প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মেক্সিকো সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানদের ঘোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ডেমোক্র্যাটদেরও কেউ কেউ বাইডেনের সমালোচনা করেছেন।
বাইডেনের ঘোর সমালোচনা করেছেন সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, “অনেক দেরী করে সীমান্ত প্রশ্নে নেওয়া বাইডেনের এই নির্বাহী আদেশ খুবই নগন্য পদক্ষেপ।”
নির্বাচনের এই সময়ে বাইডেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চেয়েছেন বলে ট্রাম্প সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “বাইডেন সীমান্ত প্রশ্নে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। আর এখন তিনি শেষ পর্যন্ত সেখানে কিছু করার ভান করছেন।”
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে রেকর্ড পরিমান শরণার্থীর ভিড় কমাতে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপের মুখে বাইডেন মঙ্গলবার নতুন এক নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। এ আদেশের আওতায়, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়া শরণার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থণা করতে পারবেন না। তাছাড়া, অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ধরা পড়লে কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে মেক্সিকোতে ফেরত পাঠাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের আশ্রয় প্রার্থনার আবেদনও পক্রিয়াকরণ হবে না।
আদেশটি কার্যকর হয়ে যাওয়ার কথা মধ্যরাত থেকেই। আদেশ অনুযায়ী, কড়াকড়ি তখনই আরোপ করা হবে যখন মেক্সিকো সীমান্তে এক সপ্তাহে দৈনিক গড় অবৈধ অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তারের সংখ্যা ২,৫০০ ছাড়িয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তারের সংখ্যা এখন এই সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি। এপ্রিলে গড়ে দিনে গ্রেপ্তার হয়েছে ৪ হাজার ৩শ জন। আর গত সোমবারেই গ্রেপ্তার হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ জন।
এই গ্রেপ্তারের সংখ্যা তিন সপ্তাহে দিনে গড়ে ১ হাজার ৫০০’র নিচে নেমে আসলে আশ্রয়প্রার্থনার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে আদেশে।
তাছাড়া, কিছু কিছু মানুষের জন্য আদেশে ছাড়ও রাখা হয়েছে। যেমন: অভিভাবকহীন শিশু, মারাত্মক রোগগ্রস্ত কিংবা জীবনের চরম হুমকির মুখে থাকা মানুষ এবং পাচারের শিকার হওয়া মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে সোচ্চার রিপাবলিকানরা নির্বাচনের আগে সীমান্ত প্রশ্নে বাইডেনের এমন কড়া পদক্ষেপ নেওয়াকে একধরনের কৌশল বলে সমালোচনা করছেন।
কারণ, শরণার্থী ইস্যুটি ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে শীর্ষ বিষয় হয়ে ওঠায় একজন ডেমোক্র্যাট হিসাবে বাইডেন সীমান্ত নিরাপত্তার দিকটিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
ট্রাম্পের মতো একই সুরে বাইডেনের সমালোচনা করেছেন অন্যান্য রিপাবলিকানরাও। বাইডেনের সিদ্ধোন্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন কিছু কিছু ডেমোক্র্যাটও। তারা বলছেন, বাইডেন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে বাইডেন বলছেন, এবছর শুরুর দিকে দুইদল আলোচনা করে যে সীমান্ত নিরাপত্তা চুক্তি করেছিল তাতে রিপাবলিকানরাই বাধ সেধেছে।