কমিউনিটি সংবাদ
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলায় উপচে পড়া ভিড়
Published
5 months agoon
রেকর্ড সংখ্যক বই বিক্রি
চার দিনব্যাপী এই মেলায় বই বিক্রির সঙ্গে কবিতা পাঠ, সেমিনার, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বৈচিত্র্যময় সব আয়োজন ছিল। সাপ্তাহিক ছুটি তো ছিলই, এর পরে আবার একদিন বাড়তি ছুটি মিলেছিলো সোমবার । আর সে জন্যই বুঝি নিউইয়র্কে বাংলা বই মেলার আয়োজন পরিণত হয়েছিল বাঙালির মিলন উতসবে। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলায় দুই লাখ ডলারের বাংলা বই বিক্রি হয়েছে। জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে আয়োজিত এই বইমেলায় ৪১টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে এবার।
গত শুক্রবার বইমেলা উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘শেষ হলো বাঙালি অভিবাসীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলা। মেলা উদ্বোধনের পর প্রতিদিন এসেছি এখানে। যতদূর বাংলা ভাষা ততদূর বাংলাদেশ- এ কথাটির সত্যতা পুনর্বার আমরা দেখতে পাচ্ছি এই বইমেলায়। এ আয়োজন বিশ্ব বাঙালি এক মিলনস্থল হয়ে উঠেছে ।
সোমবার ছিল মেলার শেষদিন। চার দিনব্যাপী এই মেলায় বই বিক্রির সঙ্গে কবিতা পাঠ, সেমিনার, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বৈচিত্র্যময় সব আয়োজন ছিল।
এবারের মেলায় নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল মুক্তধারা/জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার। এর আর্থিক মূল্যমান ৩ হাজার ডলার। এবার এই পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাভাষার অন্যতম প্রধান লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। পুরস্কার হাতে নিয়ে তিনি জানান, ‘নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলা উদ্বোধন করতে ২০০৪ সালে একবার এসেছিলাম। সেবার যুক্তরাষ্ট্রের চারটি শহরে বইমেলা হয়েছিল। আমিও গিয়েছিলাম নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, লস এঞ্জেলস ও ডালাসে। আমি দেখেছি বাঙ্গালীদের মধ্যে এক ঐক্যের সুর গ্রথিত করেছে এই বইমেলা। সেই বইমেলা আমাকে পুরস্কার দিয়েছে। আমি অনেক সম্মানিত বোধ করছি, আনন্দ লাগছে খুব।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত সাহা বলেন, ‘প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে আগত প্রকাশকদেরকে বিনামূল্যে দেওয়া হয় বইমেলা স্টল। অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের মধ্য থেকে একটি সংস্থাকে দেওয়া হয় চিত্তরঞ্জন সাহা সেরা প্রকাশক পুরস্কার। এ বছর এক হাজার ডলার মূল্যমানের এ পুরস্কার পেয়েছেন সময় প্রকাশনীর কর্ণধার ও সম্পাদক ফরিদ আহমেদ। প্রকাশকরা অত্যন্ত খুশি। চার দিনের বইমেলার প্রথম দিন ছিল উদ্বোধন। তারপরে তিনদিনে ৪১টি প্রকাশনা সংস্থা বিক্রি করেছে ২ লাখ ডলারের বাংলা বই।’
৩৩তম নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার আহ্বায়ক হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশ, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, কলকাতা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে মেলায় এসেছেন সাহিত্যিক, প্রকাশক এবং দর্শনার্থীরা। বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, একক সঙ্গীত অনুষ্ঠান দর্শকদের আনন্দিত করেছে। আমার কাছে এবারের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল নতুন প্রজন্মের ব্যাপক অংশগ্রহণ। আমরা আগামী মেলাগুলো তাদের হাতেই সমর্পণ করতে চাই। আগামী বছর একইস্থানে মে মাসের ২৩ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে আন্তর্জাতিক এই বাংলা বইমেলার ৩৪ তম আসর।’
মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এর প্রচার সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন জানান, বইমেলায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরিফিন সিদ্দিক, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সদস্য সচিব অভিনেত্রী সারা জাকের এবং অভিনেতা ও চিত্রশিল্পী আফজাল হোসেন, একুশে পদক প্রাপ্ত ছড়াকার লুৎফুর রহমান রিটনসহ শতাধিক গুণীজন। একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ভারতের পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, লিলি ইসলাম এবং নিরুপমা রহমান।