Connect with us

খেলার খবর

ইউরোতে জর্জিয়ার বাজিমাত

Published

on

ইউরোতে জর্জিয়ার বাজিমাত

প্রথমবারের মতো ইউরো খেলতে এসেই ইতিহাস গড়েছে জর্জিয়া। হট ফেভারিট পর্তুগালকে হারিয়ে তারা পা রেখেছে শেষ ষোলোতে। জয়ের নায়ক খিভিচা খাভারাতস্কেলিয়া মূল কৃতিত্বটা দিলেন পর্তুগাল অধিনায়ক ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকেই, যাকে তিনি ‘আইডল’ মানেন। তিনি বলেছেন, ম্যাচ শুরুর আগে জর্জিয়াকে নাকি বড় কিছু করার সাহসটা দিয়েছিলেন খোদ রোনালদোই।
রোনালদোর প্রতি খাভারাতস্কেলিয়ার আবেগ অবশ্য নতুন কিছু না। পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকাকে দেখেই তো হয়েছেন বড়। রোনালদোর মতো তিনিও খেলেন ৭ নম্বর জার্সিতে। ম্যাচ শুরুর আগে এত বড় তারকার নিজেদের ড্রেসিংরুমে উপস্থিতি তার ও পুরো জর্জিয়া দলের আত্মবিশ্বাসে যোগ করেছে বাড়তি মাত্রা।
ম্যাচের পর খাভারাতস্কেলিয়া বলছেন সে কথাই। “যখন ম্যাচ শুরুর আগে রোনালদো আপনার সাথে কথা বলতে আসবেন, তখন সেটা দারুণ কিছুই। এতে আমাদের পুরো দলের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ভালো কিছু করতে পারবো, সেই বিশ্বাসটা জন্মেছে।”
রোনালদো মাপের একজন খেলোয়াড়ের এমন আন্তরিকতা ছুয়ে গেছে খাভারাতস্কেলিয়াকে। “ম্যাচ শুরুর আগে রোনালদোর সাথে দেখা হয়েছে। তিনি আমার সফলতা কামনা করেছেন। আমি কখনও কল্পনা করিনি তিনি নিজে এসে আমার সাথে এভাবে কথা বলবেন।”
প্রতিপক্ষকে বিশ্বাস যোগালেও ম্যাচে রোনালদো নিজে খুব একটা আলো ছড়াতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে বদলি হিসেবে তুলে নেন কোচ রবের্তো মার্তিনেস। রোনালদো জ্বলে উঠতে না পারলেও খাভারাতস্কেলিয়া ছিলেন দারুণ। পায়ের জাদুতে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। পেয়েছেন গোলের দেখাও।
সেরা সময় পার করে আসলেও খাভারাতস্কেলিয়া এখনও রোনালদোকে সেরাদের কাতারেই রাখছেন। “তিনি (রোনালদো) দারুণ ফুটবলার হওয়ার পাশাপাশি একজন দারুণ মানুষও। এই কারণেই তিনি মাঠে ও মাঠের বাইরেও দুর্দান্ত। তার প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা রয়েছে। তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার।”
জর্জিয়ার কাছে পর্তুগালের হারই প্রাপ্য ছিল: নামে-ভারে বা শক্তিমত্তায় অনেক অনেক এগিয়ে ছিল পর্তুগাল। সব বিভাগেই জর্জিয়ার সাথে তাদের ছিল বিশাল ফারাক। তবে মাঠের ফুটবল জর্জিয়া উপহার নিজেদের সেরাটাই। রক্ষণ থেকে আক্রমণ, সবখানেই তারা ছিল দারুণ। তাতে মিলেছে জয়, আর পৌঁছে গেছে শেষ ষোলোতে। আসরে প্রথম হারের স্বাদ পাওয়ার হতাশা থাকলেও দলটির কোচ রবের্তো মার্তিনেস বলেছেন, যোগ্য দল হিসেবেই ম্যাচটা জিতেছে প্রতিপক্ষ দল।
ম্যাচে ৭২ শতাংশ বলই ছিল পর্তুগালের দখলে। ২২ শট নিয়েও তারা করতে পারেনি কোনো গোল। অন্যদিকে জর্জিয়া ৭ শট নিলেও দুটি জড়িয়েছে জালে। পর্তুগাল দলে এদিন বেশ কিছু পরিবর্তনা এনেছিলেন মার্তিনেস। অধিনায়ক ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও জোয়াও পলিনিয়া বাদে তুরস্ক ম্যাচ থেকে একাদশে আনেন ৯ পরিবর্তনা। ভালোভাবেই যার প্রভাব পড়ে খেলায়। হেরে যায় ২-০ গোলে।
তবে এটাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড়াতে করতে চান না মার্তিনেস। কৃতিত্ব দিতে চান জর্জিয়াকে। “হার মেনে নিতে হবে। আমরা শুরুটা করেছি খুবই ধীরে। তাড়াতাড়ি গোল হজম করেছি যা জর্জিয়ার দরকার ছিল। পোস্টের সামনে পাস দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা সাবলীল ছিলাম না। ফিনিশিং মোটেও ভালো হয়নি। তাদের গোলকিপারও দারুণ করেছে। আমরা চেষ্টা করেছি গোল করতে। তবে তারা আমাদর সেই সুযোগ দেয়নি। যোগ্য দল হিসেবেই তারা জিতেছে।”
এই জয়ে ইতিহাস গড়েছে জর্জিয়া। প্রথমবার খেলতে এসেই জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলোতে।
পর্তুগাল কোচ এই হারকে দেখছেন নিজেদের মানসিকতা বদলের টনিক হিসেবে। “জর্জিয়াকে আমরা হালকাভাবে নেইনি। জর্জিয়া তাদের ইতিহাসের সেরা ম্যাচটাই খেলেছে। আমরা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলছিলাম, তাও গ্রুপের সেরা হয়ে পরের পর্ব নিশ্চিত হয়ে গেছে। তাই এই ম্যাচে তীব্রতা ধরে রাখা কঠিনই ছিল। এই ম্যাচ হারায় মানসিকভাবে আমাদের দলকে আরও ভালোভাবে তৈরি হতে সাহায্য করবে।”

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending