ভারতের উগ্রবাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভার সদস্যরা কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইন্ডিয়া টুডে কলকাতা পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার হিন্দু মহাসভার সদস্যরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর চলমান হামলার প্রতিবাদে উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া বিক্ষোভটি উপ-হাইকমিশনের কাছে পৌঁছালে উত্তেজনা বেড়ে যায়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে হিন্দু মহাসভার সদস্যরা বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ বাঁধা দেয়। তখন বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গত ৩০ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালি থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। এই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। এরপর গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা ডিবি।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পরেই বাংলাদেশে বিক্ষোভ করেন ইসকনের অনুসারীরা। তবে চিন্ময়ের গ্রেপ্তারের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ হলেও ভারতকে এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হতে দেখা গেছে।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানায়। মুক্তি না দিলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত ‘অবরোধ’ করারও হুমকি দেয় বিজেপি। এ ছাড়া ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভাতেও আলোচিত হয়েছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভাঙচুর ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি। আজ বৃহস্পতিবার লোকসভা অধিবেশনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিংহ বাংলাদেশ ইস্যুতে ভাষণ দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের পার্লামেন্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।