সারা বিশ্ব
অভিবাসীদের জন্য সাময়িক সীমান্ত বন্ধের নির্দেশ বাইডেনের
Published
3 months agoon
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার অ্যামেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা অভিবাসীদের আশ্রয় চাওয়ার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করার জন্য নির্বাহী পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সম্প্রতি এক ফোনালাপে সাংবাদিকদের বলেছেন, কংগ্রেস যে বাস্তব অভিবাসন সংস্কারের ব্যবস্থা করতে পারেনি নির্বাহী পদক্ষেপটি তা করবে।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসীদের প্রবেশ স্থগিত করে অবৈধ অভিবাসন কমাতে প্রশাসন চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সীমান্তে অবৈধ প্রবেশের এক সপ্তাহের গড় দৈনিক আড়াই হাজারে পৌঁছানোর পর এই বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। দৈনিক মোট অবৈধ প্রবেশের সংখ্যা ইতোমধ্যে এই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্থ বাইডেনের নির্বাহী আদেশটি এখনই কার্যকর হতে পারে।
নির্বাহী আদেশে সীমান্ত কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে অভিবাসীদের মেক্সিকো বা তাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেবে।
সাধারণত যেসব অভিবাসী অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে এবং আশ্রয় দাবি করে তাদের আদালতে হাজিরার জন্য অপেক্ষা করার জন্য অ্যামেরিকায় ছেড়ে দেয়া হয়। অ্যামেরিকায় তারা তাদের মামলা লড়তে পারে। তবে বিপুল পরিমাণ মামলা থাকায় এই মামলাগুলোর তারিখ আসতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়।
নতুন ব্যবস্থাটি সেই অবৈধ ক্রসিংগুলো আটকানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা দৈনিক গড় দেড় হাজারের নিচে থাকলে দুই সপ্তাহ পর সীমান্ত আবারও আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হবে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে টানা সাত দিন আড়াই হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী মোকাবিলা করায় পোর্টগুলোতে আশ্রয় দাবি করা অভিবাসীদের ফিরিয়ে দেয়ার এই নির্বাহী পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের পর থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
হোয়াইট হাউযের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মধ্যরাত থেকে পোর্টগুলো থেকে আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের ফিরিয়ে দেয়া শুরু হবে।
তবে অভিবাসীরা এখনও সীমান্তে সাক্ষাৎ করতে সিবিপি (কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন) ওয়ান অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। যার অর্থ তারা এখনও আশ্রয় দাবি করতে সক্ষম হবেন।
এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সিবিপি ওয়ান মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে সুশৃঙ্খলভাবে অ্যামেরিকা প্রবেশের প্রক্রিয়া যারা ব্যবহার করবেন তাদের ক্ষেত্রে প্রবেশ স্থগিত বা সীমাবদ্ধতার নিয়মটি প্রযোজ্য হবে না।’
সিবিপি সীমান্ত পারাপারের রিয়েল-টাইম তথ্য সরবরাহ করে না। তবে শুধু রোববারই দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে ৩ হাজার ৬০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তে আশ্রয় সীমিত করার বিধান চালু করা হলে দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধভাবে আসা যে কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই নিয়মটি প্রযোজ্য হয়ে যাবে এবং ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ তাকে বের করে দেয়া হবে।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, অভিবাসীদের মূল দেশ কোন ব্যাপার নয় এবং নতুন নির্বাহী নিয়মের অধীনে ব্যক্তিদের ‘কয়েক ঘন্টায় না হলেও’ কয়েক দিনের মধ্যে তাদের মূল দেশে সরিয়ে নেয়া হবে।
রিপাবলিকান ও ট্রাম্প প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি চ্যাড উলফ বলেছেন, তার দৃষ্টিকোণ থেকে সীমান্তে ‘আশ্রয়ের অপব্যবহার’ আটকাতে কোন প্রভাব ফেলবে না নির্বাহী পদক্ষেপটি।
মঙ্গলবার সকালে ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’কে উলফ বলেন, ‘এই পরিকল্পনায় ফাঁকফোকর রয়েছে। এই পরিকল্পনাটি আশ্রয়ের অপব্যবহার বন্ধ করতে কিছুই করবে না, এই পরিকল্পনা প্রশাসন যে প্যারোলের অপব্যবহার করেছে তা বন্ধ করতে কিছুই করবে না, ধরার পর ছেড়ে দেয়া বন্ধ করার জন্য কিছুই করবে না। আমি এখানে বিভিন্ন গর্ত দেখতে পাচ্ছি। আমার মনে হয় না এটা কাজ করবে। আমার মনে হয় খুব দেরি হয়ে গেছে।’