ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ৬৩ বছর বয়সী রাইসি ছাড়াও দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ কয়েকজন সফরসঙ্গী।
রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইমাম খামেনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও কট্টরপন্থী নীতির জন্য পরিচিত ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তৎকালীন ইরান সরকার হাজারো রাজনৈতিক বন্দির মৃত্যুদণ্ড দেয়। সে সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন রাইসি। পরে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হন।
তার শাসনকালে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকে অস্ত্র বানানোর পর্যায়ের কাছাকাছি নিয়ে যায় ইরান। এছাড়া ইসরায়েলের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ফলে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে তার মৃত্যুর ঘটনা অনেক জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও সংঘাতের মধ্যে রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ হিসেবে বৃষ্টি, কুয়াশাসহ খারাপ আবহাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তবে এর পেছনে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে রাইসির এমন মৃত্যুর ঘটনায় ভেতরের শত্রু বা ইসরায়েল যুক্ত কিনা সে প্রশ্ন উঠছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে বৈরি সম্পর্কের কারণে কারো কারো ধারণা এ দুর্ঘটনার পেছনে তেল আবিবের হাত থাকতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণাটি উড়িয়ে দিয়েছেন। এর কারণ একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে হত্যা করা মানে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া। তাছাড়া ইসরায়েল উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তির চেয়ে সামরিক বা পারমাণবিক অবস্থান বা ব্যক্তিকে লক্ষ্যবস্তু করার কৌশল নেয়।
এদিকে রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘এর সঙ্গে ইসরায়েল জড়িত নয়।’
যদিও দামেস্কে ইরানের একজন জেনারেলকে ইসরায়েলের হত্যা এবং পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে রাইসির মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলের হাত থাকার ধারণা জোরদার হয়েছে।
আবার ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানি স্বার্থের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালানোর সঙ্গে জড়িত হিসেবে বিবেচিত হলেও সংস্থাটি কখনো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানায়নি।