Connect with us

সম্পাদকীয়

ভারতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য খুন

Published

on

newyork-somoy

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে খুন হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এমপি আনারকে হত্যার পর শরীর টুকরো টুকরো করে হাড্ডি ও মাংস আলাদা করা হয়। এরপর হলুদ মিশিয়ে ব্যাগে ভরে ওই বাসা থেকে বের করা হয়েছে। তবে কোথায় মরদেহের খণ্ডিত অংশ ফেলা হয়েছে- তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে তার মরদেহ এখনো উদ্ধার করা যায়নি। মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা বলে বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হয়ে এমপি আনার কেন রাজারহাটের ওই ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তারা। ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো এই তদন্তে সহযোগিতা করছে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যাওয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন এমপিকে খুন করা হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অন্যদিকে কলকাতার রাজারহাট অ্যাপার্টমেন্টের সিসিটিভি ফুটেজে ওই এমপিকে সর্বশেষ দেখা গেছে। কিন্তু এখনো মরদেহ খুঁজে বের করতে পারছে না পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যাকাণ্ড ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ সূত্র তাকে ব্যবসায়িক বিরোধ ও ফাঁদে ফেলা হয়েছিল বলে দাবি করেছে।
গত ১২ মে কলকাতায় যান এমপি আনার। পরের দিন ১৩ মে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে ভারতের বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বের হন তিনি। বন্ধুকে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যায় ফিরবেন। এরপর ১৬ মে থেকে নিখোঁজ হন তিনি। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনে বলা হয়, এমপি আনার তার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিনতেন। হত্যাকারীদের একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, যার সঙ্গে আনারের কিছু বিরোধও ছিল এবং সেই ব্যবসায়ী এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র করেছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই ব্যবসায়ী কলকাতায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ছিলেন এবং সেই সময়টিতে তিনি রাজারহাট কমপ্লেক্সে এক নারী এবং অন্য একজন ব্যবসায়িক সহযোগীর সঙ্গে ছিলেন।
এদিকে তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৩ মে আনারকে রাজারহাট কমপ্লেক্সের ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশের এক ঘণ্টার মধ্যে হত্যা করা হয়েছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন। কিন্তু ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বরাহনগরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এমপি আনার কেন রাজারহাটের ওই ফ্ল্যাটে গেলেন সেটিও বোঝার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, স্বর্ণ চোরাচালানের আন্তর্দেশীয় চক্রের দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে আনোয়ারুলকে ভারতে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ঘটনার তদন্তে নেমে বাংলাদেশ ও কলকাতার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন তথ্য পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দুই দেশের তদন্তকারীদের মধ্যে তথ্য বিনিময় হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে; যাঁরা ঘটনার পর ভারত থেকে দেশে ফিরেছিলেন। ঢাকায় ডিবির সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করছেন যে তাঁরা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে হত্যায় সরাসরি জড়িত। এইভাবে ক্ষমতাসনি রাজনৈতিক দলের একজন সংসদ সদস্য খুন হওয়ার ঘটনা যেমন সবাইকে অবাক করেছে, তেমনি এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তও সবাই প্রত্যাশা করছে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending