বিশেষ আয়োজন
নিউ ইয়র্ক বাংলা বই মেলার একাল সেকাল
Published
4 months agoon
পৃথিবীর প্রথম বইমেলা কোথায় বসেছিল খুঁজতে গেলে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের নাম আসে। দ্বাদশ শতকের কোন এক সময় হাতে লেখা বইয়ের পসরা বসেছিল ওই শহরের বাণিজ্য মেলায়। ১৪৪০ শতাব্দীতে ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরবর্তী মাইনৎস শহরে ইউহানেস গুটেনবার্গ ছাপাখানা স্থাপন করেন। ছাপানো বই নিয়ে প্রথম বইমেলা বসে ফ্রাঙ্কফুর্টে ১৪৬২ সালে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের উৎসব হিসাবে পালিত বইমেলার গোড়াপত্তন ফ্রাঙ্কফুর্টের ওই বইমেলা থেকেই। তবে বাংলাদেশের বইমেলা অন্যান্য সব দেশের বইমেলা থেকে এক অন্যরকম বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর। বাংলাদেশের বইমেলা বায়ান্নের মহান ভাষা আন্দোলনের স্মারক। আর মাতৃভাষার জন্য আত্মাহুতিই এই ভাষাভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র গঠনের প্রধান উৎস। সাম্প্রদায়িক পরিচয়কে জাতীয় পরিচয় বলে নির্ণয় করার মত ঐতিহাসিক ভুলের মাশুল দিয়ে বাংলাদেশের বাঙালি নিজ ঘরে ফিরে আসেন। আর একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জন করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। হাজার বছরের বাঙালীর সবচেয়ে বড় বিজয় সূচিত হলো।
বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একষট্টির রবীন্দ্র জন্ম শতবার্ষিকী পালন, ছিষট্টির বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ছয় দফা দাবির আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ—এইসব রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ঘটনা প্রবাহলব্ধ আত্মপ্রত্যয় চেতনে অবচেতনে বুকে ধারণ করে স্বাধীন দেশের স্বাধীন বাঙালি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, আবাসন গড়েছে। প্রায় প্রতিটি অভিবাসী সম্প্রদায়ের একটি বৈশিষ্ট্য হল অতীতবিধুরতা। তারই প্রভাবে সেই সম্প্রদায় যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, ফেলে আসা স্বদেশের ঐতিহ্যবাহী বা ঐতিহাসিক ঘটনাকে সোৎসাহে উদযাপন করতে নেমে যান। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ তো আছেই। এই সমস্ত উদযাপনের মাঝে বইমেলার মত বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা সম্বলিত উৎসবও বাঙালী অভিবাসী জীবনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। ঢাকা কোলকাতার পরে এই মেলা বহির্বিশ্বে সর্ববৃহৎ বাংলা বইমেলা হয়ে উঠেছে। ১৯৯২ থেকে নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা অব্যাহতভাবে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে।
এবারের বইমেলা, ৩৩তম বইমেলার স্মরণিকা সম্পাদক কর্তৃক আমার জন্য প্রস্তাবিত শিরোনাম ‘নিউ ইয়র্ক বাংলা বই মেলার একাল সেকাল’। একজন ব্যক্তির জীবনে ৩২ বছর বেশ লম্বা সময় কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের বেলায় তেমনটা নয়। তাকে আবার ‘একাল’ ‘সেকাল’ এই দুই ভাগে ভাগ করার প্রয়োজনটা আপাত দৃষ্টিতে নেই। কিন্তু নিউ ইয়র্ক বইমেলার বিগত ৩২ বছরের ঘটনাবহুলতা, এর ব্যাপ্তি এবং এই অঞ্চলে বাংলা ভাষাভাষী সমাজ বিনির্মাণে এর ঐতিহাসিক অবদানের একটু সন্ধানি পর্যালোচনা করলে একটা প্রারম্ভিক সময় বা ‘সেকাল’ প্রচ্ছন্নভাবে হলেও বেরিয়ে আসবে। তখন তুলনা প্রতিতুলনার মাধ্যমে অগ্রগতিটা আরো স্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হতে পারে। আর তাই ‘একাল’ থেকে, অর্থাৎ এই ৩৩ বছরে পদার্পণ থেকে আলোচনাটিকে উল্টোদিকে টেনে নিয়ে ‘সেকালে’র স্মৃতিক্ষেত্রে প্রবেশ করব।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সমসাময়িক ইতিহাসের সাথে একুশের বইমেলার যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, এই আলোচনার ভূমিকায় সংক্ষেপে তুলে ধরেছি, তারই প্রভাবিত বাস্তবতায় সচেতন জনগণ বইমেলাকে আপন করে নিয়েছেন। এই আত্মীকরণ আমাদের নিউ ইয়র্ক বইমেলার ব্যাপারেও ঘটেছে অত্যন্ত সাবলীলভাবে। একক উদ্যোগে সূচিত একটি সার্বজনীন কার্যক্রমের সাথে নিজেদের জড়িয়ে নেয়ার তাড়না শিল্প-সাহিত্য অনুরাগী সাংগঠনিকদের নিউ ইয়র্ক বইমেলার কাছে টেনে নিয়ে এসেছে। উদ্যোক্তা বিশ্বজিত সাহার বিনয়ী আন্তরিক আমন্ত্রণ তো ছিলই এবংএখনো আছে। এই দুইয়ের মিলনে ‘মুক্তধারা’ পুস্তক বিপণন সংস্থা ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’-এ রূপান্তরিত হয় ২০০৬ সালে। এই রূপান্তর নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার ‘একাল’ হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। এখানে উল্লেখ্য, এই বিশেষ সাংগঠনিক পদক্ষেপে ‘মুক্তধারার’ একনিষ্ঠ সাথি ছিল ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ নামে আরেকটি সংগঠন। এ বছর মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের একটি গঠনতন্ত্র কার্যনির্বাহী পরিষদে গৃহীত হয়েছে। এছাড়াও নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার ‘একালে’র আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন নিম্নোক্ত একাধিক পুরস্কার ঘোষণা ও প্রদান— ১. মুক্তধারা জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার (যা ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া মুক্তধারা-চ্যানেল আই সাহিত্য পুরস্কারের স্থলাভিষিক্ত হয় ২০১৮ সাল থেকে); ২. শহীদ কাদরী শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পুরস্কার (বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে রচিত গ্রন্থ); ৩.চিত্তরঞ্জন সাহা শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা সংস্থা পুরস্কার (নিউ ইয়র্ক বইমেলায় অংশগ্রহণকারী); ৪. মুক্তধারা আজীবন সম্মাননা পুরস্কার; ৫. শিশু-কিশোর মেলার হিরো অ্যাওয়ার্ড।
নিউ ইয়র্ক বাংলা বই মেলার ‘একাল’ এত ঘটনাবহুল যে সবকিছুর বিশদ বর্ণনা এই লেখায় সম্ভব হয়ে উঠছে না। বাছাই করে দু’একটি বড় কর্মসূচী তুলে ধরে ‘সেকালে’র স্মৃতি তর্পণ দিয়ে শেষ করতে হচ্ছে। নিকট অতীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় এবং গণজীবনে অতি কাঙ্খিত দুটো মহাসমারোহ উদযাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়। একটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী এবং অপরটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর। নিউ ইয়র্ক বইমেলা এর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বড় করে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটে। তাই বলে নিউ ইয়র্ক বইমেলার কর্মযজ্ঞ থেমে থাকেনি। সিদ্ধান্ত হল আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে আন্তর্জাল কর্মসূচি পালন করা হবে, হলোও তাই।
সেপ্টেম্বর ১৮ থেকে ২৭, ২০২০ এই ১০ দিন ব্যাপী ২৯তম বইমেলায় উত্তর আমেরিকা ছাড়াও বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাঙালী শিল্পী, সাহিত্যিক, প্রকাশক, বুদ্ধিজীবী ভার্চুয়্যালি অংশ নেন। এতে তৃতীয় বাংলার সর্ববৃহৎ বইমেলার ব্যাপ্তি বেড়ে আন্তর্জাতিক রূপ নেয় এবং প্রচারটাও দূরদূরান্তে পৌঁছে যায়। বলা যায় অতিমারী করোনা এক্ষেত্রে ছদ্মবেশে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল। মুক্তধারার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বই বিকিকিনিও করা হয়। বইমেলার অঙ্গসংগঠন শিশু-কিশোর মেলাও বঙ্গবন্ধুর প্রতি নতুন প্রজন্মের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী স্থগিত থাকলেও, বিদেশ বিভুই থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় নিউ ইয়র্ক বইমেলা তা পালন করে। পরের বছর ২০২১ সালে অক্টোবরের ২৮ থেকে ৩১ এবং ১লা নভেম্বর এই পাঁচ দিনব্যাপী স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করে নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু দর্শক শ্রোতার উপস্থিতিতে আর কিছু ভার্চুয়্যালি উৎসব উদযাপিত হয়।
করোনাসৃষ্ট ভয়াবহ প্রতিকূলতা ঠেলে নিউ ইয়র্ক বইমেলার দৃঢ়চেতা কর্মীদের উপরোক্ত দুটি বড় জাতীয় উৎসব পালনের উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে যে জিনিসটা প্রতিভাত হয়েছে তা হলো তাদের চিন্তা চেতনার সংহতি। কর্মীবাহিনীর সদস্যদের বয়স, বুদ্ধিবৃত্তিক বা পেশাগত অসমতা তাদের আদর্শিক সংহতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। অগ্রজদের এই অনুকরণীয় প্রত্যয়ী পদক্ষেপ শিশু-কিশোরদের পথটাও সুগম করে দেয়। আসলে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা এ দুটি ব্যাপারে শর্তহীন জাতীয় ঐক্যের কামনা করা বেশি বড় চাওয়া ছিল না। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী অমানিশা অনেক মলিনতার অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। লম্বা সময় ধরে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, দোদুল্যমান করে রেখেছে প্রজন্মকে। এইসব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও তথাকথিত নিরপেক্ষতার ভান ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে একটি নিরেট সত্যাশ্রয়ী কর্মীবাহিনী গড়ে তোলা নিউ ইয়র্ক বাংলা বই মেলার একটি বলিষ্ঠ অবদান।
‘একালে’র সঞ্চয়ের আরো অনেক ভাল ভাল মানসম্মত কর্মসূচী বইমেলার রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ২০১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির শতবর্ষ উদযাপন। প্রতিটি বই মেলায় পঞ্চগীতি কবির গানের পরিবেশনা প্রায় নিয়মিত থাকে, যা বাংলা গানের উৎকর্ষিত পরিবেশনা হিসাবে সংগীত রসিকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়ে আসছে। ২০০৬ থেকে ২০২৪ এই আঠার বছর ধরে নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার প্রভূত অগ্রগতি সবিস্তারে তুলে ধরার সুযোগ এখানে নেই। লেখার কলেবরটি সীমিত রাখতে অপরিহার্য কিছু তথ্য আলোচিত হলো।
যে সাংগঠনিক কাঠামোর ওপর এই কার্যক্রম চলছে তার মূল ভিৎ রচিত হয়েছে তার থেকে ১৪ বছর আগে। দেশের একুশের বইমেলার মতোই নিউ ইয়র্ক বইমেলার যাত্রা শুরু জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে একটি ছোট্ট অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করে একুশ পালনের মধ্য দিয়ে ১৯৯২ সালে। তখনো ‘মুক্তধারার’ সাথে একমাত্র সহযোগী সংগঠন ছিল ‘বাঙালীর চেতনা মঞ্চ’। জাতিসংঘের সামনের স্থানটি বেছে নেওয়াটাও তাৎপর্যপূর্ণ। তদানীন্তন বাংলা সংবাদ মাধ্যম এবং সমালোচকদের একটি অভিযোগ আমাদের প্রায়ই শুনতে হতো। তা হলো বাংলাদেশের বাঙালীরা আমেরিকার মূল স্রোতের কাছাকাছি আমাদের শিল্প সংস্কৃতিকে নিয়ে যেতে পারেননি। এদিক দিয়ে মুক্তধারার বইমেলা অগ্রগণ্য। নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার ‘সেকাল’টার শুরু সেই ক্ষণ থেকেই। কেমন ছিল সেই সময়টা। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে নিউ ইয়র্কের একাধিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত থাকার আলোকে কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরলে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নগরী নিউ ইয়র্কে বাংলা বইমেলার আয়োজনটা কত কঠিন ছিল তা অনুধাবন করা যাবে।
নিউ ইয়র্কে তখন একাধিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন কাজ করছে। এর মধ্যে নিউ ইয়র্ক বাংলাদেশ সোসাইটি খুবই তৎপর ছিল। ১৯৯২ তে ষষ্ঠ বাংলাদেশ সম্মেলন হয়ে গেল শিকাগোতে। ১৯৮৯ থেকে বাংলাদেশ থিয়েটার অব অ্যামেরিকা নিউ ইয়র্ক ছাড়াও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে অনেকগুলি নাটক মঞ্চস্থ করেছে। একটি নাট্য সম্মেলনরও আয়োজন করেছে। লীগ অব আমেরিকার কর্মকাণ্ড মৃয়মান হলেও মাঝে মাঝে জাতীয় দিবস পালন, খোলা মাঠে বৈশাখী মেলার আয়োজন ইত্যাদি করেছে। নতুন অভিবাসী সমাজে যেটা স্বাভাবিক তা হল উদ্যোগীদের একাধিক টুপি পড়ে কাজে নামতে হয়, ইচ্ছায় অনিচ্ছায়। জনবল, অর্থবল, আনুষাঙ্গিক সাজ সরঞ্জাম অনেক সময় একই ব্যক্তিকে যোগাড় করে নিতে হয়। মুক্তধারার স্বত্বাধিকারীকে তাই করতে হয়েছে। অনেক বছর ধরে আমরা তা তাকে করতে দেখেছি। ভালো কাজে বাধা থাকতে পারে। সংগঠনের বেলায় অনেক প্রতিকূলতা থাকে। সময় সময় মুক্তধারাকে নিয়েও অনেক তীর্যক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে, বেশির ভাগই পরশ্রীকাতরদের কাছ থেকে। এর কারণ অন্যান্য সংগঠন অলাভজনক সংস্থা আর মুক্তধারা মূলত ব্যক্তিগত ব্যবসা, লাভজনক সংস্থা। কিন্তু বইমেলার ব্যাপারে মুক্তধারার স্বত্বাধিকারী সাফল্যকে সবসময় সবার সাথে ভাগ করে নিতে চেয়েছেন, কারণ বইমেলার প্রকৃতি তো সার্বজনীন। অনেক অনুরোধ উপরোধের পরে আগ্রহী সংগঠক শিল্পী সাহিত্যিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। তাদেরও কথা সইতে হয়েছে। ‘ওটাতো অমুকের ব্যবসা, আপনারা ওখানে কেন’, এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এর উত্তরে বারবার আমাদের পুনরাবৃত্তি করতে হয়েছে, ‘এটা যে বইমেলা’। সেকালটা বইমেলার কেটেছে দোদুল্যমন্যতা কাটিয়ে প্রবাসের কবি সাহিত্যিকদের এক পা দু পা করে এগিয়ে আসার মধ্য দিয়ে। কিছুটা অব্যবস্থাপনার মধ্যেও শেষব্দি নির্বস্তুক প্রাপ্তি ঘটেছে অনেক।