সুস্বাস্থ্য
উচ্চ রক্তচাপ কীভাবে হয়, কাদের ঝুঁকি বেশি
Published
4 months agoon
১৭ মে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরণের ভুল ধারণা আছে। অনেকে মনে করেন, কারো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার প্রবণতা থাকলে হয়ত সেটিকে হাইপারটেনশন বলে। কেউ মনে করেন কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হয়ত উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সময় যে বুক ধড়ফড় করে সেটাই হাইপারটেনশন। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, উচ্চ রক্তচাপেরই আরেক নাম হাইপারটেনশন। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এনএইচএস হাইপারটেনশনকেই হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ বলে বর্ণনা করছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। বাংলাদেশে এক চতুর্থাংশ মানুষ হাইপারটেনশন বা যাকে সাধারণভাবে আমরা উচ্চ রক্তচাপ বলে জানি, তাতে ভুগছেন বলে চিকিৎসকেরা বলছেন। আর তাতে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি ভুগছেন।
কেন হয় হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ?
এক সময় ধরে নেয়া হত কেবল বয়স্ক মানুষ অর্থাৎ ৪০ বছরের বেশি হলেই কারো উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু এখন চিকিৎসকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অল্পবয়সীদের মধ্যেও এ রোগ দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় শঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষ নিজেরা হাইপারটেনশনে ভুগছেন সে সম্পর্কে জানেন না। তার ফলে হার্ট অ্যাটাক বা হার্ট ফেইলিওরের মত বড় ধরণের কোন অসুস্থতায় আক্রান্ত হন, যার পরিণতিতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে এ নীরব ঘাতকের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন শনাক্ত করা যে আপনার রক্তচাপ বিপৎসীমার নিচে আছে কি না, আর না থাকলে কী করতে হবে।
উচ্চ রক্তচাপ থেকে বাঁচতে কী করতে হবে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, উচ্চ রক্তচাপের কারণে প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৯৪ লাখ মানুষ মারা যান, এবং এটি পৃথিবীতে অসুখে ভুগে মারা যাওয়ার প্রধান কারণ। উচ্চ রক্তচাপের কারণে শরীরের মাথা থেকে পা পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে। প্রথমেই এ থেকে স্ট্রোক হতে পারে, যা থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে। স্ট্রোক থেকে অন্ধত্ব, শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যাওয়া এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ থেকে হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিওর হতে পারে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। ফলে চিকিৎসকেরা মনে করেন, সতর্ক হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
যেসব পদক্ষেপের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যাবে
* খাবারে আলগা লবণ বাদ দিতে হবে
* ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
* শাক-সবজি, ফলমূল বেশি করে খেতে হবে
* নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করতে হবে
* নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করতে হবে
* রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
* তামাক ও তামাক জাতীয় বস্তু ত্যাগ করতে হবে
* পরিমিত ঘুমাতে হবে
* স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে হবে
* চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না