স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারের প্রবণতা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এতেই চিন্তায় পড়ে গেছে শিক্ষাবিদরা। এর সমাধানে চেষ্টা চলছে নানারকম। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বড় ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নিউইয়র্ক শহরের স্কুলে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহার সীমিত করার পরিকল্পনা করছে শহরটির বেশকিছু স্কুল। সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, স্কুলগুলোতে ধাপে ধাপে ফোন ব্যবহারে বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা হবে। তবে এর জন্য সময়ের প্রয়োজন। কিছু কিছু স্কুল ইতোমধ্যেই মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
জানানো হয়, শহরের অন্তত ৪০০ পাবলিক স্কুল তাদের প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোন ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও এই কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
বলা হচ্ছে, প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষাক্রম চালাতে হচ্ছে। এ জন্য স্মার্ট বোর্ড, কম্পিউটার, অত্যাধুনিক ল্যাব প্রয়োজন হচ্ছে। তবে আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রমরে সাথে মোবাইল ফোনের কোন সম্পর্ক নেই বলেও জানানো হয়।
বাচ্চারা এখন স্কুলে স্বাধীনতা মানে মোবাইল ফোন ব্যবহারকে মনে করে। পড়ালেখার ক্ষেত্রে মোবাইলের ব্যবহারকে সো-কলড প্রযুক্তি হলেও অভিহিত করা হয়।
এর আগে মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, মোবাইল ফোন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথেও আলোচনা করা হবে। গত মে মাসে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিউইয়র্কের স্কুলগুলোতে স্মার্টফোন নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে তা নানা প্রতিবন্ধকতায় বাস্তবায়ন করা যায়নি। কিন্তু এবার খুব শীঘ্রই এই সংক্রান্ত বিধিনিষেধ জারি করার কথাও জানায় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গত বছর ফ্লোরিডায় পাবলিক বিদ্যালয়গুলোতে স্মার্টফোন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এসব বিষয় নিয়ে নিউইয়র্কের গভর্নর তখন জানিয়েছিলেন, স্কুলে শিক্ষার্থীরা অত্যাধিক মাত্রায় স্মার্টফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে আছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা গেমস নিয়ে সার্বক্ষণিক পড়ে থাকে। এমনটা হলে তাদের পক্ষে মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা সম্ভব নয়। এসব দিক ভেবেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুলে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না।
এভাবে স্মার্টফোন আসক্তি যেমন শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় নষ্ট করছে তেমনি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাই তারা পরিকল্পনা করেছেন রাজ্যের স্কুলগুলোতে স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করার।
নিউইয়র্ক স্কুলের ভাইস চ্যান্সেলর ডেভিড ব্যাঙ্কস জানান, তিনি এবং মেয়র এরিক অ্যাডামস মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করা ছাড়াও আরও বেশ কিছু নীতি আরোপের উপর কাজ করছেন। তবে তারা আগে অন্যান্য স্কুলের নেয়া সিদ্ধান্তগুলো খতিয়ে দেখবেন। ডেভিড আরও বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোর শিক্ষকদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাসহ আরও কিছু সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া কঠিন হতে পারে। তবে তারা সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।