Connect with us

বিশেষ আয়োজন

বইমেলা

আটলান্টিকের এপারে নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার উৎসবে অভিবাসীরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য, ঢাকায় অমর একুশের বইমেলাকে সামনে রেখে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব বাঙালিরা যেমন মুখিয়ে থাকেন, ঠিক তেমনি নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এখানে যাঁরা দেশের বাইরে থাকেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই বই প্রকাশ করে থাকেন এবং নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলার গুরুত্বটাই ঠিক এখানে। বইয়ের মান নিয়ে এখানে কোন কথা উঠছে না, প্রশ্ন উঠছে বরং এই অভিবাসী লেখকদের হাত দিয়ে যে বইগুলো প্রকাশিত হচ্ছে সেসব গ্রন্থ অভিবাসী বাংলা সাহিত্য চর্চায় কতটুক অবদান রাখতে পারছে সেই নিয়ে। আমি কাউকে ছোট না করেই বলি সত্যিকার অর্থে বই লিখে ও প্রকাশ করে নিজেরা যেমন আত্মতৃপ্তি পান, ঠিক সেরকমই নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার উদ্দ্যেশও সফল হয়। কারণ দুটো বিষয়ই খুব সূক্ষ্মভাবে একই সুতায় গাঁথা।
এখানে বইমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাক-ঢোলের আওয়াজের তালে তালে যেনো মেলা প্রাঙ্গনে স্ফূর্তির বন্যা বয়ে যায়। তারপর তো আছে আরো অনেক আয়োজন। ওদিকে স্টেজে চলে নানান ধরনের আলোচনা; বলাবাহুল্য মেলায় আসা আমন্ত্রিত অতিথিদের কথা শোনা ও বোঝার আনন্দ থেকে সাধারনতঃ কেউ বঞ্চিত হতে চান না। আর একটা কথা না বললেই নয়, এই বই মেলায় পৃথিবীর সর্বস্থান থেকে উৎসাহী বাঙালিরা জড়ো হতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। অর্থাৎ তারাও এই

বইমেলায় অংশ নেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন। লেখক, প্রকাশক, অভিবাসী সম্প্রদায় সবাই অপেক্ষায় থাকেন এ বছরে বইমেলায় কোন কোন অতিথি আসবেন সেটা জানার জন্য।
সব থেকে বড় কথা—এখানে যারা অংশ গ্রহন করেন তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে খ্যাতিমান, তাই সেই সব শিল্পী সাহিত্যিক গায়ক-গায়িকাদের সাথে দেখা এবং সুযোগ পেলে আলাপচারিতা করা এবং ছবি তোলা, এটাও হয়ে ওঠে বইমেলার উৎসবের অন্যতম এক আনন্দ! আবার অনেককেই লেখক প্রকাশকদের সঙ্গে আড্ডায় গা ভাসিয়ে দিতে নানা রকম কার্যক্রম প্রকাশ করতে দেখা যায়। যাহোক এটা তো মানতেই হবে বইমেলাকে কেন্দ্র করে সাহিত্য চর্চা হচ্ছে ও হবে। কিন্তু কীভাবে হবে এটাই হচ্ছে প্রশ্ন। এ কথা তো মানতেই হবে এখানে যে ব্যাক্তিত্বরা পুরস্কার পেয়েছেন তারা যদিও অনেক আগে থেকেই সাহিত্য চর্চা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন, নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলায় উনাদের উপস্হিতি সবসময় বইমেলার আয়োজনকে রাঙিয়ে দিয়েছে।
আগেই বলা হয়েছে, কলকাতা ও বাংলাদেশের বাইরে বইকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বের মধ্যে সর্ববৃহৎ এই নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা—অতএব এই মেলাতে অনেক লেখক-লেখিকাদের লেখা ম্যাগাজিন বা পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে থাকে, আর বলা বাহুল্য এই লেখকদের অনেকের লেখাই বই আকারেও প্রকাশিত হয়েছে আর সেই বই প্রকাশ করার জন্য সব থেকে বড় উৎস হচ্ছে আমাদের এই বইমেলা।
শেষ কথা হলো, এই বইমেলা থেকে অনেকে উৎসাহী হয়ে গবেষণা করার অভিপ্রায় ব্যাক্ত করতেই পারেন এবং অনেকে করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু সেই বইগুলি হাতে গোনা এবং কতটুকু মানসম্মত সেটা দিকটিও অবশ্যই মাথায় রাখা প্রয়োজন। তারপরও বলতেই হবে এই নিউ ইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা জোগায়। এবং এটাও বলা যায় এই বইমেলা গোটা বিশ্বের বাঙালিদের, বিশেষ করে বাঙালি অভিবাসীদের মেলা। ৩৩ বছর ধরে সবার মন জয় করে এগিয়ে চলেছে এই মেলাটি। আরও বহুদূর হেটে বেড়াক এই প্রার্থনা।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending