Connect with us

নিউইয়র্ক

অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের রেজিস্ট্রেশন করতে আদালতের নির্দেশ

Published

on

newyork-somoy

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ফেডারেল সরকারের কাছে নিবন্ধন করতে হবে — এমন একটি সিদ্ধান্ত কার্যকর করার অনুমতি দিয়েছেন একজন ফেডারেল বিচারক। এই পদক্ষেপ অভিবাসীদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দেওয়া এক রায়ে, বিচারক ট্রেভর নিল ম্যাকফ্যাডেন ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায় দেন। প্রশাসনের দাবি ছিল, তারা কেবল ইতিমধ্যেই থাকা একটি আইনি বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়ন করছে, যার আওতায় যেকোনো আমেরিকান নাগরিক নন — তাদের সরকারে নিবন্ধিত হতে হয়। এই নতুন নিয়ম আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হচ্ছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ

ঘোষণা দেয় যে, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সকল ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলকভাবে ফেডারেল সরকারের সঙ্গে নিবন্ধন করতে হবে। যারা স্বেচ্ছায় নিবন্ধন করবে না, তাদের অর্থদণ্ড বা আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হতে পারে। নিবন্ধন না করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং নিবন্ধন সনদ বহন না করলেও কারাদণ্ড বা জরিমানার শাস্তি হতে পারে।
১৪ বছর বা তার বেশি বয়সী যেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাস করছেন, তাদের জন্য নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হবে। নিবন্ধনের সময় তাদের আঙ্গুলের ছাপ ও বাসার ঠিকানা দিতে হবে। ১৪ বছরের নিচে কারও ক্ষেত্রে অভিভাবকদের দায়িত্ব হবে তাদের নিবন্ধন করানো।
এই প্রক্রিয়াটি কানাডিয়ানদের জন্যও প্রযোজ্য যারা যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি অবস্থান করছেন — যেমন “স্নোবার্ডস” নামে পরিচিত অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যারা শীতকালে ফ্লোরিডার মতো জায়গায় এসে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিক নন এমন ব্যক্তিদের নিবন্ধনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রেখেছে, এমনকি যারা অবৈধভাবে অবস্থান করছেন তাদেরও। এই আইনটির উৎস ১৯৪০ সালের Alien Registration Act, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনালগ্নে অভিবাসী ও তথাকথিত রাজনৈতিক ‘সাবভারসিভ’দের নিয়ে উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত হয়। বর্তমান নিয়মগুলো ১৯৫২ সালের Immigration and Nationality Act থেকে এসেছে।
তবে অবৈধভাবে বসবাসরত ব্যক্তিদের নিবন্ধন করানোর নিয়ম খুব কম ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয়েছে। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বার ১১-এর পরে একটি সীমিত সময়ের জন্য এই নিয়ম প্রয়োগ হয়েছিল, যখন National Security Entry-Exit Registration System (NSEERS) চালু করা হয়েছিল। সে সময় ২৫টি দেশের ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষ নাগরিকদের নিবন্ধনের জন্য বলা হয়েছিল — যাদের প্রায় সবাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিক ছিল। যদিও এই প্রক্রিয়ায় কোনও সন্ত্রাসবাদ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়নি কেউ, কিন্তু ১৩,০০০’র বেশি মানুষকে deportation বা নির্বাসনের মুখে পড়তে হয়। এটি ২০১১ সালে স্থগিত করা হয় এবং ২০১৬ সালে বাতিল করা হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই নিবন্ধনের নিয়ম সবসময়ই ছিল, তারা শুধু সবার জন্য তা কার্যকর করছে।
তবে যারা এই নিয়মের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাদের মতে এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গণহারে নির্বাসনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একটি কৌশল।
তারা আরও বলছেন, সরকারের উচিত ছিল এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে যথাযথ পাবলিক নোটিফিকেশন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা।
এই রেজিস্ট্রি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত, কাজ করা, কর প্রদান করা এবং পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ অভিবাসীদের একটি কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে — তারা কি নিবন্ধন করে নিজেদের অবস্থান সরকারকে জানিয়ে দেন (এবং নির্বাসনের ঝুঁকি নেন), নাকি ছায়ার আড়ালে থেকেই নিবন্ধন না করার অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার ঝুঁকি নেন?
সরকার ইতোমধ্যেই নিবন্ধনের আওতাভুক্ত ব্যক্তিদের U.S. Citizenship and Immigration Services (USCIS) ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে বলেছে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending