Connect with us

সারা বিশ্ব

রাফাহতে ইযরায়েলি হামলায় অ্যামেরিকায় তৈরি অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে

Published

on

রাফাহ শহরে একটি শরণার্থী শিবিরের তাঁবুতে ইযরায়েলি হামলায় অ্যামেরিকায় তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সিএনএন।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সিএনএনের নিজস্ব ক্যামেরা ফুটেজের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বেশ কিছু ভিডিও বিশ্লেষণ করে এবং বিস্ফোরক অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে সিএনএন বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

মাটিতে অবস্থিত ক্যামেরার ফুটেজগুলোতে দেখা গেছে, ‘কুয়েত পিচ ক্যাম্প-ওয়ান’ নামে পরিচিত গাজার অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য রাফাহ শিবিরের বেশ কিছু তাঁবুতে আগুনে জ্বলছে, যেখানে অনেক পুরুষ, নারী ও শিশু রাতের হামলা থেকে নিজেদের সরাতে চেষ্টা করছেন।

শিশুসহ পোড়া মরদেহগুলোকে উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তুলতেও দেখা গেছে ফুটেজে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ইযরায়েলি হামলার ভিডিওগুলোতেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।

উভয় ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার পর রাফাহ শিবিরে অ্যামেরিকায় তৈরি ‘জিবিইউ-থার্টি নাইন’ নামের ছোট ব্যাসের বোমার (এসডিবি) অবশিষ্টাংশ দৃশ্যমান ছিল।

চারজন বিস্ফোরক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ভিডিও ফুটেজগুলো পর্যালোচনা করেছেন।

বিস্ফোরক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ও সাবেক ব্রিটিশ আর্টিলারি অফিসার ক্রিস কোব স্মিথ সিএনএনকে বলেন, ‘বোয়িং কোম্পানি নির্মিত জিবিইউ-থার্টি নাইন একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র। এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোকে আক্রমণ করার জন্য নকশা করা হয়েছে এবং এর ফলে কম ক্ষতি হয়।’

কোব স্মিথ আরও বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যেকোন অস্ত্র এমনকি এই আকারের ছোট বোমার ব্যবহার সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ।’

অ্যামেরিকান সেনাবাহিনীর সিনিয়র এক্সপ্লোসিভ অর্ডন্যান্স ডিসপোজাল টিমের সদস্য ট্রেভর বলও বোমার খণ্ডটিকে জিবিইউ-থার্টি নাইন বলে শনাক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বোমা বিস্ফোরণের পর অবশিষ্টাংশ দেখে আমি টেল অ্যাকচুয়েশন বিভাগের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে জানলাম যে এটি এসডিবি/জিবিইউ-থার্টি নাইনের ভ্যারিয়েন্টগুলোর একটি।’

রাফাহতে হামলা করা বোমার খণ্ডাংশের সিরিয়াল নম্বরগুলো ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত জিবিইউ-থার্টি নাইন যন্ত্রাংশের প্রস্তুতকারকের সঙ্গে মিলেছে। ফলে বোমাগুলোর অ্যামেরিকায় তৈরি করা হয়েছে এর সপক্ষে আরও শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আরও দুই বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র ক্রাইসিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট রিসার্চার রিচার্ড ওয়্যার এবং সাবেক ব্রিটিশ আর্টিলারি অফিসার ও টার্গেটিং বিশেষজ্ঞ ক্রিস লিঙ্কন-জোনস বোমার খণ্ডটিকে অ্যামেরিকায় তৈরি জিবিইউ-থার্টি নাইনের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

মঙ্গলবার হামলার বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ইযরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ‘হামাসের সিনিয়র কমান্ডারদের লক্ষ্য করে ১৭ কিলো বিস্ফোরক সমন্বিত ছোট ওয়ারহেডসহ দুটি যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এই বোমাগুলো আমাদের জেট বিমান ব্যবহার করতে পারে এমন ক্ষুদ্রতম আগ্নেয়াস্ত্র।’

ঐতিহ্যগতভাবে জিবিইউ-থার্টি নাইন ওয়ারহেডের ১৭ কিলো ওজনের একটি বিস্ফোরক পে-লোড রয়েছে।

হাগারির বিবৃতি সিএনএনের বোমার শনাক্তকরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ে রাফাহ হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিনা সিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি জানি না ওই বিমান হামলায় কোন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সে বিষয়ে কথা বলার জন্য আমাকে আপনাদের ইযরায়েলিদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, অ্যামেরিকা দীর্ঘদিন ধরে ইযরায়েলের অস্ত্রের বৃহত্তম সরবরাহকারী এবং গাজা আক্রমণে বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও সে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending