কমিউনিটি সংবাদ
নিউজার্সি’তে বাংলা স্কুলের এক অভূতপূর্ব সন্ধ্যা উদযাপন
Published
4 months agoon
বেশ কয়েক বছর যাবত নিউজার্সির বাংলা স্কুল ( BS) একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস ও পহেলা বৈশাখের মতো অনুষ্ঠানগুলো ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করে আসছে। তবে এবছরে পালিত পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠান ছিল দুর্দান্ত একটি আনন্দপূর্ণ অধ্যায়। ১২ মে রোববার সন্ধ্যায় নিউজার্সি’র WICC বাংলা স্কুল (BS) কর্তৃক পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়ে গেল। নাদিরা ফারুক ২০০৮ সালে বাংলা স্কুল( BS) চালু করেন। বাংলা পড়া ও লেখার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কেও শেখানো হয়। বাংলা স্কুলের মাধ্যমে ঐ অঞ্চলের নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা চর্চার ইতিহাসে এক বিরল প্রতিফলন ঘটান তিনি।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় নাদিরা ফারুকের সূচনা বক্তব্য দিয়ে এবং এতে যোগ দেন বাংলা স্কুলের শিক্ষক- শারমিন সুলতানা শেমু, শারতাজ আশরাফ ঈশিতা, অরিন মুস্তাফিজ এবং ডাঃ শারমিন কাশেম। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থী এবং আগ্রহী সকল সম্প্রদায়ের শিশুরা। সন্ধ্যায় এমসি ছিলেন ঈশিতা ফেরদৌসী এশা ও বিজয় দাস। উদ্বোধনী গান পরিবেশন করেন বাংলা স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষক ঈশিতা ফেরদৌসি। এরপর শিক্ষার্থীরা গাইতে থাকে ‘এশো হে বৈশাখ’। একুশের কবিতা আবৃত্তি করেছিল বাংলা স্কুলের ৩টি গ্রুপ–এ, বি এবং সি। তাদের বাংলায় কথা বলা এবং গান গাওয়ার প্রচেষ্টা খুবই প্রশংসিত হয়েছিল। শুমকুমার রায়ের “গন্ধ বিচর” অবলম্বনে একটি ছোট নাটক উপস্থাপন করা হয়। অভিনীতদের জমকালো পোষাক ছিল সবার নজর কাড়ার মতো চিত্তাকর্ষক। তাদের বাংলা সংলাপ বলার প্রচেষ্টা এবং অভিনয় দর্শকদের থেকে প্রশংসিত হয়েছিল। রাতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানটি ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য “চিত্রাঙ্গদা”। নৃত্যনাট্যটি পরিচালনা ও কোরিওগ্রাফি করেছেন নন্দিতা দাস। এটি ছিল নৃত্যনাট্যের একটি স্মরণীয়, শ্বাসরুদ্ধকর উপস্থাপনা। শ্রোতারা মুগ্ধ হন এবং তারা দাঁড়িয়ে স্লোগান দেন। সমস্ত নৃত্যনাট্যের ভূমিকা- অর্জুন, কুরুপা, শুরুপা, ম্যাডন এবং শখীদের অভিনয় অসামান্য ছিল। অনুষ্ঠানটির সুন্দর পরিচালনার জন্যে বিশেষ ধন্যবাদের দাবী রাখেন নাদিরা ফারুক, পুরো দল এবং অভিভাবকরা। এছাড়াও মঞ্চ সাজানোর দায়িত্বে ছিলেন শাহানা শামী। দক্ষতার সাথে সাউন্ড সিস্টেম পরিচালনা করেছিলেন আফজালুর রহমান এবং স্প্রিংভিল সঙ্গীত শিক্ষকরা। অনুষ্ঠানটির সর্বশেষ চমক ছিল বাংলাদেশের বিখ্যাত শাড়ির সাথে “শাড়ি ওয়াক”। নন্দিতা দাসের পরিচালনায় শাড়ি পরিহিত নারীরা পারফর্ম করেন, স্থানেল রঙের সমাহারের শাড়ি একটি নতুনত্ব এনে দিয়েছিল অনুষ্ঠানে। বি,এ,ডি,ভি’র সভাপতি আফরোজ চৌধুরী পাপিয়া সেদিন সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। উনার দেয়া বক্তব্য সবার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও তিনি সকল অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট বিতরণ করেন। মা দিবস উপলক্ষে একটি শাড়ি র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বিজয়ী ৩ জন মা সুন্দর শাড়ি পেয়েছেন।
পরিশেষে কোনরূপ ক্যাটারিং ছাড়াই একটি দুর্দান্ত নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়েছিল। সব শিক্ষক এবং অভিভাবকরা নিজ হাতে রান্না করে নিয়ে আসেন। সকল স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষক, অভিভাবক, কোরিওগ্রাফার, মঞ্চ সহকারী এবং সকল অতিথিদের সম্মিলিত অবদানে একটি সফল অনুষ্ঠান শেষ হয়।