কমিউনিটি সংবাদ
২ লাখ আবেদনকারী জিতলেন সেকশন ৮ আবাসনে লটারি
Published
1 month agoon
নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠীর এবার ভাগ্য খুলেছে। চড়া মূল্যস্ফিতির এ সময়ে, নিউইয়র্কে সেকশন-৮ এর এইচসিডি প্রোগ্রামে বাসা ভাড়া সহায়তা পাওয়ার জন্য যারা আবেদন করেছিলেন, এর মধ্যে মোট দুই লাখ আবেদনকারী লটারি বিজয়ী হয়েছেন।
নিউইয়র্ক সিটি জানিয়েছে, সেকশন-৮ এর অধীনে ৬ লাখ ৩০ হাজারের বেশি আবেদনকারী বাসা ভাড়া সহায়তা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। এই আবেদনের শেষ সময় ছিল চলতি বছরের জুন মাসে। আবেদন গ্রহণ করার সময় বলা হয়েছিল ১ আগস্ট প্রাথমিক লটারি বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী নাম ঘোষণা করা হয়। যারা প্রাথমিকভাবে লটারি বিজয়ী হয়েছেন, তারা প্রিলিমিনারি সিলেকশন হয়েছেন বলে তাদের নাইচা অ্যাকাউন্টে তথ্য আপডেট করা হয়েছে এবং ইমেইল করা হয়েছে।
সিটি আরো জানিয়েছে যে, যাদের আগে থেকে নাইচার অ্যাকাউন্ট আছে, তারা তাদের অ্যাকাউন্টে গেলেই তার আবেদনের স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন। যাদের আগের কোনো নাইচার সেলফ সার্ভিস পোর্টালে অ্যাকাউন্ট নেই, তাদের নতুন করে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করার জন্য নাম, জন্মতারিখসহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে।
তবে জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকায় বসবাসরত যেসব বাংলাদেশী এ লটারি পেয়েছেন তাদের অনেকেই এখন পর্যন্ত নাইচার সেলফ সার্ভিস পোর্টালে নতুন করে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রবেশ করতে পারছেন না। তারা বলছেন, যতবার চেষ্টা করা হচ্ছে বলা হচ্ছে এই সময়ে সাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।
কেন যাচ্ছে না এর কারণও তারা বলেছে। ফলে ১ আগস্ট যখন লটারির রেজাল্ট হয়, তখন যাদের অ্যাকাউন্ট ছিল তারা ফলাফল দেখতে পান। যাদের অ্যাকাউন্ট ছিল না, তারা স্ট্যাটাস দেখতে পাননি। যদিও ২ আগস্ট সকালে অনেকেই ইমেইল বার্তা পেয়েছেন। তাই ইমেইল পাওয়ার আগ পর্যন্ত অনেকেই বিশ্বাস করছিলেন না যে তিনি সিলেকশন হয়েছেন। এদিকে ৩ আগস্ট কিছু কিছু মানুষ ইমেইল পেয়েছেন, যারা প্রাথমিক তালিকার জন্য সিলেকশন হননি এমনটি উল্লেখ করে। অন্যদিকে দেখা গেছে, একই পরিবারের দুই ভাই আলাদা আবেদন করে লটারি পেয়েছেন, আবার এমনও দেখা গেছে, একই পরিবারের ভাইবোন আলাদা আবেদন করেও কেউই লটারি পাননি। এখনো অনেক মানুষ আছেন, যারা কোনো আপডেট পাননি বা নির্বাচিত হয়েছেন কি হননি এমন কোনো ইমেইল পাননি। তারা অনেকটাই টেনশনে আছেন। কারণ তারা না পারছেন সেলফ সার্ভিস পোর্টালে অ্যাকাউন্ট খুলতে, না পারছেন কিছু করতে। তারা অপেক্ষা করছেন। এ রকম কয়েকজন বলেছেন, লটারি পেয়েছি কি পাইনি অন্তত এটা জানতে পারলেই হবে। যদি পেয়ে থাকি ভালো, আর পেয়ে না থাকলেও তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু জানতে হবে যে পেয়েছি কি না।
এদিকে সেকশন-৮ এর অধীনে যারা লটারি বিজয়ী হয়েছেন তাদেরকে এখন প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র তৈরি করার কথাও বলছে সিটি। ইমেইল বার্তায় লেখা হয়েছে, তারা প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর পরবর্তী সময়ে ওয়েটলিস্টে নাম থাকবে, যদি প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট দিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় সব প্রতিনা সম্পন্ন করতে পারেন। ইন্টারভিউতেও উত্তীর্ণ হতে হবে। তবে এখনই বলা হচ্ছে না কবে কখন কোন কোন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন, সময়সাপেক্ষ ব্যাপারও। তাই যারা প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সেকশন-৮ এর ইন্টারভিউয়ের জন্য যেসব নথিপত্র লাগবে, সেগুলো একত্র করে রাখা প্রয়োজন।
লটারি পেলেও সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী যোগ্য কি না তা তাকে প্রমাণ করতে হবে। এ জন্য তার পরিবারের সকল সদস্যের আয়, আয়-সংক্রান্ত এফিডেভিট, পে স্টারস, ডব্লিউ-২ ট্যাক্স ফাইল, ট্যাক্স ট্রান্সক্রিপ্ট, সকল প্রকার ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট, সব ধরনের শেয়ার মার্কেটের বিবরণ ও স্টেটমেন্ট, এর বাইরে যদি কারও আরও কোনো ধরনের অ্যাসেট থাকে, অর্থাৎ একজন মানুষের যত ধরনের আয় ও সম্পদ আছে, এর সব প্রমাণ দিতে হবে। সেই প্রমাণ দেওয়ার পরই ইনকামের সীমা নির্ধারণ করা হবে ও ভাড়া নির্ধারিত হবে। যাদের ব্যাংক হিসাবে ৫০ হাজার ডলারের বেশি ক্যাশ আছে, তারা লটারি বিজয়ী হলেও বাড়ি ভাড়া পাবেন না। এর কম থাকলে তার ওই অর্থ হিসাব করেই বাড়ি ভাড়া গণনা করা হবে।
সাধারণত কোনো মানুষ সেকশন-৮ এর অধীনে বাসা পেলে তার পরিবারের অন্য যেসব সদস্য তার সঙ্গে থাকেন, তাদের সবার আয়ের ৩০-৪০ শতাংশ প্রতি মাসে ভাড়ার জন্য দিতে হবে। একটি পরিবারের সদস্যসংখ্যা কতজন হলে কত পর্যন্ত আয় হতে হবে, সে সম্পর্কেও বলা হয়েছে। সেকশন-৮ আবেদনকারীদের জন্য বর্তমান আরের সীমা একজনের পরিবার হলে বছরে আয় থাকতে হবে সর্বোচ্চ ৫৪ হাজার ৩৫০ ডলার।