নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বর্ডার যার টম হোম্যান সতর্ক করে বলেছেন, ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ’ প্রোগ্রাম বন্ধ করবে তার প্রশাসন। এমন সব ঘোষণায় আতঙ্কিত হয়ে ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তে বাড়ছে অভিবাসীদের ঢল। চাপ সামাল দিতে সতর্ক অবস্থায় আছে সীমান্তে থাকা কর্মকর্তারাও।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের আর মাত্র কিছু দিন বাকি। ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগ মুহূর্তে মেক্সিকো লাগোয়া দক্ষিণ সীমান্তে বাড়ছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল। তবে এখনো এই সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তে যে কোন সময় বাড়তে পারে মেক্সিকান কার্টেলদের দৌরাত্ম্য।
দক্ষিণ সীমান্তের আশেপাশে ইতোমধ্যে অভিবাসীদের বেশ কিছু দলকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে। মেক্সিকোর টাপাচুলা শহর থেকে সংখ্যায় কয়েক হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী বের হলেও ঈগল পাসে আসতে আসতে ১০০ থেকে ২০০ জনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়ছে।
গত ৪ বছরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় প্রায় ৮ মিলিয়ন অভিবাসন প্রত্যাশী সীমান্তে এসেছে। যাদের বেশীরভাগকে ‘নোটিশ টু এপিয়ার’ নামের একটি কোর্টে আসার তারিখ দেয়া হয়। এই তারিখ অনুযায়ী অভিবাসীদের কোর্টে হাজির হতে সাধারণত ২ থেকে ৬ বছর সময় লাগতে পারে। এসময় তারা ‘অ্যামেরিকান ড্রিম’ বাস্তবায়নে অ্যামেরিকায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা শুরু করে।
তবে এধরণের স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়ে, নিজ দেশে নিরাপদে থাকতে অভিবাসীদের সতর্ক করেছেন বর্ডার যার টম হোম্যান।
হোম্যান বলেন, ‘‘তাদের কথা শুনতে ও বুঝতে হবে। আমেরিকা্য় পাচার হয়ে আসতে নিজের কাছে যা আছে সব বিক্রি করে কার্টেলদের হাতে তুলে দিবেন না। কারণ এখানে আপনারা থাকতে পারবেন না। আমরা ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ’ পোগ্রাম বন্ধ করে দিচ্ছি। কারো সারা জীবনের সঞ্চয় কার্টেলদের হাতে তুলে দিচ্ছে এটি দেখতে আমার কষ্ট হবে। তারা এই অর্থের অপব্যবহার করবে, আপনাদের বর্ডারে আনলেও অ্যামেরিকায় প্রবেশ করাতে পারবে না। আপনারা নিজেদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে অবস্থান করুন। অবৈধভাবে বর্ডার পার হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই দেশে প্রবেশ করতে গিয়ে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী মারা যায়।
এছাড়া ফেন্টানলের কারণে রেকর্ড সংখ্যক আমেরিকান মারা যায়। বর্তমান প্রশাসনের সীমান্ত খুলে রাখার নীতি আমেরিকান ও অভিবাসী উভয়কেই হত্যা করছে। তাই বাসায় থাকুন।’’
হোম্যানের এমন কড়া বার্তায় কর্ণপাত করছেন না অভিবাসীরা। বিপরীতে নিজেরা আলাদা আলাদা দলে বিভক্ত হয়ে সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে অভিবাসীদের ক্রমাগত চাপে বিপাকে পড়েছে আবাসন খাত। হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভলপমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় এক বছরে গৃহহীন বেড়েছে রেকর্ড ১৮ শতাংশ। যা সংখায় ৭৭০ হাজার ছাড়িয়েছে।
সম্প্রতি বাইডেন প্রশাসনের আমলে অভিবাসীদের ঢলের প্রভাবে গৃহহীনদের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই শীতের মধ্যেই রাস্তাঘাটে, হোটেলের সামনে তাঁবুতে মানবেতর জীবনযাপন করছে গৃহহীনরা।
শিকাগো, নিউ ইয়র্ক এবং ডেনভার শহরের কর্মকর্তারা এখন ফেডারেল সরকারকে অভিবাসীদের ওয়ার্ক ভিসা দেয়ার অনুরোধ করছে। এতে শহরগুলোর সম্পদের ওপর অভিবাসীদের নির্ভর করতে হবে না বলে ধারণা তাদের।