নিউইয়র্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে ৫ নভেম্বরের দিকে
Published
4 weeks agoon
বহুল প্রতীক্ষার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়। কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, সেটি নির্ধারিত হবে আগামী ৫ নভেম্বর। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী চার বছরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণী নির্বাচন। এ নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জীবনের জন্য পরবর্তী চার বছরের বিষয় হলেও, প্রায় সমগ্র বিশ্বের হাজারো বিষয় নির্ভর করছে এর ফলাফলের ওপর।
প্রাথমিকভাবে এই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিলো।
কিন্তু গত জুলাইয়ে মি. বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে সমর্থন দেন।
মূলত এরপর থেকেই ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলকান, উভয় শিবিরেই নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে বেশ জোর প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার মিজ হ্যারিস ও মি. ট্রাম্পের সরাসরি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। বিতর্ক সামনে রেখে দুই প্রার্থীই ইতোমধ্যে নিজেদের প্রস্তুতি শেষ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আসলে কী হবে? মার্কিন নাগরিকরা কি প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রেসিডেন্ট বেছে নিবেন, নাকি ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবেন?
জরিপে কার অবস্থান কী?
নির্বাচন যতিই ঘনিয়ে আসছে, জরিপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস নিয়ে হোয়াইট হাউজের দৌড়ের শেষ দিনগুলোতে পদার্পণ করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
চলতি বছরের শুরুর দিকেও নির্বাচনি দৌড়ে বেশ পিছিয়ে ছিলেন রিপাবলকান প্রার্থী মি. ট্রাম্প। কিন্তু গত জুনে টেলিভিশন বিতর্কে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের খেই হারানোর ঘটনায় বেশ সুবিধা পান মি. ট্রাম্প। পরে মি. বাইডেনকে সরিয়ে ডেমোক্র্যাটরা মিজ হ্যারিসকে প্রার্থী করলেও দৃশ্যপটে খুব একটা পরিবর্তন আসবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা।
কিন্তু নতুন একটি নির্বাচনি জরিপের ফলাফল ভিন্ন কথা বলছে। মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজের ওই জরিপে দেখা যাচ্ছে, মি. ট্রাম্পের চেয়ে জনসমর্থনে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন মিজ হ্যারিস।
সম্প্রতি শিকাগোতে নিজ দলের সম্মেলনের পরে প্রায় ৪৭ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। গত ২২শে অগাস্টের ওই সম্মেলনে মার্কিন নাগরিকদের জন্য “নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার” প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মিজ হ্যারিস।
অন্যদিকে, মি. ট্রাম্পের পক্ষে জনসমর্থন রয়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। গত ২৩শে অগাস্ট আরেক রিপাবলকান প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দেওয়ার পরও জনসমর্থনে খুব একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
অন্যদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজ যৌথভাবে আরেকটি জরিপ চালিয়েছে, যার ফলাফল গত রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, জনসমর্থনের দিকে বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী মি. ট্রাম্প।
জরিপে তিনি ৪৮ পয়েন্ট পেয়েছেন। অন্যদিকে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিজ হ্যারিস এক পয়েন্ট কম পেয়ে সামান্য পিছিয়ে রয়েছেন।
অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সী এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী।
আবার সিবিএস ও ইউগভের একটি জরিপের ফলাফলে মি. ট্রাম্প ও মিজ হ্যারিসের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও নতুন এসব জরিপের ফলাফলে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
কারণ এখানে ভোটারদের কাছে প্রার্থী হিসেবে কে কতটা জনপ্রিয়, সেটিই উঠে এসেছে।
তাছাড়া ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকে, সেখানে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া অনেক সময় কাজে নাও আসতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্য রয়েছে যেখানে অধিকাংশ সময়ে একই দল জয়লাভ করে থাকে, তবে এমন অনেক অঙ্গরাজ্যও রয়েছে, যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে দুই প্রার্থীর যে কেউ বিজয়ী হতে পারে। মূলত ওইসব রাজ্যের ফলাফলই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দিয়ে থাকে।
জরিপের ফলাফল বলছে, উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার মতো অঙ্গরাজ্যগুলোতে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সী মিজ হ্যারিস।
আর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে নেভাদা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং অ্যারিজোনায়। এসব অঙ্গরাজ্যে দুইপ্রার্থীর জনসমর্থন প্রায় সমানে সমান বলে জানা যাচ্ছে।
দুই প্রার্থীর সমাপনী বক্তব্য
নির্বাচনের আগে দেওয়া সমাপনী বক্তব্যে কী বললেন হ্যারিস ও ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিকে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমালা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভোটারদের উদ্দেশ্যে তাদের সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেছেন। কমালা হ্যারিস তার বক্তব্য এমন স্থানে দিয়েছেন, যেখানে প্রায় চার বছর আগে ক্যাপিটল দাঙ্গা’র ঠিক আগে আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও বক্তব্য রেখেছিলেন।
কমালা হ্যারিস ভোটারদেরকে নির্বাচনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেন, এই নির্বাচন “সম্ভবত আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট” এবং এটির মানে “স্বাধীনতা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য থেকে একটিকে বেছে নেওয়া”। এর দ্বারা মার্কিন ভোটাররা “সবচেয়ে অসাধারণ কাহিনীর পরবর্তী অধ্যায়টি লিখতে পারেন”।
তিনি বলেন যে “প্রায় চার বছর আগে এই স্থানে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাঁড়িয়েছিলেন এবং জনগণের ইচ্ছেকে দমন করার জন্য সশস্ত্র জনতাকে পাঠিয়েছিলেন।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও মূল্যস্ফীতি এখন বড় একটি সমস্যা। এ বিষয়ক তার বক্তব্য হল, “এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো খরচ কমানো, যা মহামারীর আগেও বাড়ছিল এবং এখনও অনেক বেশি।”
জীবনের ব্যয় সংকট নিয়ে তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারি।”
তিনি তার এই সমাপনী বক্তব্য গর্ভপাতের অধিকার রক্ষারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “মানুষ তাদের নিজের শরীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মৌলিক স্বাধীনতা রাখে।”
এর আগে বক্তব্যের শুরুতেই কমালা হ্যারিস বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প “আমেরিকার নারীদের গর্ভধারণ করতে বাধ্য করবেন…আপনারা প্রজেক্ট ২০২৫ গুগল করুন।”
যদিও মি. ট্রাম্প এই ধরনের কিছু করার পরিকল্পনা করছেন, সেরকম কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।
অপর দিকে ওয়াশিংটনে সমাপনী বক্তব্য দেওয়ার সময় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেনসিলভেনিয়ার অ্যালেন্টাউনে একটি প্রচারণা সমাবেশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, যেটির ফলাফল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ট্রাম্প তার ভাষণ শুরু করেন একটি সহজ প্রশ্ন দিয়ে। ভোটারদেরকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “চার বছর আগের তুলনায় আপনি কি এখন ভালো অবস্থায় আছেন?”
এরপর একে একে তিনি তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিগুলো পুনরাবৃত্তি করেন। সেগুলোর মাঝে রয়েছে– মূল্যস্ফীতি কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের “অনুপ্রবেশ বন্ধ করা”।
তিনিও কমালা হ্যারিসের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “কমালা আমাদের লজ্জিত করেছে। তার মাঝে নেতৃত্বের যোগ্যতা নেই।” ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান এবং কোনও প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেন যে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচনে “কারচুপি” করবে, ইতোমধ্যে তেমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বিশ্ববাস্তবতায় এই নির্বাচন
পৃথিবীর কোথায় সম্পর্কিত নয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? গাজায় দিনের পর দিন বোমা বর্ষণ থেকে শুরু করে অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের সরকার পতনের আন্দোলন—এমন বহু আন্তর্জাতিক ঘটনাবলির সাথে জড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের বিবিধ বিষয়। আন্তর্জাতিক সেই প্রত্যেকটি বিষয়ের সাথে তাই জড়িয়ে যাচ্ছে মার্কিন এই নির্বাচন। এমন বহু ঘটনার মধ্যে সমসাময়িক বিশ্বে বিশেষভাবে গুরৃত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হলো ইউক্রেন যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের ভাগ্যের সাথেও নানাভাবেই যেন জড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচন। এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা, এমন প্রমাণই দেয় ইতিহাস। এই নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হন আর তার কী প্রভাব ইউক্রেইন যুদ্ধ এবং মহাদেশের নিরাপত্তায় পড়ে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউরোপ। উদ্বিগ্ন সারাবিশ্বও। তাই সবাই যেন তাকিয়ে আছে ৫ নভেম্বরের দিকে।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্ডার স্টাব রয়টার্সকে বলেন, আমরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছি। কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই নির্বাচনের একটা প্রভাব আছে।ইউক্রেইন এবং ইউরোপের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ এলে, অনেক ইউরোপীয় কর্মকর্তাই বলেন যে, তারা রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আবার ক্ষমতায় আসা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
কারণ, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির আমলে ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্ক টালমাটাল ছিল। তিনি পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেইনের লড়াই নিয়েও তার দৃষ্টিভঙ্গি দোদুল্যমান ছিল।
ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেইন যুদ্ধের কোনওরকম অবসান, যাকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জয় হিসাবেই দেখেন.. সেই যুদ্ধের অবসানে তিনি নেটো দেশগুলোকে আক্রমণ করতে উৎসাহী হয়ে উঠতে পারেন।
সাম্প্রতিক সময়ে এই দশক শেষেই রাশিয়া এমন কিছু করে বসার অবস্থায় চলে যেতে পারে বলে এ মাসে সতর্ক করেছেন জার্মানির এক গোয়েন্দা প্রধান। যদিও পুতিন বরাবরই নেটো দেশগুলোতে হামলা চালানোর কোনওরকম অভিপ্রায় থাকার কথা অস্বীকার করে আসছেন।
রয়টার্স ইউক্রেইন পরিস্থিতির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে ২০ জনেরও বেশি ঊর্ধ্বতন ইউরোপীয় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন মিত্রর সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেছেন।
তাদের সবারই মন্তব্যে মুল যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হচ্ছে: অনিশ্চয়তা, বিশেষ করে যার সম্পর্কে আগে থেকে কিছু আঁচ করা যায় না সেরকম কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে থাকলে এই অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়, যেমনটি ছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে (২০১৭-২০২১)।
গত মাসে ট্রাম্প ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেই যুদ্ধ শুরুর জন্য দায়ী করেছেন। যদিও ইউক্রেইনে যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে।ট্রাম্প বলেছেন, আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জিতলে একদিনেই তিনি ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। সেটি এমনকি তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেও হতে পারে। তবে তিনি কীভাবে সেটি করবেন তা বলেননি। আবার ইউক্রেইনকে সাহায্য করতে চান না এমন কথাও ট্রাম্প বলেননি।
অন্যদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস নির্বাচনে জয়ী হলে ইউক্রেইনকে সমর্থন দেওয়ার নীতি অব্যাহত রাখবেন, আবার উত্তেজনা বৃদ্ধিও এড়িয়ে চলবেন বলে মনে করা হচ্ছে।রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তীব্র সমালোচক কমলা হ্যারিস। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে জিতলে যুদ্ধে ইউক্রেইনের হাতই শক্তিশালী রাখা এবং ন্যায়সঙ্গত শান্তি অর্জন নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ করবেন। যদিও তিনি ইউক্রেইন নিয়ে বিস্তারিত কোনও পরিকল্পনা এখনও করেননি।
ইউক্রেইন ও মিত্রদের জন্য কঠিন সময়
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন উক্রেইন ও এর ইউরোপীয় সমর্থকরা একটি কঠিন সময় পার করছে।
মস্কোর সেনাবাহিনী পূর্ব ইউক্রেইনে লড়াইয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ইউক্রেইনের জ্বালানি অবকাঠামো তুমুল রুশ হামলায় তছনছ হওয়ার পর সামনে আসছে শীতের এক কঠিন সময়।
ইউরোপের দেশগুলোতেও অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক সমস্যার পাশাপাশি মহাদেশজুড়ে সরকারি আর্থিক খাতের অবস্থা টনটান। রাশিয়া-বান্ধব জনবাদী রাজনৈতিক দলগুলো সম্প্রতি কয়েকমাসে অস্ট্রিয়া, পূর্ব জার্মানি এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভাল ফল করেছে।
নেটো জোটের একটি দেশের এক কূটনীতিক বলেছেন, “যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে ততই ইউক্রেইনকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। কারণ, অনেকেই তখন বলতে থাকবে আমরা কেন এ যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছি? এ যুদ্ধ এক বিশাল পেষণযন্ত্র।”
সেরকম ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে হঠাৎ নীতির যে কোনও পরিবর্তন ঘটে গেলে প্রধান যে পদক্ষেপটি ইউক্রেইনের জন্য সহায়ক হতে পারে বলে ইউরোপ আশা করছে তা হল: রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের মুনাফা কাজে লাগানো।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার জব্দ করা আর্থিক সম্পদ থেকে যে আয় হচ্ছে তা থেকে ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে গত জুনেই সম্মত হয়েছিল শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭।
ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য জি-৭ এই অর্থ দিতে রাজি হয়। গত সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বোঝাপড়া হয়েছে। এই চুক্তির ফলে ভবিষ্যতে ইউক্রেইনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমলেও ইউক্রেইন এই অর্থ দিয়ে অস্ত্র কিনতে পারবে।
জনসম্মুখে বক্তব্যে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ট্রাম্প ও তার সমর্থকদেরকে একথাই বোঝানোর চেষ্টা নিয়েছেন যে, ইউক্রেইনের যুদ্ধে পুতিন জয় পেলে তা যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল প্রতিপন্ন করবে এবং আমেরিকার শক্তিমত্তাকে চ্যালেঞ্জ করতে উৎসাহী হয়ে উঠবে রাশিয়া এবং চীন।
ওদিকে, নেটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে এ মাসে ট্রাম্পের অনুকূলে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে, “ট্রাম্প মনে করেন যুদ্ধটা কেবল ইউক্রেইনের বিষয় নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও সুরক্ষারও বিষয়।”
ট্রাম্প এবং হ্যারিস দুইজনই সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে দেখা করেছিলেন।
জেলেনস্কি প্রকাশ্যে এই দুই প্রার্থীর কারও অনুকূলেই কথা বলেননি। তবে বৈঠকের পর তিনি বলেছিলেন, “আমেরিকার সরাসরি ইউক্রেইন নিয়ে একটি বোঝাপড়া আছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। আর যুদ্ধ অবশ্যই সুষ্ঠুভাবে বন্ধ হতে হবে, যাতে কোনও আগ্রাসী শক্তি কখনও এমন করতে না পারে, যা আজ রাশিয়া করছে।”
ওদিকে, ইউরোপীয় সব দেশের নেতাই যে ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বিগ্ন তা নয়। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবার্ন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মিত্র। ট্রাম্পের মতো তিনিও ইউক্রেইনকে সামরিক সহায়তা করার বিরোধী। ট্রাম্প যে তার মতো একই মত পোষণ করেন সে বিষয়টিও স্পষ্ট করে বলেছেন ওরবার্ন।
আবার এর বিপরীতে কিছু ইউক্রেইনীয় ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর কর্মকর্তাদের ধারণা, ট্রাম্পের প্রস্তাব করা কোনও চুক্তি রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করলে বা ফিরিয়ে দিলে তিনি বাইডেনের নির্ধারিত সীমাও ছাড়িয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ট্রাম্প ইউক্রেইনকে আরও দূর-পাল্লার অস্ত্র দিতে পারেন এবং রাশিয়ার ভূখন্ডের অনেক ভেতরে হামলা চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিতে পারেন।
খলিল বিরিয়ানী ফ্রাঞ্চাইজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু
১২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ, ৬০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বর্ণাঢ্য আয়োজন: বাংলাদেশ সোসাইটির নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের লালগালিচা সংবর্ধনা
তৃতীয় বার্ষিক বিজনেস এক্সপো-২০২৪: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নতুন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা উন্মোচনে সাফল্যের সাক্ষী
নিউইয়র্ক সিটির ভাড়াটিয়াদের ব্রোকার ফি বন্ধের বিল পাস
গানবাংলার তাপসের যত কেলেঙ্কারি
নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি
বাংলাদেশে হাসিনার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের স্থান নেই: ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে ৫ নভেম্বরের দিকে
বিজয়ী ‘সেলিম-আলী’ প্যানেলের প্রার্থীদের সার্টিফিকেট বিতরণ
Trending
-
বাংলাদেশ1 day ago
বাংলাদেশে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র, পেছনে কলকাঠি নাড়ছে আওয়ামী লীগ!
-
নিউইয়র্ক1 day ago
ট্রাম্পের ঘোষণায় আতঙ্কিত না হয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নিন: অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী
-
বাংলাদেশ1 day ago
দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন
-
নিউইয়র্ক1 day ago
১২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ, ৬০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির