Connect with us

নিউইয়র্ক

‘ডিপ স্টেট’ ভেঙে দিতে যে পরিকল্পনায় ট্রাম্প!

Published

on

newyork-somoy

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর দেশটির ফেডারেল সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদারের পরিকল্পনা করছেন। ট্রাম্প ও তাঁর মিত্রদের দাবি করা ‘ডিপ স্টেট’ ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মার্কিন প্রশাসনে ক্ষমতা হস্তান্তরে কাজ করা দুটি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স বলছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই একটি নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। যার মাধ্যমে ফেডারেল সরকারের প্রায় ৫০ হাজার স্থায়ী কর্মীর চাকরির সুরক্ষা বাতিল করার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এসব পদে স্থায়ী কর্মীদের বদলে নিজের পছন্দের ও অনুগতদের নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন যত দ্রুত সম্ভব ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন বিভাগে হাজারো রাজনৈতিক নিয়োগ সম্পন্ন করার পরিকল্পনাও করছে বলে দাবি করছে ওই সূত্রগুলো। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য, সরকারে অনুগত লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা। এটি সাম্প্রতিক অন্য কোনো প্রেসিডেন্টের আমলের তুলনায় বেশি।
ট্রাম্পের দল এরই মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ তিন শীর্ষ কূটনীতিকের পদত্যাগ চেয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মী ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম তদারকি করতেন তাঁরা। ট্রাম্পের মিত্ররা মনে করেন, আমলাদের কারণে তাঁর প্রথম মেয়াদে বিচার বিভাগ ও শিক্ষা বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
ব্যক্তিগত ঘোষণা ও বিভিন্ন সাক্ষাৎকার পর্যালোচনা করে রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রায় এক ডজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিকে ফেডারেল কর্মীদের পরিবর্তন আনার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অথবা এই পরিকল্পনার প্রতি জোরালো সমর্থন জানানো হয়েছে।
২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ শেষের আগে একটি নির্বাহী আদেশ জারির কাজ চলছিল, যেটি ‘শিডিউল এফ’ নামে পরিচিতি পেয়েছিল। রাসেল ভট এর পরিকল্পনায় ছিলেন। ‘শিডিউল এফ’ বাস্তবায়িত হলে স্থায়ী ফেডারেল কর্মীদের চাকরি থেকে সরানো এবং সেসব পদে রাজনৈতিক নিয়োগের অনুমোদন কার্যকর হতো। ট্রাম্পের আগের প্রশাসনের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের পরিচালক রাসেল ভট ‘শিডিউল এফ’ নিয়ে ফের কাজ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন প্রশাসনে হোয়াইট হাউসের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে মনোনীত সার্জিও গোর ও প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী হিসেবে মনোনীত জেমস শার্ক, রাসেল ভটের সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন। প্রথম মেয়াদে ফেডারেল কর্মীরা ট্রাম্পের নীতিগুলো বাধাগ্রস্ত করেছিলেন বলে ২০২১ সালে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন শার্ক।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের ‘ডিপ স্টেট’ ভাঙার দায়িত্বে যাদের রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মনোনীত পাম বন্ডি, এফবিআইয়ের পরিচালক মনোনীত কাশ প্যাটেল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনোনীত মার্কো রুবিও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, শিক্ষামন্ত্রী মনোনীত লিন্ডা ম্যাকমাহন এবং ইলন মাস্ক ও বিবেক রামাস্বামী। ট্রাম্পের প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানোর কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেবেন তাঁরা।
ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম এ বিষয়ক নির্ধারিত সময়সূচি নিয়ে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল নীতিনির্ধারণী পদ্ধতি অনুযায়ী, এই পরিবর্তন আনতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।
এদিকে ফেডারেল কর্মচারীদের ইউনিয়ন বলছে, ‘ডিপ স্টেট’ বলতে কিছু নেই। ট্রাম্প এবং তাঁর মিত্ররা এটিকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে ব্যবহার করে নির্বাহী ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছেন।
আইনজীবী ও ফেডারেল কর্মী ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ জেমস আইজেনম্যান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ট্রাম্প ভুলভাবে ভাবছেন যে, অধিকাংশ সরকারি কর্মচারীর একটি আদর্শগত এজেন্ডা রয়েছে এবং বর্তমান আইনের আওতায় কম যোগ্য কিংবা অসহযোগী কর্মীদের বরখাস্ত করা যেতে পারে।’
‘শিডিউল এফ’ বিষয়ে আইজেনম্যান আরও বলেন, ‘এটি ভয় ও চুপ থাকার সংস্কৃতি তৈরি করবে। চাকরি হারানোর আশঙ্কায় নিজের মতামত প্রকাশ করতে বা সহায়ক কোনো পরামর্শ দিতে ভয় পাবে কর্মীরা। এটি কর্মীদের কাজের দক্ষতায় প্রভাব ফেলতে পারে।’
ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফেডারেল ওয়ার্কার্সের নির্বাহী পরিচালক স্টিভ লেনকার্ট এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নতুন এই শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য হলো ফেডারেল সরকারের ভেতরে “গোপন পুলিশ” গঠন করা।’
ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মনোনীত ব্যক্তিরা কী ভূমিকা পালন করবেন কিংবা ‘গোপন পুলিশ’ গঠনের অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ট্রানজিশন টিমের মুখপাত্র হিউজেস।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending