Connect with us

সারা বিশ্ব

গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা নেই: বাইডেন

Published

on

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যোদ্ধাদেরকে স্যালুট দেয়ার মাধ্যমে ডি-ডে স্মরণে বক্তৃতা দেয়া শুরু করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় তিনি বলেছেন, ডি-ডে এর এই বছরের উদযাপনটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জীবিত থাকা যোদ্ধাদেরকে নিয়ে শেষ ডি-ডে এর উদযাপন হতে পারে।
বক্তৃতায় বাইডেন বলেন, ‘আমরা সেই সময় থেকে খুব বেশি দূরে নই যখন ডি-ডে তে লড়াই করা শেষ জীবিত ব্যক্তিটি আর আমাদের সঙ্গে থাকবেন না। তাই আমাদের এবার একটি বিশেষ বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমি চাই না যে, এখানে যা হয়েছে তার ইতিহাস পরবর্তী বছরগুলোতে হারিয়ে যাক।’

বাইডেন এই সময় আরও বলেন, ‘তাদের নয়োকচিত কাজ আমাদেরকে নিজেদের দায়িত্ব থেকে নিষ্কৃতি দেবে না। গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা নেই। প্রতিটি প্রজন্মকে অবশ্যই এটিকে রক্ষা করতে হবে এবং এর জন্য লড়াই করতে হবে।’

ডি-ডে উপলক্ষ্যে দেয়া ভাষণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া বিভিন্ন বর্ণের নারী ও পুরুষদের কথা স্মরণ করেন তিনি।

বাইডেন বলেন, ‘গ্লাইডার বা প্যারাশুটের মাধ্যমে যুদ্ধের ময়দানে নামা প্রতিটি সেনা সদস্য, হাজার হাজার যুদ্ধ জাহাজ ও ল্যান্ডিং ক্রাফট পরিচালনা করা প্রতিটি নাবিক, জার্মানি নিয়ন্ত্রিত বিমানঘাঁটি, সেতু ও রেলপথ ধ্বংস করা প্রতিটি বৈমানিক- সবাইকেই বিভিন্ন বর্ণের নারী ও পুরুষসহ সাহসী অ্যামেরিকানরা সহায়তা করেছেন।’

বক্তৃতা শুরুর সময় উপস্থিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া প্রবীণ সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বাইডেন বলেন, ‘নরম্যান্ডিতে আরও একবার আপনাদেরকে স্যালুট করার সুযোগ পাওয়াটা সর্বোচ্চ সম্মানের। আপনাদের সবাইকেই সৃষ্টিকর্তা ভালোবাসেন।’

ডি-ডে তে দেয়া বক্তৃতায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ ব্র্যান্ডিংকে বিচ্ছিন্নতাবাদ হিসেবে অভিহিত করে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করেন বাইডেন।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোকে অ্যামেরিকার একত্রিত করার অনন্য ক্ষমতা অনস্বীকার্যভাবে আমাদের শক্তির উৎস। বিচ্ছিন্নতাবাদ ৮০ বছর আগেও কোন সমস্যার সমাধান ছিল না, এখনও নয়।’

এই দিন বেশ কয়েকজন অ্যামেরিকান প্রবীণ সেনা সদস্যকে ফ্রান্সের লিজিয়ন অফ অনার সম্মানে ভূষিত করেন ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ডি-ডে এর ৮০ বছর পর এই আয়োজনে উপস্থিত প্রবীণ সেনা সদস্যদের প্রতি সম্মান জানান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।

তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সমুদ্র পথ ও আকাশ থেকে প্রায় ১৬০ হাজার মিত্র সেনা সদস্য নরম্যান্ডিতে অবতরণ করেন। স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, অনেকেই বাড়ি ফেরেননি। ভাইদের মধ্যে অল্প কয়েকজন আজ এখানে এসেছেন।’

মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও নরম্যান্ডিতে যুদ্ধ করার কারণেই এই সেনা সদস্যরা নায়কে পরিণত হয়েছেন উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘কোন ধরণের সন্দেহ ছাড়াই তারা জানত যে, লড়াই করা ও মৃত্যু স্বার্থক হওয়ার মতো অনেক কারণই আছে। যেমনটা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, অ্যামেরিকা বা বিশ্ব। তখনও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘এখানেই আমরা প্রমাণ করেছি যে, বিশ্বের যেকোন দেশের সেনাবাহিনী বা জোটের চেয়ে আমাদের গণতন্ত্রের আদর্শগুলো শক্তিশালী।’

গণতন্ত্রের প্রতি হুমকিস্বরূপ অত্যাচারী শক্তির প্রতি অস্ত্র ধারণের রূপক আহ্বান জানিয়ে বাইডেন তার বক্তৃতা শেষ করেন।

তিনি বলেন, ‘ইতিহাসই আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, স্বাধীনতা বিনামূল্যে আসে না। এর মূল্য সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে নরম্যান্ডিতে আসতে হবে। মনে রাখবেন, মাত্রাতিরিক্ত অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে তরুণেরা রক্ত দিতেও দ্বিধাবোধ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে আছি যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ডি-ডে এর সেনা সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন প্রশ্ন হলো- আমরা কি আমাদের দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করব?’

Advertisement
Comments
Advertisement

Trending