গল্প
মহানগর গোধূলি
Published
2 weeks agoon
আন্তঃনগর ট্রেনের নামে আমার আরও একটা গল্প আছে; নাম চিত্রা এক্সপ্রেস। সেটা ছিল ঢাকা থেকে খুলনাগামী। এবারের ট্রেনটা যাচ্ছে চট্টগ্রাম। দুপুরের পরপর ছাড়ে; বিকাল তিনটা কিংবা সোয়া তিনটাও হতে পারে। কত বছরের কথা! আমার কি আর সেই ঠিকঠাক সময় মনে আছে?
আমার সিটটা একক। বামদিকে জানালা। সামনে ভাঁজ করা টেবিল। উল্টোদিকে আরেকটা একক সিট। ট্রলিব্যাগ ওপরে তুলে দিয়ে যখন বসেছি, অমনি মনে পড়ে ফোনটা শেষ মুহূর্তে ব্যাগে তুলেছি তো? তাড়াতাড়ি হাতব্যাগ খুলি। নাহ। সব ঠিক আছে। ফোন, চার্জার, জলের বোতল, কাজু বাদাম; সবই ঠিকঠাক। ফোন হাতে নিয়ে দেখি তিনটা খুদে বার্তা। একটা অবশ্যই মায়ের; ‘ট্রেন কি ছেড়েছে? সময় পেলে ফোন করো।’ দ্বিতীয় মেসেজটা ফোন কোম্পানির; ‘আপনার মিসড কল অ্যালার্ট সার্ভিসটি বন্ধ হয়ে যাবে আগামীকাল’। তৃতীয় মেসেজ, মানে সঠিক উপায়ে বললে, যেটা প্রথম, সেটা এসেছে আরও ঘণ্টা দুই আগে।
সবচেয়ে আগে আসা বার্তাটা খুলি; ‘তুই কি পূজায় চিটাগাং থাকবি? আমাকে জানাস।’
পাভেল; আমার স্কুলজীবনের বন্ধু। ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত একসাথে পড়েছি। এসএসসির পর আলাদা কলেজ, তারপর আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়। এক শহরেই থাকি; অথচ দেখা হয় সামান্যই। মেসেজটা পড়ে নিজে নিজেই হাসি। আমরা যখন ক্লাস এইট, তখন থেকে আমাদের বন্ধুত্বটা জমে ওঠে। সেটা যে ক্লাসরুমে তাও নয়। একই ব্যাচে ইংরেজি ব্যাকরণ পড়তাম আমরা। শিক্ষকের বাসা থেকে বের হয়ে খানিকটা পথ হাঁটতে হাঁটতে যেতাম। তারপর পথ শেষ হয়ে যেত, কিন্তু আমাদের গল্প শেষ হতো না।
মোবাইল ফোনের পর্দায় তাকিয়ে থাকতে থাকতেই টের পাই আমার ডানপাশ দিয়ে কেউ হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে যায়, আবার ফিরে আসে। আমি চোখ তুলে তাকাই। অনুমান করতে পারি, আমার চেয়ে কয়েক বছরের বড় হবে ছেলেটা। আমার সামনের সিটের ওপরে লেখা নাম্বারের সাথে হাতে থাকা টিকিটের নাম্বার মেলায়। কাঁধের বড় ব্যাকপ্যাকটা ওপরে তুলে বসে পড়ে।
আমার চোখে চোখ পড়তেই মিষ্টি ভদ্রতার হাসি হাসে তখনও পর্যন্ত নাম না জানা সেই তরুণ। আমিও হাসি। এই ফাঁকে একনজর দেখেও নেই। মাঝারি উচ্চতা; পাঁচ ফুট ছয় বা সাত ইঞ্চি হবে। আকাশি জিন্সের সাথে একটা লাল আর ধূসর মেলানো চেক শার্ট পরেছে। পায়ে গাঢ় জলপাই রঙের জুতো। ঘড়ি পরেছে কবজিতে, যেমন আমিও পরি। তামাটে ডায়ালের বাদামি বেল্টের ঘড়ি। কী বলে এ ধরনের ঘড়িকে? ভিনটেজ?
ছেলেটা একবার সময় দ্যাখে। অনেকটা নিজে নিজেই বলে, ‘এখনই ট্রেন ছাড়বে।’
জানালা দিয়ে একপশলা বাইরের দিকে তাকায়। একজন জল বিক্রেতা, একটা বোতল উঁচু করে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। কিন্তু আমাদের তো জানালা বন্ধ। সে ফিরে যায়। ট্রেন হুইসেল দেয়। আস্তে আস্তে চলতে শুরু করে। আমার হঠাৎ মনে পড়ে, অনেকক্ষণ জল খাইনি। ব্যাগ থেকে বোতল বের করে ঢকঢক করে খেয়ে নিই খানিকটা। মুখ মুছতে মুছতে বাইরে তাকাই; ট্রেন স্টেশন থেকে বের হয়ে পড়েছে। গতি ক্রমশ বাড়ছে। রেলভ্রমণের এই সময়টা ভীষণ উপভোগ করি আমি। মানুষও এভাবেই তার গন্তব্যের দিকে যায়। ধীর লয়ে চলা শুরু করে, তারপর লয় বাড়তে থাকে তার। দ্রুততম লয়ে সে পরিণতির দিকে পৌঁছায়, ঠিক যেমন তেহাই দিয়ে শেষ হয় ধ্রুপদি সংগীত।
হলের ক্যান্টিন থেকে দুপুরের খাবার খেয়েই বের হয়েছিলাম। এতক্ষণে হজম হয়ে গেছে। কিন্তু ক্ষুধার চেয়েও বড় যেটা মাথা চাড়া দিচ্ছে, তা হলো চায়ের তৃষ্ণা। এই সময়টায় এত ঘুম ঘুম পায়। এজন্যই, রুটিনে মধ্যাহ্নভোজের পর ক্লাস থাকলে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় আমার। যাক! ভাবতেই ভাবতেই চা-কফি দেবার লোকটা চলে এসেছে!
: একটা দুধ চা দেবেন, চিনি কম।
মুখোমুখি বসা তরুণ আমার কণ্ঠ শুনে জানালা থেকে দৃষ্টি ফেরায়।
: ও! চা, আমাকেও একটা দেবেন প্লিজ। শুধু লিকার।
আমাদের দুজনের হাতে চায়ের কাপ এলে সামনের ভাঁজ করা টেবিল খুলে দেবার প্রয়োজন পড়ে। এই প্রথম আমরা একে অন্যের সাথে কথা বলি।
: আমি ধরছি আপনার কাপটা। এক হাতে অসুবিধা হবে আপনার।
: থ্যাংক ইউ।
সহযাত্রী তরুণ মিষ্টি হেসে কাপটা আমার হাতে দেয়। টেবিলের লক খোলা হলে সন্তর্পণে তার কাপটা রেখে দেই সামনে। চায়ে চুমুক দিয়ে ছেলেটা তাকায় আমার দিকে।
: আচ্ছা, আপনার সাথে কি আমার আগে কখনও দেখা হয়েছে?
: আমার সাথে? উম … নাহ। আমার তো মনে পড়ছে না।
বলি ঠিকই। কিন্তু আমিও আরেকবার মনে মনে ভাবি, সত্যিই কি ছেলেটার সাথে আমার আগে কখনও দেখা হয়েছে?
: আপনার বাড়ি বুঝি চট্টগ্রাম?
: হ্যাঁ। বাড়ি, বাসা যা-ই বলেন। চট্টগ্রামই।
: সরি, এত কথা জিজ্ঞেস করছি আপনাকে। কিছু মনে করবেন না। আসলে, আপনাকে দেখে হুট করে আমার একজন বন্ধুর কথা মনে পড়ল। ওর নাম ছিল সনি। তাই…
: না না, ঠিক আছে। বুঝতে পেরেছি। আপনারও কি বাসা ওখানেই। নাকি কোনো কাজে যাচ্ছেন?
: বাসা ওখানে। একটা কাজেও যাচ্ছি। বাই দ্য ওয়ে, আমার নাম তমাল।
আমার একটা গাছের কথা মনে পড়ে। ছাত্রীহল থেকে বের হয়ে নিকটতম বাজারের দিকে যাওয়ার পথে হাতের ডানদিকে একটা অপরিণত তমাল গাছ। অনেক দিন হেঁটে যেতে যেতে আমি ওই গাছের পাশে দাঁড়িয়েছি; কোমল পাতায় হাত রেখেছি। তমালের শরীরে একটা ঘন অন্ধকারের মতো ছায়া আছে। আমি তমালের দিকে তাকাই। অপরাহ্ণের রোদ এসে পড়েছে উনার গায়ে, মুখের একপাশে। কয়েকটা লাইন খেলে গেল মাথায়–
তোমায় ফেলে মিলিয়ে যাচ্ছি অপরাহ্ণের রোদে,
তোমায় ফেলে মিলিয়ে যাচ্ছি পরিণত প্রচ্ছদে।
: ম্যাডাম, বিলটা।
: ও হ্যাঁ হ্যাঁ। নিশ্চয়ই।
: থাক না। আমি দেই? একটা চা-ই তো!
আমি তাকাই। ভীষণ মার্জিত, বুদ্ধিদীপ্ত ছেলেটাকে ‘না’ বলতে ইচ্ছা করে না। একটু হাসি কেবল। থাক, একটা চা-ই তো!
: ধন্যবাদ।
ছেলেটা হাসে।
: আশা করি কিছু মনে করেননি, মিস…
: অলভী…
: সরি?
: অলভী। আমার নাম।
: খুব আনকমন নাম আপনার!
: মায়ের এক বন্ধু আমার নাম রেখেছিলেন। প্রায় সবাইকেই আমার নাম একবারের বেশি বলতে হয়।
: কী অর্থ আপনার নামের?
: অভিধানে পাইনি। মা একটা অর্থ বলেছে বটে। সেটা বিশ্বাস করে করে অনেক বছর কাটিয়ে দিলাম।
তমাল, একদম তমাল বৃক্ষের মতোই নিবিড় চোখে তাকায়।
: অভিধান তো বিশ্বাসেরই আরেক নাম।
: সে কেমন?
: শব্দগুলোর এক-একটা অর্থ আছে। আর আমরা বিশ্বাস করি সেই অর্থটাই সঠিক। ব্যস, এইভাবে চলতে থাকে।
: আপনি কি ভাষাবিজ্ঞানের ছাত্র?
: না না! আমি লেখাপড়া এবং পেশা, দু’দিক থেকেই আর্কিটেক্ট। আপনি?
: আমি ভাষাবিজ্ঞান।
: আচ্ছা! বেশ তো।
আমার আবার পাভেলের কথা মনে পড়ে। ও তো আর্কিটেকচারেই পড়ছে; থার্ড ইয়ার।
: আপনার বন্ধু সনির কথা বলছিলেন। তিনি কি আমার মতো দেখতে?
: ‘আপনার মতো দেখতে’ বলাটা ঠিক হবে না। আসলে আপনাদের প্যাটার্নটা এক।
: সেটা কেমন?
তমাল সহসা কোনো উত্তর দিতে পারে না। আমার চোখের দিকে তাকায় দু-তিন সেকেন্ড। কপালের ওপর নেমে আসা একগোছা চুল হাত দিয়ে সরায়। আমি তাকিয়ে আছি, উত্তরের অপেক্ষা করছি।
: বললেন না কী প্যাটার্ন আমাদের?
যেন কথাটা বলতে খুব সাহস জোগাড় করতে হচ্ছে তমালকে। তারপর বলেই ফেলে।
: আপনি কি বাম রাজনীতি করেন?
এবার বুঝতে পারি। একটু হাসি আমি। নিজের পায়ের দিকে একনজর দেখি। তারপর মুখ তুলে সোজাসুজি তাকাই তমালের চোখের দিকে।
: নাহ! বাম রাজনীতি আমি করি না। কিন্তু আমি এইটেতে অবাক হচ্ছি, আপনিও কেন এই কথাটাই জিজ্ঞেস করলেন?
: ওই যে বললাম, প্যাটার্ন…
আমি একটু অসহিষ্ণু হই।
: কী প্যাটার্ন? আমার হেয়ারকাট? পোশাক? নাকি চেহারা?
: আপনি! আপনি পুরোটাই! একদম আমার বন্ধু সনির মতো। আপনার তাকানো, কথা বলা, এমনকি যেভাবে আপনি চা খেলেন…
আমি, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাম হাতের তালু দিয়ে আমার পুরো মুখ সাপটাই। তারপর টেবিলের ওপর কনুই রেখে, সম্মিলিত দুই হাতের ওপর চিবুক ঠেকিয়ে আবারও তাকাই তমালের দিকে। ছেলেটা আমাকে চেনার চেষ্টা করছে, বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেন? আমি কণ্ঠস্বর যথাসম্ভব সংযত রেখে ধীরে ধীরে বলি,
: দেখুন তমাল, কারও অবয়বের সাথে রাজনৈতিক মতাদর্শের কোনো সম্পর্ক হয় কিনা, আমি এখনও জানি না। তবে আমি সত্যিই বাম, ডান কোনো রাজনীতিই করি না।
: আচ্ছা, বাদ দেই এই তর্ক। সত্যি কথা বলি? আপনি রাজনীতি করলেও কোনো ক্ষতি নাই। শুধু আমি চাই, আপনার রেজাল্ট যেন ঠিক থাকে। আমার বন্ধু সনি; ভীষণ মেধাবী ছিল জানেন?
: আর?
: আর… এইটুকুই যে, কখনও যেন আপনি বিপদে না পড়েন। কারণ যথেষ্ট বিপদে পড়ার মতো পর্যাপ্ত সরলতা আপনার ভেতর আছে। দেখলে বোঝা যায়…
আমি আর কোনো কথা বলি না। একটু হেসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই। বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত পার হচ্ছি আমরা। সবুজ ধান। এখন কি শরৎ? দূরে কাশফুল দেখা যাচ্ছে। একজন হকারকে ডেকে পত্রিকা কেনে তমাল। আমি চোখ বন্ধ করে গা এলিয়ে দিয়ে বসি। ঘুম নয়। তমালের বলা কথাগুলোই থেকে থেকে ভাবছি। এই হঠাৎ দেখা তরুণের ঔৎসুক্য আমার মধ্যে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আনেনি। বরং যতবার ওকে দেখছি, আমার মনে হচ্ছে, এমন একটা ছেলে বন্ধু হলে বেশ হতো। শিক্ষিত, সুন্দর; আর প্রতিটি আচরণে এত পরিচ্ছন্ন! শব্দচয়নেও কী পরিপাটি! কিন্তু রেলের কামরায় দেখা হলেই বুঝি বন্ধুত্ব হয়? চিনি না, জানি না!
আমার একটু ঘুম এসে গিয়েছিল। শোরগোলে আচ্ছন্নতা কেটে যায়। তমাল তার আসনে নেই। ট্রেন থেমে আছে। কিন্তু এটা তো স্টেশন নয়! ফোন বাজছে। অনেকক্ষণ ধরেই বাজছিল নাকি? মা ফোন করেছে। জানিয়ে দিই, ঘণ্টা দুয়েক হলো ট্রেন ছেড়েছে। যেন দুশ্চিন্তা না করে। আমি ফোনে কথা বলতে বলতেই তমাল ফিরে এসেছে ওর সিটে। আমি ভদ্রতার তোয়াক্কা না করে তাকিয়ে রইলাম। চোখেমুখে জল দিয়ে এসেছে তমাল। চোখের পাতা, ভ্রু, কপালের ওপরের চুল এখনও ভেজা। চিবুকের কাছে দু-এক ফোঁটা জল লেগে আছে। শেষ বিকেলের আলো পড়ে মনে হচ্ছে বাদামি পাতার ওপর আলো ঝলমলে শিশির।
: কী! ঘুম হলো?
আমি একটু লজ্জা পাই। তমাল মিষ্টি হাসে। আমি কাজু বাদামের বাক্সটা বের করে একটা মুখে দেই। তমালের দিকে এগিয়ে দিলে সেও অসংকোচে তুলে নেয় কয়েকটা।
: তখন অত কথা জিজ্ঞেস করলাম। রাগ করেননি তো?
: নাহ! এত সহজে রাগ করা যায় না। আবার এত সহজে…
: এত সহজে?
: না, কিছু না।
ট্রেন আবার চলতে শুরু করেছে। আমি বাদাম খাওয়ায় মন দেই। তমাল কিছু লিখছে ফোনে। ওর চেহারায় একটা আনন্দিত ভাব।
: আচ্ছা তমাল, আপনার সাথে আবার কখনও যোগাযোগ করতে চাইলে…
তমাল ওর ব্যাগ থেকে একটা বিজনেস কার্ড দেয়।
: এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আপনার সাথে আলাপ থাকবে না তা কখনও হয়?
কোনো ফোন নাম্বার নাই কার্ডে। একটা ইমেইল ঠিকানা লেখা আছে। আমি ধন্যবাদ জানিয়ে হাসি।
: ঢাকায় ফিরবেন কবে? কী যেন কাজে যাচ্ছিলেন বললেন?
: হ্যাঁ। কাজই তো। খুব জরুরি কাজ। কাল সন্ধ্যায় আমার গায়ে হলুদ। পরশু বিয়ে।
ট্রেন এখন খুব জোরে ছুটছে। কিছুটা সময় থেমে থাকা যেন একদম সুদে-আসলে পুষিয়ে নেবে। তমাল বলে চলেছে, ‘আসলে হয়েছে কী জানেন? বাবার শরীর ভালো নেই। তাই হুট করেই; আমিও আর না করতে পারলাম না। নয়তো এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করার কোনো ইচ্ছা ছিল না আমার…’
আলো কমে এসেছে। একটা ব্রিজ পার হচ্ছে আমাদের ট্রেন। ভীষণ শব্দ। আমি আর তমালের কোনো কথা শুনতে পাচ্ছি না। বুঝতে পেরে তমালও চুপ হয়ে যায়। আমি ব্যাগ থেকে ছোট্ট ডায়েরিটা বের করি, আর একটা কলম। চলন্ত ট্রেনে লিখতে অসুবিধা হয় অবশ্য। তবু এই গোধূলি শেষ হওয়ার আগেই আমি খসখস লিখে ফেলি। কে জানে, পরে আবার ভুলে যাই যদি!
তোমায় ফেলে মিলিয়ে যাচ্ছি
অপরাহ্ণের রোদে,
তোমায় ফেলে মিলিয়ে যাচ্ছি
পরিণত প্রচ্ছদে।
মৃত্যুমুখর জীবন, আছে
জীবন ভরা ছাই;
তোমার করুণ কণ্ঠস্বরে
ধূপের গন্ধ পাই।
কোথায় ফেলে যাচ্ছি তোমার
আলোয় ভরা মুখ,
সারিয়ে দিতে পারতে আমার
সমস্ত অসুখ!