Connect with us

নিউইয়র্ক

বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন চায় আমেরিকা

Published

on

newyork-somoy

দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে আমেরিকা। অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখা এবং বাংলাদেশে দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে উগ্রবাদের উত্থান হচ্ছে কিনা, এ বিষয়েও উদ্বেগ রয়েছে ওয়াশিংটনের। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন সম্পর্ক বিষয়ে ঢাকার মূল্যায়ন কী, সেটাও জানতে চেয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের বিভিন্ন সূত্র। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন মনে করে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হলে সেটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ভালো হবে।
মার্কিন প্রশাসন মনে করে, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দেশ ও বিদেশে সমর্থন রয়েছে। কিন্তু যত বেশি দেরি হবে, এই সমর্থন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। ফলে দ্রুত সংস্কার নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা প্রকাশ করা এবং নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিভিন্ন খাতে সংস্কার নিয়ে কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তাদের রিপোর্ট দেবে। ওই রিপোর্টগুলোর আলোকে সরকারের পরিকল্পনা সবাইকে জানানোর বিষয়ে জোর দিয়েছে তারা।’
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক; পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইউএসটিআরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অন্তত পাঁচটি বৈঠকসহ অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে।
বিশেষ একটি পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিতে হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। দেশে ও বিদেশে এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে বিভিন্ন পক্ষ বা বিদেশি সরকার। এই গ্রহণযোগ্যতা যেন অব্যাহত থাকে সেটির বিষয়ে জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘এই সরকারের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। ওয়াশিংটন মনে করে, এটি অব্যাহত রাখতে হবে।’
যে কারণে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে সেটি যথোপযুক্ত ছিল– এটি সরকারকে প্রমাণ করতে হবে বলে তিনি জানান।
২০০১ সালে নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার পরে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনে সব দেশ একমত হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশেরও সাফল্য রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে উগ্রবাদের উত্থান হবে কিনা সেটি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্কের বিষয়টি নজর এড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্রের। ওয়াশিংটন মনে করে এটি একটি নতুন বাংলাদেশ এবং এর সম্ভাবনা অনেক বেশি। একই সঙ্গে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের বিষয়টিও জোর দেয় তারা।
এ বিষয়ে এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি কোনও গোপন বিষয় নয় যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এখন খুব বেশি সুসম্পর্ক নেই। তবে আমরা ভারতের সঙ্গে আরও বেশি যোগাযোগ রক্ষা করবো।’
তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে অনেক বেশি আলোচনা হচ্ছে, যা অস্বস্তিকর। এটি কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ আন্তরিক।’
রাজনৈতিক সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচারের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্নজন জড়িত রয়েছে। পাচারকৃত সম্পদ উদ্ধারে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কার কার্যক্রম করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সংস্কারের প্রকৃতি কী রকমের– সে বিষয়ে জানতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের সংস্কারের জন্য যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে জানিয়েছি। আগামী ডিসেম্বরে সংস্কার কমিশনগুলো তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। এরপর সরকার সবার সঙ্গে আলোচনা করে তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করবে।’

 

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending