যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে জাস্টিন ট্রুডো সরকারকে আসন্ন এই পরিস্থিতির পরিণতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছে পলিসি আউটলুক নামক কানাডার একটি সংস্থা। ৩৭ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে পলিসি আউটলুক বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যদি মতাদর্শগত পার্থক্য বাড়তে থাকে এবং গণতন্ত্র দুর্বল হয় তাহলে অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা আমেরিকাকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিমজ্জিত করার আশঙ্কা রয়েছে।’ সম্প্রতি দ্য ইকোনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পলিসি আউটলুকের এ গবেষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও যেসব পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, সেগুলোরও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- স্থানীয়ভাবে জৈবিক অস্ত্রের ব্যবহার এবং দুর্ভিক্ষ।
এ বিষয়ে মার্কিন প্রকাশনা পলিটিকো লিখেছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী (কানাডা) দেশ আমাদের বাড়িতে সহিংস ঘটনা ঘটবে বলে তারা আশঙ্কা করছে, এটা চিন্তার বিষয়!কানাডার রিপোর্ট চমকপ্রদ! এটা রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেটিক পার্টির একটি কল্পনাপ্রসূত প্রতিবেদন নয়। তবে একটি বিদেশি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সরকারের কাছ থেকে এমন খবর বের হয়েছে, যেটি মার্কিন সমাজে জাতীয় বিভাজনের পরিণতির কথা বিবেচনা করছে।’
পলিটিকো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছে, আমেরিকা ও কানাডার জনগণের জন্য এই প্রতিবেদনটি কতটা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত, প্রতিবেদনে শত শত বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বিপর্যয়মূলক ঘটনাগুলোর মতামত পরীক্ষা করছে, যা কানাডাকে প্রস্তুত করতে হতে পারে৷ তারপর সেগুলো কতটা ঘটতে পারে, কত দ্রুত ঘটবে এবং সেগুলো কতটা বিঘ্নিত হতে পারে, তার ওপর ভিত্তি করে পরিস্থিতিগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ করে গড়ে তোলে। কয়েক মাস ধরে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান এবং পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রতিষ্ঠানগুলো দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে আসছে।
প্রতিবেদনের বিভিন্ন প্রমাণ দেখাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘ঘরোয়া শীতল যুদ্ধ’ থেকে ‘ঘরোয়া উষ্ণ যুদ্ধ’ বা সামরিক সংঘাতের দিকে চলে যাচ্ছে। ‘ঘরোয়া শীতল যুদ্ধ’ কয়েক বছর আগে শুরু হয়েছিল। এমনকি সেটি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার আগেই শুরু হয়েছিল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল এবং উদারপন্থিরা রাজনৈতিক সহনশীলতাকে ত্যাগ করেছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে একে অপরকে শারীরিকভাবে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল। মূলত ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন কংগ্রেসে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনার গুজব তীব্র হয়।