Connect with us

সম্পাদকীয়

ঈদ সবার জীবনে বয়ে আনুক আনন্দ

Published

on

ঈদ সবার জীবনে বয়ে আনুক আনন্দ

দুয়ারে দাঁড়িয়ে ঈদ। বছর ঘুরে আবার এল ঈদ-উল-আযহা। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে পুরাতন বেদনা-বিভেদ ভুলে আনন্দ ভাগ করে নেয়ার এ এক অতুলনীয় উপলক্ষ।
জন্মভূমি থেকে হাজার মাইল দূরে, ফেলে আসা আপনজনদের স্মৃতি নিয়ে প্রবাসে যার যার মত করে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে ঈদ উদ্যাপনের। প্রতিবেশী বন্ধু স্বজনদের নিয়ে এখানেও জমে উঠবে ঈদ।
পবিত্র হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতার পর সারা বিশ্বে শুরু হয় ঈদ-উল-আযহার উৎসব। ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, মহান আল্লাহ তা’আলা ইসলামের রাসুল হযরত ইব্রাহীম কে স্বপ্নযোগে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার নির্দেশ দেন: “তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি কর।”
ইব্রাহীম স্বপ্নে এরূপ আদেশ পেয়ে ১০টি উট কোরবানি করলেন। পুনরায় তিনি আবারো একই স্বপ্ন দেখলেন। অতঃপর ইব্রাহীম এবার ১০০টি উট কোরবানি করেন। এরপরেও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির উদ্দেশ্যে প্রস্তুতিসহ আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করেন। এ সময় শয়তান আল্লাহর আদেশ পালন করা থেকে বিরত করার জন্য ইব্রাহীম ও তার পরিবারকে প্রলুব্ধ করেছিল, এবং ইব্রাহীম শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে মেরেছিলেন। শয়তানকে তার প্রত্যাখ্যানের কথা স্মরণে হজ্জের সময় শয়তানের অবস্থানের চিহ্ন স্বরূপ নির্মিত ৩টি স্তম্ভে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করা হয়।
যখন ইব্রাহীম আরাফাত পর্বতের উপর তার পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য গলদেশে ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তার পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে এবং তার পুত্রের কোনো ক্ষতি হয়নি। ইব্রাহীম আল্লাহর আদেশ পালন করার দ্বারা কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এতে সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ ইব্রাহীম কে তার খলিল (বন্ধু) হিসাবে গ্রহণ করেন।
এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিমরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি উদ্যাপন করেন। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহার কুরবানি চলে।
ধর্মীয় এই ব্যাখ্যা ও পালনরীতির বাইরে আমরা প্রতি ঈদেই নিজেদের মত করে ঈদকে রাঙিয়ে তুলতে করি যার যার সাধ্য মত নানা আয়োজন। মিলিত হই বন্ধু-স্বজনদের সাথে। এবারও নিশ্চই তার ব্যতিক্রম হবে না। শিশু-কিশোর, তরুণ, বৃদ্ধ সকলের মনেই ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে।
তবে এই প্রবাসে ঈদের দিনেও কারও কারও থাকে কর্মদিবস। তবুও খুব ভোরে নতুন পোশাক পরে আমাদের অনেককেই আগেভাগে বের হয়ে পড়তে হবে ঈদের নামাজ আদায় করতে। যান্ত্রিকতাময় প্রবাস জীবনে ঈদের দিনে প্রবাসী বাঙালিরা মিলিত হয়ে একে অন্যের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। চলবে বিশেষ খাবারের আয়োজন।
ঈদের সময় দেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনের সাথে টেলিফোনে শুভেচ্ছা বিনিময় প্রবাস জীবনের ঈদের একটা চিরাচরিত অনুষঙ্গ। অনেকের মনেই থাকে দেশে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে না পারার আক্ষেপ। যাদের সাধ্য আছে, তাদের কেউ কেউ পাড়ি জমাবেন প্রিয় স্বদেশে।
প্রস্তুতি চলছে সবার। আমাদেরও উৎসাহের কমতি নেই। পাক্ষিক নিউইর্ক সময় আসন্ন ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে নিয়মিত খেবরের পাশাপাশি শিল্প ও সাহিত্যের বরেণ্য ব্যক্তিত্বের গুরুত্বপূর্ণ কিছু রচণার সন্নিবেশ ঘটিয়েছে এ সংখ্যায়।
পাঠক, আত্মপ্রকাশের সামান্য সময়েই আপনাদের অতুলনীয় সাড়া আমাদের প্রাণিত করেছে। আপনাদের আগ্রহ ও সংযুক্ততায় ভবিষ্যতে আরও বস্তুনিষ্ঠ, আরও বর্ণাঢ্য হবে আমাদের আয়োজন। যে যেখানেই থাকুন, ঈদ সুস্থ সুন্দরভাবে আনন্দে কাটুক, এই প্রত্যাশা রইলো।

সবাইকে ঈদ মুবারাক।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending