Connect with us

খেলার খবর

অপেক্ষার প্রহর গুনছে বাংলাদেশী সমর্থকেরা

Published

on

অপেক্ষার প্রহর গুনছে বাংলাদেশী সমর্থকেরা

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা

বেসবল, বাস্কেটবল এবং রাগবি খেলার দেশ যুক্তরাষ্ট্র।আমরা যারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকি তারা মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখার উন্মাদনাটা মিস করি দারুন ভাবে।টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এ ঘটনা আমাদের জন্য দারুন এক আগ্রহের, দারুন এক উন্মাদনার।
ক্রিকেট খুব একটা পরিচিত নয় যুক্তরাষ্ট্রে, যদিও ইদানিং সকারের পাশাপাশি ক্রিকেট খেলাটাও স্কুল বা কলেজ পর্যায়ে শুরু করেছে তারা, তারপরও ক্রিকেট কে এদেশে জনপ্রিয় করতে অনেকটা পথ হাটতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের।মূলত সাউথ এশিয়ান বা এক কথায় দেশী পাবলিক যাদের বলা হয় তারাই ধীরে ধীরে ক্রিকেট কে পরিচিত করাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল এবং দক্ষিন আফ্রিকা খেলাটি হবে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।খেলাটি ঘিরে দারুন এক ধরনের উন্মাদনা এবং মাঠে বসে বাংলাদেশ দলকে সমস্বরে সাপোর্ট করবার প্রস্তুতি নিয়েছে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশীরা।প্রায় অনেকেই তিনমাস আগেই টিকেট কিনে রেখেছেন, কোনো ভাবেই যেনো খেলা দেখা মিস না হয়ে যায় সেই আশংকায়।নিউইয়র্ক এর বিভিন্ন যায়গায় বাংলাদেশ দলের জার্সী বিক্রি হচ্ছে হু হু করে।নিউইয়র্ক এর আশেপাশের স্টেট থেকে অনেকেই আগের দিনই ড্রাইভ করে চলে আসছেন নিউইয়র্কে।এছাড়াও বিভিন্ন স্টেট থেকেও আসছেন প্রচুর বাংলাদেশী।

বিশ্বকাপ শুরুর আগের সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র টিমের কাছে সিরিজ হার এবং ইন্ডিয়া টিমের সাথে প্রস্তুতি ম্যাচে শোচনীয় হারে যদিও অনেক বাংলাদেশী সমর্থকদের মন খারাপ হয়েছিল, হতাশা বিরাজ করছিলো, তারপরও এখন যখন বিশ্বকাপের মুল খেলাগুলোর তারিখ ঘনিয়ে আসছে, তখন আবারো মন খারাপ কে আড়ি দিয়ে আবারো সবাই নতুন উন্মাদনায় মাঠে বসে দলকে সাপোর্ট করবার আগ্রহ নিয়ে প্রহর গুনছেন।

সেদিন এক আড্ডায় এক বন্ধু বেশ অভিযোগের সুরেই বলছিলেন, আমরা দুজন হাজবেন্ড ওয়াইফ দুটো টিকেট কিনেছি, প্রতিটির মূল্য ২৩০ ডলার করে, মোট ৪৬০ ডলার দিয়ে, যা বাংলাদেশী টাকার প্রায় ৫০ হাজার টাকা, দুটো জার্সী কিনেছি ৯০ ডালার দিয়ে। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১০ হাজার টাকা, স্টেডিয়ামে পার্কিং স্পেস বুক করেছি ১০৫ ডলার দিয়ে, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৩ হাজার টাকা।খেলাটি উইকডেতে হওয়ায় দুজন কাজ থেকে ছুটি নিয়েছি, সেখানে গচ্চা যাবে ৫০০ ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা।দুজন মাঠে গিয়ে দলকে সাপোর্ট করবো বলে আমরা দুজন বাংলাদেশী টাকায় খরচ করছি প্রায় এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার টাকা, সেখানে যখন দেখি বাংলাদেশী টিমের উদাসীনতা তখন মন খারাপই লাগে।নিউইয়র্কে ইন্ডিয়ার সাথে প্রস্তুতি ম্যাচের আগের দিন সন্ধ্যায় তারা সাকিবের বাসায় দাওয়াতে সময় কাটায়, দেশী রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে হয়তো বাথরুমেও কাটাতে হয়েছে খানিকটা সময়।ডালাসে গিয়ে প্রাকটিস বাদ দিয়ে তারা ইসলামিক অনুষ্ঠানে যায় ফান্ড রেইজিং এর অতিথি হয়ে।শুনছি সাকিব নাকি নিউইয়র্কে সাউথ আফ্রিকার সাথে খেলার আগের দিন সন্ধ্যায় তার ক্যানসার হসপিটালের জন্য ফান্ড রেইজিং ডিনার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকবেন।এই যদি হয় বাংলাদেশ টিমের সিরিয়াসনেস, তাহলে কাদেরকে সাপোর্ট করতে মাঠে যাবো, আর পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে উপার্জন করা এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার টাকা কেনোই বা খরচ করছি, এই টাকাতো দেশের অন্য কাজেও পাঠাতে পারতাম।সেদিন ঐ বন্ধুর ক্ষোভের সাথে আমাকেও আমি একই যায়গায় ভেবেছি কিছুক্ষন, নিজেকেই দেখেছি ওর যায়গায়।

যাইহোক, আমাদের সকলের বিশ্বাস ক্রিকেটাররা ডেফিনেটলি সিরিয়াস হবেন, কারন তাদের দিকেই চেয়ে আছি আমরা, চেয়ে বাংলাদেশ।তাদের জয় যে আমাদের সকলের জয়, বাংলাদেশের জয়।আমরা সবাই সেদিন মাঠে যাবো, সমস্বরে চিৎকার করে দলকে সাপোর্ট করবো।আমাদের সকলের কন্ঠস্বরে প্রকম্পিত হবে নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, দলকে উৎসাহ দিতে, সাহস দিতে আমরা সবাই সেদিন মাঠে থাকবো দলের পাশেই, থাকবো বাংলাদেশের পাশে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending