Connect with us

কমিউনিটি সংবাদ

মিশিগানে বিশ্ব সিলেট সম্মেলন ঘিরে ধূম্রজাল, অসন্তোষ

Published

on

মিশিগানে বিশ্ব সিলেট সম্মেলন আয়োজনের আগেই প্রথম পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের অনেকেই সরে গেছেন। এ নিয়ে কমিউনিটিতে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে মিশিগানে বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। দফায় দফায় নেতৃত্বের বদল, পারস্পরিক অবিশ্বাস সন্দেহ আর দূর্বল সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে এগোচ্ছে। শেষ মুহূর্তে সম্মেলন হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিশ্ব সিলেট সম্মেলন বিশ্বজুড়ে সিলেটিদের সর্বজনীন মিলন মেলায় পরিণত হবে কি না? নাকি কিছু সংখ্যক মানুষের সিজনাল টু-পাইস অথবা নাম কামানোর সুক্ষ্ম ধান্দা? বিশ্ব সম্মেলন হচ্ছে

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী সিলেটবাসীর একটি অনিয়মিত আয়োজন। তাঁর নির্দিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষ নেই। সিলেটের যে কেউ ইচ্ছে করলেই করতে পারে। সেখানে সিলেটের সাহিত্য সংস্কৃতি কৃষ্টি-কালচার অনুশীলন হয়। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। যদিও এর কোনো প্রায়োগিক সফলতা দেখা যায় না। এক সময় বহির্বিশ্বে জালালাবাদ এসোসিয়েশন নামের সিলেটের একটি বৃহৎ সংগঠন প্রবাসে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সেই সংগঠনের ছত্র ছায়ায় সিলেটিরা বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। বিভিন্ন দেশে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের অযোগ্য নেতৃত্ব, দলাদলি, সিন্ডিকেট কালচার এবং আঞ্চলিকতার কারণে এর জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। তাঁর ধারাবাহিকতায় বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের নামে বঞ্চিত, কথিত নেতারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান এর পাশাপাশি কমিউনিটিতে বাহবা কুড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিগত সময়ের অনুষ্ঠিত সম্মেলনের ইতিহাস ঘেঁটে তাই দেখা গেছে। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায় ২০১৪ সালে “আন্তর্জাতিক সিলেট উৎসব” নামে প্রথম কলকাতায় শুরু হয়। ২০১৬ সালে “আন্তর্জাতিক সিলেট উৎসব” নামে জালালাবাদ এসোসিয়েশন কর্তৃক ঢাকা এবং সিলেটে আয়োজিত হয়েছে। ২০১৭ সালে বিশ্ব সিলেট সম্মেলন নামে নিউইয়র্কে জালালাবাদ এসোসিয়েশন, আমেরিকা কর্তৃক আয়োজিত হয়। ২০১৮ সালে বিশ্ব সিলেট সম্মেলন টরেন্টো, কানাডাতে “টরেন্টো জালালাবাদ এসোসিয়েশন” কর্তৃক আয়োজিত হয়। ২০১৯ সালে বিশ্ব সিলেট উৎসব নামে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়।
এক শ্রেণীর সচেতন নাগরিকদের মতে, এমন আঞ্চলিক অনুষ্ঠান ও মেলার নামে স্পন্সর এবং শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদেরকে সম্মাননা ও ফরমায়েশি ক্রেষ্ট প্রদানের আড়ালে তাদের নিকট থেকে অনুদানের নামে অর্থ আদায়, নানা পন্যের স্টল ভাড়ার মাধ্যমে যাবতীয় খরচ পাতি শেষে উদ্বৃত্ত অর্থ উদ্যোক্তাদের অনেকের আয়ের একটি উৎস। আর এম আয়ের জন্য সরকার অথবা প্রবাসীদের নিকট জবাবদিহি করতে হয় না।
অনেক সংগঠকদের মতে, এরই প্রেক্ষাপটে এবার মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বিশ্ব সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে কি-না? তবে ইতিমধ্যে চলছে নানান টানাপোরেন। চলছে একের পর এক বৈঠক। প্রথম পর্যায়ে যারা উদ্যোক্তার সারিতে ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সরে গেছেন। প্রথম দিকে সদলবলে যে সব সংগঠকদের পদচারণা ছিল তাদের অনেকেই এখন অনুপস্থিত। সেই জায়গায় সিলেট সম্মেলনের নেতৃত্বে এসেছে নতুন মুখ। সেই নেতৃত্ব কতদিন থাকবে এখনো সন্দিহান স্থানীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে স্থানীয় একটি জেলা সংগঠনের উপদেষ্টার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) সাথে আলাপ করে জানা যায়, তিনি প্রথমে বিভিন্ন সভায় জড়িত ছিলেন। এখন সরে পড়েছেন। তিনি বলেন, এই বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের জন্য প্রথমে পাঁচ লক্ষ ডলারের বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছিল। অথচ আয় এবং ব্যয়ের হিসাব সুনিশ্চিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট আর্থিক ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়নি। ব্যাংক একাউন্ট খোলা এবং তার দায়িত্বে কোন সৎ দায়িত্বশীল নিয়োগ দেয়া হবে তা-ও নিশ্চিত নয়। মেলার শেষে উদ্বৃত্ত অর্থ সিলেটের কোনো জনহিতকর কাজে ব্যবহার করা হবে, নাকি উদ্যোক্তাদের পকেটে যাবে সেটা পরিস্কার না হওয়ায় আমি সরে পরেছি। মিশিগানের খুব সুপরিচিত মুখ ও সিলেটের একটি কলেজের সাবেক ভিপি এবং একজন শক্তিশালী সংগঠক প্রথমে জড়িত ছিলেন। উনার সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, অনুষ্ঠিতব্য সিলেট বিশ্ব সম্মেলন নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু মুল উদ্যোক্তাদের মধ্যে দু’একজনের প্রতি আস্থার সংকট দেখা দেয়ায় সরে পরেছি। এ বিষয়ে কথা হয়, স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতির সাথে। তিনি বলেন, বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের নামে প্রবাসে আঞ্চলিকতা প্রমোট করা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতার কাজ নয়। এমনিতেই মিশিগান প্রবাসীরা নানা বিভাজনে বিভক্ত। তাঁর উপর কমিউনিটিতে আরেকটি রেখা টানা বুদ্ধি ভিত্তিক কাজ নয়। তবে বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের আমি বিরোধীতা করছিনা। যদি প্রকৃত অর্থেই বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তারা সৎ উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার প্রায়োগিক বাস্তবায়নে সফল হন, তবেই সে সম্মেলন সার্থক হবে। নতুবা সম্মেলনের নামে কিছু অর্থ উপার্জন ও নাম কামানোই সার হবে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending