নিউইয়র্ক
ঘোস্ট লাইসেন্স প্লেট : বছরে ২০ কোটি ডলার ক্ষতি নিউইয়র্ক সিটির!
Published
4 weeks agoon
সব সময় হাল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে ব্রিটিশ গোয়েন্দা জেমস বন্ড। এবার এই গোয়েন্দার কারনে-ই নাকি নিউইয়র্ক সিটি বছরে ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে। কিন্তু কীভাবে?
সম্প্রতি এক প্রতিবেদন বলছে, আধ্যাতিক বা ভূত স্টাইলে গাড়িতে নেমপ্লেটের কারণে নিউ ইয়র্ক সিটি প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ‘জেমস বন্ড-লেভেল’ গ্যাজেট দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ শহরে বসবাসরত যুব সমাজ গাড়িতে প্রতিনিয়ত এমন নেমপ্লেট ব্যবহার করছে। আর এর ফলে এই বেপরোয়া গাড়িগুলো প্রতি মাসে লাখ খানেক বার টোল পার হয়ে এবং এনওয়াই পিডিরর স্পিড ও রেড-লাইট ক্যামেরার পাশ দিয়ে চলে যায়। ম্যানহাটন বোরো প্রেসিডেন্ট মার্ক লেভিন, যাঁর অফিস এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে তিনি জানালেন, সহজে নাম পড়া যায় না এমন নেমপ্লেট ব্যবহার করে জরিমানা ও অন্যান্য শাস্তি এড়াতে অপরাধীরা এমন কাজ করছেন। তার মতে, মানুষ জানে তাদের প্লেট পড়া যায় না কিংবা সহজে নির্ণয় করা যায় না , তখন এটি গাড়ির মালিকদের আরোও বেশি বেপরোয়া করে তুলছে। তিনি বলছেন, ঘোস্ট-প্লেটের সমস্যার মধ্যে আছে সম্পূর্ণ প্লেট ছাড়া গাড়ি চালানো অথবা স্ক্র্যাচ করা, টিন্টেড বা রিফ্লেক্টিভ কভারে ঢাকা অথবা সম্পূর্ণভাবে ভুয়া প্লেট ব্যবহার করা।
লেভিনের অফিসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রতিমাসে শহরের ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রান্সপোর্টেশন, এমটিএ এবং পোর্ট অথরিটির ক্যামেরার সামনে দিয়ে গাড়ি চালানো ৫ শতাংশ এর বেশি গাড়ির প্লেট এখন ধরা পড়ে না । স্কুল জোন এবং রেড লাইটে বেপরোয়া গাড়ি চালানো বিপদের পাশাপাশি, ঘোস্ট প্লেটগুলি অবিচ্ছিন্ন টিকিট এবং টোলের কারণে ব্যয়বহুল বলছেন বোরো প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, ঘোস্ট প্লেটের বিস্তার নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ জানিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে। এনএয়াইপিডি এবং এমটিএর যৌথ অভিযানে গত মাসে ২০০ জন চালক আটক হয়েছেন, যার মধ্যে একটি লোডেড পিস্তলসহ একজন পেশাদার অপরাধীও ছিলেন, যিনি ২০০৫ সালের হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন।
লেভিন বলছেন, শহরের স্পিড, রেড-লাইট এবং টোল ক্যামেরাগুলির বিস্তার ঐতিহাসিকভাবে এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে প্রভাবিত করেছে যা অসৎ চালকদের প্লেট ডিফেস, ভুয়া করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। “এর আগে ভুয়া প্লেট দেখা খুব বিরল ছিল,” তিনি বলেন। তিনি এও বলছেন “আমরা জেমস বন্ড স্তরের প্রযুক্তি দেখছি যেখানে একটি বাটন চাপলেই প্লেটের উপর কভার নেমে আসে,
এমন একটি প্লেট-কভারিং গ্যাজেট সত্যিই শুক্রবার ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে বিক্রি হচ্ছিল, যেখানে একটি নিউ জার্সি বিক্রেতা এটিকে “ভ্যানিশ লাইজেন্স প্লেট” হিসেবে বিক্রি করছিল। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একটি কী ফব চাপলে, একটি কভার গাড়ির প্লেটের উপর নেমে আসে এবং তার অক্ষর ও সংখ্যা সম্পূর্ণরূপে ঢাকা পড়ে।
নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের ঠকানোর জন্য প্লেট কভার ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে “টোল চিট প্লেট কভার” নামে বিক্রি হচ্ছে, প্রতি পিসে ৬০ পর্যন্ত ডলার পর্যন্ত যার দাম। অন্যান্য ঠকানোর বিকল্প আরও কম প্রযুক্তি-ভিত্তিক, যেমন কিয়া সরেন্টোতে দেখা একটি প্লেট যা বাস লেনে পার্ক করা ছিল এবং অক্ষর ও সংখ্যা প্রায় সম্পূর্ণভাবে স্ক্র্যাচ করা ছিল।
লেভিন, যিনি শহরের কম্পট্রোলার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছেন, প্রস্তাব করেছেন যে রাজ্য নিবন্ধন স্টিকারগুলিতে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) ট্যাগ লাগানো হোক। তিনি বলেছেন, এই ভুয়া প্লেট এবং ডিভাইসগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গত বছর বহু সিটি কাউন্সিল সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সচিব পিট বুটিগিয়েগকে প্রলোভনমূলক কাগজের প্লেট বিক্রির বিরুদ্ধে সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা অন্যান্য রাজ্যে বিক্রি হচ্ছে এবং শহরে ক্রমবর্ধমানভাবে দেখা যাচ্ছে।