বাইডেন প্রশাসনের আমলে বরাদ্দকৃত তহবিলের তীব্র বিরোধিতা করে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। মায়ামিতে এফআইআই প্রাইয়োরিটি শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘তহবিলগুলো ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার উদ্দেশ্যে বিতরণ করা হয়েছিল।’
সেখানেই সন্দেহ প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কী প্রয়োজন ছিল ভারতীয় ভোটারদের উৎসাহ দিতে ২১ মিলিয়ন ডলার খরচ করার? আমার সন্দেহ বাইডেন প্রশাসন ভারতের লোকসভা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিল। তারা হয়তো চেয়েছিল অন্য কেউ ভোটে জিতুক। এই
বিষয়টি আমরা ভারত সরকারকেও জানাবো।’
ভারত ও তার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখে ট্রাম্প বিদেশের ভোটারদের উপস্থিতির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রতি, তার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু আমাদের দেশের করদাতাদের ২১ মিলিয়ন ডলার কেন আমরা ভারতকে দেব?।’
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের নানা প্রান্তে গণতান্ত্রিক ‘নির্বাচন প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে’ ৪৮৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। তার মধ্যে ভারতের জন্য বরাদ্দ ছিল ২১ মিলিয়ন ডলার। তার মন্তব্য উল্লেখযোগ্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য বিদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবহার করা উচিত কিনা।
দ্বিতীয়বার আমেরিকার মসনদে সরকারের ‘অপব্যয়’ কমাতে ‘ডিপার্মেন্ট অব ডিপার্টমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ নামে একটি নতুন দপ্তর খুলেছেন ট্রাম্প। যার মাথায় বসিয়েছেন টেসলা কর্তা এলন মাস্ককে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেন, ভারতীয়দের নির্বাচনে উৎসাহিত করতে ২১ মিলিয়ন ডলার খরচ করত আমেরিকা। কিন্তু এবার থেকে সেই টাকা আর দেয়া হবে না। ভারতের পাশাপাশি অনুদান বন্ধ করা হবে অন্যান্য দেশেরও। এই তথ্য প্রকাশের পর ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যাল এই তহবিলকে ‘মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এর থেকে কারা উপকৃত হয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন।
তহবিলের কথা সন্দেহকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে, কারণ ভারতের ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোদির বিজেপি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছিল, যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতা কম ছিল। এক্সিট পোলগুলো দলের জন্য ব্যাপক জয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল, কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফলগুলো ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে। বিজেপির সরকার গঠনের জন্য এনডিএ মিত্রদের প্রয়োজন পড়েছিলো। ট্রাম্পের মন্তব্য মার্কিন-ভারত সম্পর্কে জটিলতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে ইতিমধ্যেই বাণিজ্য নীতি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।