Connect with us

নিউইয়র্ক

বাংলাদেশের আন্দোলনে রক্তপাত, উত্তাল নিউইয়র্ক

Published

on

বাংলাদেশের আন্দোলনে রক্তপাত, উত্তাল নিউইয়র্ক

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে যোগ দিলেন ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা

বাংলাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রবাসীদের বিক্ষোভে উত্তাল ছিল পুরো নিউইয়র্ক। ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এখানে পড়াশোনারত শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশি কমিউনিটি । একই দাবিতে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ও ২১ এপ্রিল রোববার অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ। কয়েকশ প্রবাসী বাংলাদেশি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আয়োজনে এসব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান এবং নিহতের ঘটনায় বিচার দাবি করা হয়। বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন তারা। এসময় কোটার যৌক্তিক দাবিতে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্থানে পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে ২১ এপ্রিল রোববার দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে টাইমস স্কয়ারে। তবে এদিন চার খণ্ডে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়ে তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। এখানে বিক্ষোভকারীদের অনেকে সরকারের পদত্যাগও দাবি করেন। বাংলাদেশে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে প্রবাসী নাগরিক সমাজ ইউএসএ’র মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত ২০ জুলাই শনিবার ব্রঙ্কসের স্টারলিং-বাংলাবাজার- ইউনিয়নপোর্ট রোডে এই কর্মসূচিতে স্থানীয় প্রবাসীরা অংশ নেন । সমাবেশ থেকে বক্তারা বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা কোটা প্রথার তীব্র সমালোচনা করে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ এবং ন্যায় বিচারের দাবি জানান। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। পরে গোলাম ফারুক শাহীনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি আমেরিকান সিটিজেন মুভমেন্ট ফোরাম নিউইয়র্ক, ইউএ- সএ’র পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। ইয়র্ক কলেজ বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে জ্যামাইকায় বিক্ষোভ সমাবেশে স্বপন, সাইদুর রহমান সাঈদ, মোহাম্মদ বদিউল আলম, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান হোসাইন, মো. শাহীন চৌধুরী, আলমগীর হোসেন মৃধা, জাফর তালুকদার, মো. লিয়াকত আলী, জাহাঙ্গীর এম আলম, বাচ্চু মিয়া, আব্দুর রহিম, এ আর মাহবুব, সোয়েব আহমেদ, দিলরুবা আক্তার মায়া, মমতাজ উদ্দিন, আক্তার হোসেন নান্নু, আরিফুর রহমান কাইজার, বেগ হোসাইন ইসলাম মিঠু, জিল্লুর রহমান খান, তপদী রায় বরুণ, আব্দুল আহাদ হেলাল, শেখ মো. ইসাহক আলী, রুবেল হোসেন, মুরাদ হোসেন, মঈনুল হোসেন, আ. মালেক রোকন, রুহুল আমিন নাসির, নাসির উদ্দিন, রেজবুল কবির, জামাল হোসেন, হাজী সাব্বির রহমান, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, দেওয়ান কাউসার, হুমায়ুন কবির, এম এ কাইয়ুম, তাজুল ইসলাম (চেয়ারম্যান), বীর মুক্তিযোদ্ধা অহেদ আলী মন্ডল, মুক্তাদির হোসেন, আশরাফ হোসেন, এম এ কালাম, রাহিমুল ইসলাম প্রিন্স, বাইতুল্লাহ শাহীন প্রমুখ। এ কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ এবং ন্যায় বিচারের দাবিতে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশি আমেরিকান সিটিজেন মুভমেন্ট ফোরাম নিউইয়র্ক। গত ২২ জুলাই সোমবার অনুষ্ঠিত সমাবেশ শেষে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। সমাবেশে আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া এবং এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারের ফ্যাসিবাদী নীতির তীব্র সমালোচনা করে সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়। আহবাব চৌধুরী খোকনের সভাপতিত্বে এবং আনোয়ার জাহিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গোলাম ফারুক শাহীন, অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, আমিনুল ইসলাম এদিকে , সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার অন্তত ২৪টি ইউনিভার্সিটিতে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস টেকের শিক্ষার্থী ও গবেষকরা বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটকে “অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশী স্টুডেন্টস এন্ড স্কলার্স (এবিএসএস)” এর ব্যানারে এই মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করা হয়। এসময় সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কার ও চলমান শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। একইভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। আটলানটিস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার শিক্ষার্থীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেছে এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনোভাবেই হামলা মেনে নেওয়া যায় না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই হামলার দায় স্বীকার করে নিতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপির শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলকে যৌক্তিক দাবি করে শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন সমাধান করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে একটি গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে ইউনিভার্সিটি অব মিজৌরি কলোম্বিয়ার শিক্ষার্থী হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে। একই দাবি করেছেন ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটন ও অ্যারিজোয়ানা স্টেইট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ইউটা স্টেইট ইউনিভার্সিটি, কেনেসাও স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এলপাসো, নটরডেম ইউনিভার্সিটি, বল স্টেইট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া, আইওয়া স্টেইট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড কলেজপার্ক, কলোরাডো স্টেইট ইউনিভার্সিটি, মনটানা স্টেইট ইউনিভার্সিটি, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটি, মিজৌরি স্টেইট ইউনিভার্সিটি, মিজৌরি সাইন্স এন্ড টেকনলজি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লুকজিয়ানা এট লাফায়েত, মিশিয়ান স্টেইট ইউনিভার্সিটি, ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending