যুক্তরাষ্ট্রের বড় শহরগুলোর মধ্যে নিউ ইয়র্ক সিটিতে জনসংখ্যার অনুপাতে পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা সবচেয়ে কম। শহরের বিভিন্ন দপ্তর মিলে বর্তমানে মাত্র ১ হাজার ৬৬টি পাবলিক টয়লেট পরিচালনা করে । এর মানেই হলো প্রতি ৭ হাজার ৮০০ বাসিন্দার জন্য মাত্র একটি টয়লেট রয়েছে।
তবে এখন বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। সিটি কাউন্সিল সদস্য স্যান্ডি নার্স চান এই অনুপাত কমিয়ে ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতি ৩ হাজার ৬০০ জনের জন্য একটি টয়লেট নিশ্চিত করতে।
নার্স বলেন, অবাক লাগে, শহরের কোনো টয়লেট মাস্টার প্ল্যান নেই। অথচ রাস্তা, পার্ক, স্কুল সব কিছুরই মাস্টার প্ল্যান আছে। কিন্তু আমরা পরিকল্পনা করিনি এই বিষয়টি নিয়ে যে ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষ এই শহরে বাস করে, আর প্রতিদিন সবারই তো প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটাতে হয়।
এই কারণেই তার প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী, শহরকে প্রতি চার বছর অন্তর একটি প্রতিবেদন দিতে হবে। কীভাবে আরও পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে, তার খরচ কত হবে, এবং কীভাবে এগুলো পরিষ্কার ও নিরাপদ রাখা হবে। যাতে ১০ বছরের মধ্যে টয়লেটের সংখ্যা ২ হাজার ১২০-তে পৌঁছায়।
এই পদক্ষেপটি এমন সময় নেওয়া হচ্ছে যখন ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসাগুলো যেমন অনেক প্রতিষ্ঠান শুধু পণ্য কিনলে টয়লেট ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে, এবং মহামারির পর আবারও শহরে পর্যটকের আনাগোনা বাড়ছে। আরও পাবলিক টয়লেট তৈরি হলে গিগ-ওয়ার্কার বা গৃহহীনদের জন্যও এটি স্বস্তির হবে, কারণ তারা নিয়মিত টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ পান না।
এদিকে, গত সামারে, মেয়র এরিক অ্যাডামস আগামী পাঁচ বছরে ৮২টি টয়লেট নির্মাণ বা সংস্কারের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন এবং একটি ডিজিটাল মানচিত্র প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে খোলা টয়লেটগুলোর অবস্থান দেওয়া ছিল। নার্সের এই বিল সেই উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করবে এবং নিশ্চিত করবে যে শহর একটি মোবাইল-বান্ধব মানচিত্র রাখবে, যেখানে প্রতিটি টয়লেট কখন খোলা, প্রতিবন্ধী-বান্ধব কি না, এবং বেবি চেঞ্জিং স্টেশন আছে কি না – এসব তথ্য থাকবে (বর্তমানে বেশিরভাগ টয়লেটেই বেবি স্টেশন নেই)।
এদিকে, সিটি কাউন্সিলের একটি জরিপে দেখা গেছে, শহরের পার্কগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ পাবলিক টয়লেট হয় বন্ধ ছিল, না হয় সোপ বা টয়লেট পেপারের মতো মৌলিক জিনিসপত্রের অভাব ছিল।
নার্স বলেন, টয়লেটগুলো পরিষ্কার ও নিরাপদ রাখার দায়িত্ব শহরেরই। তিনি বলেন, আরও টয়লেট তৈরি করা মানে মানুষের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা।
উপাত্ত অনুযায়ী, গত বছর এনওয়াইপিডি পাবলিক ইউরিনেশনের জন্য ১ হাজার ৪০০-র বেশি ক্রিমিনাল সমন ইস্যু করেছে।
মেয়রের মুখপাত্র লিজ গার্সিয়া বলেন, আমরা বুঝি, প্রতিটি এলাকায় চাহিদা এক নয়। যদি এই বিল আইন হয়ে যায়, তাহলে আমাদের সেসব এলাকাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।