বিবিধ
অভিভাষণ: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র কাঠামোর নতুন বিন্যাস
Published
3 weeks agoon
কয়েকদিন আগে জাতীয় চলচ্চিত্র কমিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে কয়েকজন চলচ্চিত্রকার আমাকে ডেকেছিলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালায় কিছু সংশোধনী প্রস্তাব তারা এনেছেন, এবং প্রস্তাব দিয়েছেন– বাংলাদেশে একটি জাতীয় চলচ্চিত্র কমিশন করতে হবে। তারা দশ ভাগে বিভক্ত করে, দশটি বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। আরেকটা প্রস্তাব, জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র তৈরি করতে হবে।
আমার মনে কয়েকটা প্রশ্ন এলো। পাকিস্তান আমলের মাঝামাঝি, ১৯৫৮ সালে, গুলশান এলাকা গঠনের পরিকল্পনা করা হলো; একইসঙ্গে বনানী। ধানমন্ডির কথাও আপনারা জানেন। কোথাও একটা পাবলিক লাইব্রেরি বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য কোনো স্থান বরাদ্দ করা হয়নি। যেসব স্কুল দেখেন সেগুলো বসতবাড়ির জায়গাতেই হয়েছে। সিনেমা হলের প্রশ্নই ওঠে না।
‘মধুপোক’ প্রকাশিত চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রবন্ধ ও আলোচনা– ‘চলচ্চিত্র শিল্প জাতীয়করণ নীতিমালা ১৯৭১’। মীর শামছুল আলম বাবু সম্পাদিত বইটিতে আছে– ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে জহির রায়হান ও আলমগীর কবির একটি সমিতি গঠন করেছিলেন, নাম– ‘বাঙলা দেশ চলচ্চিত্র শিল্পী ও কুশলী সমিতি’। বাঙলা ও দেশ আলাদা শব্দ। তারা যে দলিল পেশ করেছিলেন তার কিছু অংশ দিয়ে আলোচনা শুরু করছি।
‘এই নীতিমালার আদি সংস্করণ ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। পরে স্বাধীন দেশের জন্য সরকারের নীতিমালাটি পুনরায় জমা দেওয়ার জন্য সামান্য পরিমার্জন করে নতুন খসড়া তৈরি করা হয়। এতে সৈয়দ হাসান ইমামের হাতের লেখায় পহেলা জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখটি পাওয়া যায়।’ আমি তার কয়েকটি হাইলাইট বলি। এটির মূল কারিগরদের একজন আলমগীর কবির, আরেকজন জহির রায়হান। তাদের যে প্রস্তাব ছিল তার মাঝখান থেকে কিছু অংশ পড়ছি–
সমগ্র চলচ্চিত্র শিল্পকে জাতীয়করণ ও তার ভবিষ্যৎ পরিচালনার জন্য সরকারকে অবিলম্বে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সিনেমাটোগ্রাফি (এনসিসি) নামে একটা সংস্থা গঠন করতে হবে। চলচ্চিত্র শিল্পের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে এই সংস্থা। এই সংস্থার সাতটি বিভাগ থাকবে– ছবি নির্মাণ বিভাগ, পরিবেশন বিভাগ, প্রদর্শন বিভাগ, প্রশিক্ষণ বিভাগ, উন্নয়ন বিভাগ, আমদানি ও রপ্তানি বিভাগ এবং সেন্সর বিভাগ।
আমাদের বন্ধুরা এখন প্রস্তাবে কমিশনের অধীনে চলচ্চিত্রের দশটা বিভাগকে নিয়ে এসেছেন। তারা কাউন্সিলকে কমিশনের অধীনে নিয়ে গেছেন। আমার মনে হয়, কমিশন জিনিসটা তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন নাই। তারা বলছেন এই চলচ্চিত্র কমিশনের যিনি প্রধান হবেন, ম্যানেজিং ডিরেক্টরও; তিনি হবেন সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় সরকারের একজন মন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে চালিত হবে। আমাদের সিনেমাটোগ্রাফারদের তখন স্বপ্ন ছিল, অন্তত মন্ত্রীর পদমর্যাদারই কেউ এটার প্রধান থাকবেন। ৫৩ বছর পরে আমাদের চিন্তা একটু নেমে সচিব পর্যন্ত এসেছে।
আমরা একটা রাষ্ট্রে বাস করছি। রাষ্ট্র সিনেমা বানাবে না, বানাবেন আপনি। কিন্তু রাষ্ট্র রেগুলেট করবে, মানে রুল তৈরি করবে এবং রুল অনুযায়ী চালাবে। আপনি যখন বলেন, চলচ্চিত্র একটি শিল্প, তখন তার মানে কী করেন। ফিল্ম ইজ অ্যান আর্ট অর ফিল্ম ইজ অ্যান ইন্ডাস্ট্রি।
ইংরেজিতে বললে দুটোই করতে পারেন কিন্তু শিল্পকলা তো দুটো অর্থ ধারণ করে না। চলচ্চিত্র সম্পর্কে বলার আগে আমি বলি, আর্ট কী জিনিস। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বলেছেন– ‘আর্ট ইজ নেভার ফিনিশড, অনলি অ্যাবানডান্ড’
‘চলচ্চিত্র শিল্প একটি বৃহৎ শিল্প’– এটা জহির রায়হান ও আলমগীর কবিরের প্রথম বাক্য : ‘চলচ্চিত্র শিল্প আজ পৃথিবীর সমস্ত দেশে বৃহৎ শিল্প হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত।’
চলচ্চিত্র কী? চলচ্চিত্র শিল্প মানে ইন্ডাস্ট্রি বুঝিয়েছেন তারা, এটা আমার ধারণা। তারা চলচ্চিত্রকে পুঁজি বিনিয়োগ, লোক ও শ্রম নিয়োগ, অর্থকরী ব্যবসা, সম্ভাব্য বিদেশি মুদ্রা আয়, সর্বোপরি এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে সর্ববৃহৎ শিল্প বলেছেন। এটা পণ্য ও পাবলিক গুডস হবে।
লুই আলথুসার বলেছেন– এটা ‘আইডলিজিক্যাল স্টেট অ্যাপারেটাস’। এটা মানুষের মনকে মন্থন করার দারুণ মেশিন। আপনি কী পছন্দ করবেন, আপনার জনমত কী হবে, সেটা নির্ণয়ের জন্য শিল্প যত বেশি শক্তিশালী হবে, তার প্রভাব তত বেশি হবে। চলচ্চিত্রকে বই বললে অনেকে আপত্তি করে। এটি ছদ্মবেশী বই। এটি মানুষের মগজধোলাই করার দারুণ মেশিন।
‘যদিও ২৩ বছর ধরে পাকিস্তানের শাসকচক্র এই শিল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর ট্যাক্স হিসেবে প্রচুর টাকা আয় করেছে, তবুও এই শিল্প সব সময় অবহেলিত হয়েছে।’
চলচ্চিত্রবিষয়ক অনেক লেখাই আমি বুঝি না কিন্তু এই বইতে পরিষ্কারভাবে লেখা হয়েছে।
‘চলচ্চিত্র শিল্পের ক্ষমতা অফুরন্ত। একে যদি সঠিকভাবে চালানো যায় তাহলে দেশের জনগণের শিক্ষাদীক্ষা, আচার-আচরণ, তাদের চিন্তাভাবনা, সবকিছুর মধ্যে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে এই শিল্প মাধ্যম বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে।’ ওনারা বলেছেন।
আমি এখানে বলব নতুন স্কুল-কলেজে কত কিছু পড়ানো হয়, চলচ্চিত্র পড়ানো হবে না কেন। শিশুরা চলচ্চিত্র দেখবে হোমওয়ার্ক করবে।
আমরা এখন একটা সংকটে আছি। মনে হচ্ছে পুরাতনের শেষ হয়েছে। কিন্তু নতুনের এখনও জন্ম হয় নাই। এ ধরনের অবস্থাকে সংকট বলে। দ্য ওল্ড ইজ ডাইং, বাট দ্য নিউ ইজ নট ইয়েট বর্ন। মাতৃগর্ভ থেকে পৃথিবীতে সন্তান আসার সময় এক ধরনের সংকট হয়। হয় মায়ের প্রাণ বাঁচবে, অথবা মা মারা যাবেন। অনেক সময় মা মারা যান, শিশুও মারা যায়। অনেক সময় শিশু জন্মগ্রহণ করে, মা মারা যান। আমরা এখন কোথায় আছি জানি না। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ সম্বন্ধে কিছু বলতে পারছি না। সরকার যা-ই হোক না কেন, এই দেশে তো আমাদের থাকতে হবে। আপনি আমি না থাকতে পারি, আমাদের দেশ থাকতে হবে। কিসের ভিত্তিতে আমরা থাকব?
এই ভারতবর্ষ বহু জাতির একটা মহাদেশ। সেখানে জাতি হিসেবে আমাদের বেঁচে থাকার একটা যৌক্তিকতা, দাবি আছে। আমাদের ভাষা আছে, সংস্কৃতি আছে। যদি চলচ্চিত্রে আমাদের তিনশ বছরের ঐতিহ্য নাও থাকে, দুঃখ করবেন না। ত্রিশ বছরের তো আছে। তেপ্পান্ন বছরের তো আছে।
‘কিন্তু অতীতে এই শিল্প মাধ্যমকে সম্পূর্ণ ভুলপথে পরিচালনা করা হয়েছে,’ জহির রায়হান ও আলমগীর কবির লিখছেন, ‘জাতিকে ধ্বংস করার ইচ্ছায় এবং জাতীয় চরিত্র, সংস্কৃতি, রুচি প্রতিটি ক্ষেত্রে বিকৃতির জন্ম দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।’
মনে রাখবেন বইটি লেখা হয়েছে একাত্তরের মাঝামাঝি কলকাতায় বসে। কীভাবে আমরা একটা চলচ্চিত্রকে কনসিভ করব, তার তিনটা পার্ট দেখিয়েছেন।
লেখকরা বলছেন–
গুটিকয়েক পশ্চিম পাকিস্তানি ব্যবসায়ী ও তাদের পূর্ববঙ্গীয় দালালদের হাতে লাঞ্ছিত ও শোষিত চলচ্চিত্র শিল্প ও তার কর্মীরা। চলচ্চিত্র তৈরি করে একশ্রেণির লোক। চলচ্চিত্র পরিবেশন করে আরেক শ্রেণির লোক। চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে ভিন্ন একশ্রেণির লোক। মূলত চলচ্চিত্র শিল্পের তিনটি শ্রেণিবিভাগ করা যেতে পারে। প্রথম ভাগে নির্মাতা, দ্বিতীয় জন পরিবেশক এবং তৃতীয় জন প্রদর্শক। প্রথমত, চলচ্চিত্র যারা তৈরি করেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং নানা বিভাগীয় কলাকুশলী। সমগ্র শিল্পে এদের অবদানও বেশি এবং সংখ্যাও বেশি। অথচ শ্রেণি হিসেবে এরা হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও শোষিত। দ্বিতীয়ত, পরিবেশকরা হচ্ছেন এক ধরনের দালাল। ছবির নির্মাতা ও প্রদর্শকদের মাঝখানে যার অবস্থিতি। এরা অগ্রিম হিসেবে কিছু টাকা ছবির নির্মাতাকে দেন এবং তার বিনিময়ে একটা বিশেষ ধরনের সুদের ভাগ বসান ও ছবির স্বত্ব কিনে নেন। প্রদর্শকরা হলেন ছবির রাজ্যে সম্রাট।
এদের লাভ ছাড়া কোনো লোকসান নেই। তারা মোটামুটি পুঁজি খাটিয়ে একটা প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করেন এবং সেই প্রেক্ষাগৃহে যে কোনো ছবির প্রদর্শনলব্ধ আয়ের শতকরা ৫০ ভাগ তারা পান। বাকি ৫০ ভাগ তারা পরিবেশককে দেন। এই দেওয়ার ব্যাপারটাও নিয়মিত নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে ছবি মুক্তির পর দু’তিন বছর কেটে গেছে, তারপর নানান কিস্তিতে ছবির বিক্রয়লব্ধ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। এতে করে দেখা গেছে ছবির নির্মাতারা একটি নয়, দু-দুটি শ্রেণি দ্বারা শোষিত হয়েছেন …।
গত ২৩ বছর ধরে পরিবেশক ও প্রদর্শকরা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের শোষণ করে এসেছেন। শুধু তাই নয়, প্রদর্শক ও পরিবেশকরা যেহেতু মুনাফার কথাই চিন্তা করেন, সেই ছবির মান উন্নয়নের ব্যাপারে তারা একটুও মাথা ঘামান না। জনগণের রুচি উন্নত করার চেয়ে বিকৃত করার দিকে তাদের প্রচেষ্টা বেশি।
পূর্ব, পশ্চিম পাকিস্তানি আর ভারতের কলাকুশলীদের নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ সেখানে উর্দু-বাংলার একটি প্রতিযোগিতা ছিল। সে কারণেই ষাটের দশকে বাংলা কাহিনিনির্ভর চলচ্চিত্র শুরু হলো।
বাংলা সাহিত্য কী, সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা হতো না, যদি ১৯২০ দশকে ময়মনসিংহ গীতিকা আবিষ্কার না হতো। এটা যে বাংলাদেশের মানুষের সৃষ্টি, তা এখনও এলিট সাহিত্যে স্বীকৃত হয় নাই। ভাষার একটা ‘মুভিং অ্যাভারেজ’ আছে। এটা সব সময় পরিবর্তিত হয়। তাহলে চলচ্চিত্র সম্পর্কে স্থির করব কী করে? চলচ্চিত্রের ভাষা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আধারের ভাষা, কিন্তু সেটাও ভাষাই।
এই বইয়ে কয়েকটি অংশ বাদ দিয়ে ‘জাতীয়করণ কীভাবে সম্ভব’ এই অংশটুকু বলি– প্রথমত চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্র নিয়ে ভাবা যাক। বাংলাদেশে ছবি তৈরির একটাই প্রধান এবং বৃহৎ স্টুডিও রয়েছে। এর নাম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন। আমরা একে এফডিসি বলি। আবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে বলি ডিএফপি। বাংলাদেশে ইংরেজির যে চল, এটা এই বাংলা ভাষায় মুভিং টার্গেট। এগুলো এখন বাংলা হয়ে যাচ্ছে।
‘এটা একটি আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, তাতে বছরে ৪০টি ছবি অনায়াসে তৈরি করা সম্ভব। এই স্টুডিওকে জাতীয়করণ করতে সরকারের কোনো খরচ হবে না। দেশে যে সমস্ত শিল্পী ও কলাকুশলী রয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে পশ্চিম পাকিস্তানি দালালদের বাদ দিয়ে বাকি সকলকে একটা নির্দিষ্ট রোজগারের নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
এখান থেকে আমি একটা জিনিস শিখলাম। পরের বাক্যটা আমাদের শেখার মতো– ‘সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ রোজগার নির্ধারিত থাকবে।’
গত ৫৩ বছরে আমাদের যে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু সর্বনিম্ন আয় কতটা বেড়েছে, এটাই হবে আসলে মাপকাঠি। একজন অর্থনীতিবিদও আমি পাই নাই, যিনি আমার সাথে একমত। তাহলে বোঝা গেল আমি অর্থনীতিবিদ নই। মিনিমাম ওয়েজের ওপর ভিত্তি করেই জাতির প্রগতি মাপতে হবে। শতকরা ২০ জন লোক এখনও হতদরিদ্র। তাহলে আপনি স্বীকার করছেন দেশে কোনো অগ্রগতি হয়নি। একজন মানুষও দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকবে কেন? এই প্রশ্নটা আপনি করতেই পারেন নৈতিকভাবে।
‘প্রত্যেক শিল্পী ও কলাকুশলীর বছরে সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন ছবির সংখ্যা নির্ধারিত থাকবে।’
এই সবগুলো কথা আমিও মানতে বাধ্য নই। শুধু আপনাদের বলছি।
‘প্রতিবছর কয়টি ছবি নির্দিষ্টভাবে তৈরি হবে, সেই ছবিগুলোকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে শিল্পী-কলাকুশলীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।’
এগুলো ইউটোপীয় হতে পারে কিন্তু এখান থেকে আমাদের শিখতে হবে, কোন কথাটা আমরা নেব, কোনটা নেব না।
‘একটা ফিল্ম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে সেখানে নতুন শিল্পী ও কলাকুশলীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে।’
কিউবানরা যে ফিল্ম ইনস্টিটিউট করেছে, ল্যাটিন আমেরিকানরা সেখানে পড়তে আসে। তারা শুধু ইনস্টিটিউট করে নাই, সর্বোচ্চ মানের মেডিকেল কলেজ, ফার্মাসিউটিক্যাল ইনস্টিটিউশন করেছে।
‘এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবছরে নির্মিত ছবির একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা নবাগত শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। ছবির আয় ও ব্যয় সম্পূর্ণভাবে সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।’
এই নিয়ন্ত্রণ চলচ্চিত্র মন্ত্রণালয় করবে কিংবা সম্ভবত তারাই মন্ত্রী হবেন, এটাই ধরে নিচ্ছি।
‘কোন ছবি ব্যবসায়িক দিক থেকে বিশেষ সাফল্য অর্জন করলে বোনাসের ব্যবস্থা করতে হবে। উচ্চমানসম্পন্ন ছবির জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আসে পরিবেশনা সংস্থাগুলো। গত ২৫ মার্চের আগের হিসাবে দেখতে গেলে দেখা যাবে বাংলাদেশের পরিবেশনা সংস্থাগুলোর বেশির ভাগ হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তানি ও তাদের তাঁবেদারদের। এদের অনেকই ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করে চলে গেছে, আবার অনেকই পাকিস্তানি সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করেছে ও করছে। এই দুই শ্রেণির লোকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশন সংস্থাগুলো জাতীয়করণে সরকারকে কোনো আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করতে হবে না।
তৃতীয় পর্যায় হলো– প্রদর্শন অর্থাৎ সিনেমাগুলোকে জাতীয়করণ করা। আমি এটার ওপর গুরুত্ব দিতে চাচ্ছি। জাতীয় স্কুল, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে পারে বাংলাদেশ সরকারের ৫০০ সিনেমা হল জাতীয়করণ করা তেমন কঠিন নয়। প্রশাসন ক্যাডারদের দিয়ে নয়, যদি সিনেমার লোকদের দিয়ে করেন, তাহলে এটা করা সম্ভব।’
[এশীয় শিল্প ও সংস্কৃতি সভা আয়োজিত ‘জাতীয় চলচ্চিত্রের সম্ভাবনা ও সংকট’ শীর্ষক সভায় সলিমুল্লাহ খানের বক্তৃতার অনুলিপি]
খলিল বিরিয়ানী ফ্রাঞ্চাইজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু
১২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ, ৬০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বর্ণাঢ্য আয়োজন: বাংলাদেশ সোসাইটির নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের লালগালিচা সংবর্ধনা
তৃতীয় বার্ষিক বিজনেস এক্সপো-২০২৪: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নতুন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা উন্মোচনে সাফল্যের সাক্ষী
নিউইয়র্ক সিটির ভাড়াটিয়াদের ব্রোকার ফি বন্ধের বিল পাস
গানবাংলার তাপসের যত কেলেঙ্কারি
নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি
বাংলাদেশে হাসিনার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের স্থান নেই: ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে ৫ নভেম্বরের দিকে
বিজয়ী ‘সেলিম-আলী’ প্যানেলের প্রার্থীদের সার্টিফিকেট বিতরণ
Trending
-
বাংলাদেশ1 day ago
বাংলাদেশে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র, পেছনে কলকাঠি নাড়ছে আওয়ামী লীগ!
-
নিউইয়র্ক1 day ago
ট্রাম্পের ঘোষণায় আতঙ্কিত না হয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নিন: অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী
-
বাংলাদেশ1 day ago
দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন
-
নিউইয়র্ক1 day ago
১২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ, ৬০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির