ফর্মেই হোক অথবা যে ধরনের সরকারের মাধ্যমেই হোক তাহলে আমরা সম্ভবত আরও একটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি।
বাংলাদেশের এককভাবে সবচে বড় রফতানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র। খুব স্বাভাবিক কারণেই ট্রাম্পের ট্যাক্স নীতি ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তাই ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদার এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় মিশনকে আরও সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি উন্নতি করতে হবে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির।
মাহফুজুর রহমান বললেন, মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে চীন নীতিটা যখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে, তখন হয়তো আমাদের প্রতিরক্ষা নীতিতেও কিছুটা প্রভাব ফেলবে। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কতগুলো প্রস্তাব অনেকদিন থেকেই ঘুরাঘুরি করছে, ঝুলে আছে, এইগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ধরনের কোনো ব্যবস্থার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে চাপ আসতে পারে। এগুলো মোকাবেলার জন্য আমাদের একটা বিশ্বাসযোগ্য ও জনপ্রিয় সরকার দরকার। একইসাথে সুশাসনও দরকার।
মোটকথা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা, সেটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে। অনুদানের আশায় না থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পন্য ও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পথ খুঁজতে হবে।

নির্বাচন ও গণতন্ত্র

এরা কথা বলতে পারে না

চ্যাটজিপিটিতে নতুন সুবিধা

হোয়াটসঅ্যাপের আতঙ্ক ভিডিও প্রতারণা

যাঁরা খেজুর খেতে চান না, তাঁদের জন্য কিছু তথ্য

যে কারণে ড. ইউনূসকে ৫ বছরের জন্য চাচ্ছেন সাধারণ মানুষ

সফল বিনিয়োগ সম্মেলন: অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে পৃথিবী

বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান সখ্য: কৌশলগত চ্যালেঞ্জে ভারত

গ্রীন কার্ডধারীকে এয়ারপোর্টে আটক, নগ্ন করে জিজ্ঞাসাবাদ এবং গ্রীন কার্ড বাতিলের চেষ্টা

হাসনাতের ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
Trending
-
বাংলাদেশ1 week ago
সফল বিনিয়োগ সম্মেলন: অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে পৃথিবী
-
বাংলাদেশ2 days ago
বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান সখ্য: কৌশলগত চ্যালেঞ্জে ভারত
-
কমিউনিটি সংবাদ1 week ago
নিউইয়র্কে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার
-
তারকা ভুবন2 weeks ago
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে থানায় গৃহকর্মীর জিডি