Connect with us

সারা বিশ্ব

করাচিতে তীব্র তাপদাহে ছয় দিনে ৫৬৮ মৃত্যু

Published

on

করাচিতে তীব্র তাপদাহে ছয় দিনে ৫৬৮ মৃত্যু

পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিসহ দক্ষিণঞ্চলজুড়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে গত ছয় দিনে অন্তত ৫৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির ইধি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জানিয়েছে, তারা দৈনিক ৩০ থেকে ৪০টি মৃতদেহ করাচি শহরের মর্গে নিয়ে যায়, কিন্তু গত ছয়দিন ৫৬৮টি মৃতদেহ নিয়ে গেছে আর শুধু মঙ্গলবারেই নিয়েছে ১৪১টি।
বিবিসি জানিয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ ঠিক কী ছিল তা পরিষ্কার না হলেও করাচির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার পর উচ্চ আদ্র্রতার মধ্যে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো গরম অনুভূত হচ্ছে আর এ সময়ই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া লোকজন সাহায্যের জন্য হাসপাতালে ছুটছে।
করাচির সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান ড. ইমরান সারওয়ার শেখ জানান, রোববার থেকে বুধবারের মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ২৬৭ জনকে এখানে ভর্তি করা হয় আর তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
“আমরা যাদের হাসপাতালে আসতে দেখেছি তাদের বেশিরভাগের বয়স ৬০ বা ৭০ এর কোঠায়, তবে ৪৫ বছরের আশপাশের কিছু আছেন আর বিশোর্ধ্ব এক দম্পতিও ছিলেন,” বলেছেন তিনি।
তাদের সবার মধ্যেই বমি, ডায়রিয়া এবং প্রবল জ্বরসহ হিটস্ট্রোকের লক্ষণগুলি ছিল বলে জানিয়েছে তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা যাদের দেখেছি তাদের অনেকেই বাইরে কাজ করছিলেন। এই গরমের মধ্যে তাদের অবশ্যই প্রচুর পানি পান করতে ও পাতলা কাপড় পরতে বলেছি আমরা।”
রোববার থেকে শুরু হওয়া উচ্চ তাপমাত্রাকে দেশটির একজন আবহাওয়াবিদ ‘মাঝারি তাপপ্রবাহ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ডন সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, জরুরি বিভাগের কর্মীরা করাচির বিভিন্ন রাস্তা থেকে প্রায় ৩০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ জানান, এদের অনেকেই সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত, তবে তাদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না।
শুধু করাচিই তীব্র তাপদাহের কবলে পড়েছে এমন নয়, পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে অনেক অংশেই এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত মাসে সিন্ধু প্রদেশে তাপমাত্রা বেড়ে ৫২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছিল। এতে সিন্ধু প্রদেশের আগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড প্রায় ভেঙে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল।
সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী করাচির বাসিন্দা মোহম্মদ জেশানের কাছে সমস্যাটা পরিষ্কার।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। সারা বিশ্বেই এমনটি ঘটছে। ইউরোপেও ঘটছে। প্রচণ্ড দাবদাহের সম্মুখীন হলেও তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।
“কিন্তু দুঃখজনকভাবে পাকিস্তানী সরকার এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।”
বিশেষজ্ঞরাও একমত যে মানুষের সৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ধরণের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলি আরও তীব্র হয়ে উঠছে। করাচীতে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending