Connect with us

নিউইয়র্ক

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ প্যারেডঃ আগামী বছর ম্যানহাটনে

Published

on

ব্যাপক আয়োজনে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ডে প্যারেড। ২৬ মে রোববার বাংলাদেশিদের কোলাহলের কেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসে এ প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ও আমেরিকার পতাকা হাতে নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল বাংলাদেশ প্যারেড। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এ প্যারেডের উদ্বোধন করেছেন। এবারের প্যারেডের মধ্য দিয়ে নতুন এক অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। নিউইয়র্ক সহ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের অবস্থান জানান দিতে আগামী বছরেই নিউইয়র্ক সিটির প্রাণকেন্দ্র ম্যানহাটনে বাংলাদেশ প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে বাংলাদেশিরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে সিটির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে মেয়র আশ্বাস দিয়েছেন। আয়োজকদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে।

সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস রোববার জ্যাকসন হাইটসের ৬৯ স্ট্রিট ও ৩৭ অ্যাভিনিউ সংলগ্ন পার্কে মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে প্যারেডের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। পরে তাকে নিয়েই প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৩৭ অ্যাভিনিউ ধরে ৬৯ স্ট্রিট থেকে ৮১ স্ট্রিট পর্যন্ত প্রায় পৌনে ১ মাইলব্যাপী প্যারেডে অংশ নেন। এ সময় রাস্তার দুপাশে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশের পতাকা হাতে স্লোগান দিতে থাকেন। বাসাবাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বাবা মা’র হাত ধরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশের পতাকা হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল।
ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইউএসএর উদ্যোগে এই প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। প্যারেডকে সফল করতে গঠিত কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার সম্পাদক ও গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ। অন্যান্য দায়িত্বে ছিলেন গিয়াস আহমেদ-প্রধান উপদেষ্টা,অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, আব্দুর রব, শাহ জে চৌধুরী-উপদেষ্টা,ফাহাদ সোলায়মান-প্রধান সমন্বয়কারী ও তরিকুল ইসলাম বাদল সদস্য সচিব।

মেয়র এরিক এডামস উদ্‌বোধনী বক্তব্যে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ ঐতিহাসিক প্যারেডে থাকতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। গত ৩টি বছর সকল কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করেছি আমিও আপনাদেরও কমিউনিটির একটি অংশ। এই কমিউনিটির অধিকাংশ কর্মসূচিতে আমি উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি। মেয়রের অফিস বাংলাদেশিদের জন্য উন্মুক্ত। মেয়র ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শাহ নেওয়াজ, গিয়াস আহমেদ, অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, নুরুল আজিম,শাহ শহিদুল হক, কাজী আজম, ফাহাদ সোলায়মান ও তরিকুল ইসলাম বাদল। মেয়র যখন বক্তৃতা করছিলেন মঞ্চের অদূরে বাংলাদেশি তরুণ উইনি রোজারিও’র হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে অনেকে ব্যানার হাতে স্লোগান দিচ্ছিলেন। উল্লেখ্য ২ মাস আগে বাংলাদেশি রোজারিও পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

প্যারেডে নিউইয়র্ক পুলিশ বাহিনীর একটি চৌকস অশ্বারোহী বাহিনী অংশ নেয়। বাংলাদেশি বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণও ছিল উল্লেখযোগ্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বিন্দু কনা ও শাহ মাহবুব। প্যারেড অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সিটি অফিসে কর্মরত প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।

প্রথমবারের মতো ব্যাপক আয়োজনের বাংলাদেশ প্যারেড অনুষ্ঠিত হলেও কোন গ্র্যান্ড মার্শাল ছিলেন না। এক পর্যায়ে জানানো হয়েছিল, শাহ নেওয়াজ গ্র্যান্ড মার্শাল হিসেবে থাকবেন। এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কোন গ্র্যান্ড মার্শাল ছাড়াই প্যারেড সম্পন্ন হয়েছে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ লোকজন, বিভিন্ন সংগঠন এ প্যারেডে অংশ নিয়েছে। প্যারেড শুরুর সময়ে লোক সমাগম প্রত্যাশার চেয়ে কম ছিল। আমাদের স্বদেশি আনুষ্ঠানে জনসমাজ বিকেলের দিকেই বেশি যোগদান করে থাকেন। ফলে প্যারেডের শেষ দিকে, এমনকি প্যারেড শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সিটির বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে প্যারেডে যোগ দেয়ার জন্য জ্যাকসন হাইটসে আসতে দেখা গেছে।

আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম গিয়াস আহমেদ বলেছেন, সকলের সহযোগিতায় আগামী বছর ব্যাপকভাবে ম্যানহাটনে বাংলাদেশ প্যারেড অনুষ্ঠানের ব্যাপারে উৎসাহ শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সিটির পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন, সর্বক্ষেত্রেই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে বাংলাদেশিদের ঐক্য ও সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে হবে।

Advertisement

Trending